ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও ১২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সোমবার (২৪ মার্চ) ভোর থেকে উপত্যাকাজুড়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় তারা প্রাণ হারান।
নিহতদের মধ্যে নারীও রয়েছেন। এদিকে ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজা উপত্যকায় মোট নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
গাজার চিকিৎসা সূত্র জানিয়েছে, সোমবার ভোর থেকে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ১২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতের এই পরিসংখ্যানে খান ইউনিসে তাঁবুতে ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় নিহত ছয়জন এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরের মাইন এলাকায় একটি বাড়িতে সৈন্যদের হামলায় নিহত চারজনও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এছাড়া মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় দুই নারীও নিহত হয়েছেন।
আল জাজিরা আরবির সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, ভোররাতে গাজার খান ইউনিসের কিজান রাশওয়ান এলাকায় বাস্তুচ্যুতদের তাঁবুতে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে কমপক্ষে ছয়জন নিহত এবং আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এদিকে ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজা উপত্যকায় মোট নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় রোববার গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ২১ জনে এবং আহতের সংখ্যা ১ লাখ ১৩ হাজার ২৭৪ জনে পৌঁছেছে।
দৈনিক হিসেবে রোববার গাজায় নিহত হয়েছেন ৪১ জন এবং আহত হয়েছেন আরও ৬১ জন। এছাড়া এদিন ধ্বংস্তূপ থেকে দু’জনের মরদেহও উদ্ধার করেছে স্থানীয় লোকজন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে প্রবেশ ও অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা ও ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এই জিম্মিদের উদ্ধারে এবং হামলার জবাব দিতে সেদিন থেকেই গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে আইডিএফ।
দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দু’মাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল; কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, মঙ্গলবার থেকে রোববার পর্যন্ত ৫ দিনে ইসরায়েলি বাহিনীর স্থল ও বিমান হামলায় গাজায় নিহত হয়েছেন ৭ শতাধিক এবং আহত হয়েছেন ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি।
আরএইচ/এসএন