যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে, কোনো দেশ ভেনেজুয়েলা থেকে তেল কিনলে তাদের ওপর ২৫% শুল্ক আরোপ করা হবে। তিনি ভেনিজুয়েলীয়দের বিরুদ্ধে নির্বাসন অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন এবং বিভিন্ন বাণিজ্যিক অংশীদারের ওপর শুল্ক আরোপ করছেন।
ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফরমে লিখেছেন, "ভেনেজুয়েলা যুক্তরাষ্ট্র ও আমাদের মুক্তির আদর্শের প্রতি শত্রুতাপূর্ণ আচরণ করছে। তাই যে কোনো দেশ যদি ভেনেজুয়েলা থেকে তেল বা গ্যাস কেনে, তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে কোনো বাণিজ্যের ওপর তাদের ২৫% শুল্ক পরিশোধ করতে হবে।"
এর আগে গত মাসে ট্রাম্প দাবি করেন, কারাকাস যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে করা একটি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে, যেখানে দ্রুত ফেরত পাঠানো অভিবাসীদের গ্রহণ করার কথা ছিল। এরপর যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভেনিজুয়েলায় নির্বাসিতদের পাঠানোর কার্যক্রম স্থগিত করা হয় এবং ভেনিজুয়েলাও জানায়, তারা আর এসব ফ্লাইট গ্রহণ করবে না।
তবে কারাকাস শনিবার ঘোষণা দেয়, তারা ওয়াশিংটনের সঙ্গে একটি নতুন চুক্তিতে পৌঁছেছে, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ২০০ ভেনিজুয়েলীয় নাগরিককে নির্বাসিত করেছে, যারা হন্ডুরাসের মাধ্যমে দেশে ফিরে গেছেন।
এই চুক্তি হয় তখন, যখন ১৬ মার্চ যুক্তরাষ্ট্র দুই শতাধিক ভেনিজুয়েলীয়কে এল সালভাদরের একটি সর্বোচ্চ নিরাপত্তাবেষ্টিত কারাগার ও শ্রম শিবিরে পাঠায়। ওয়াশিংটন অভিযোগ করেছিল, তারা সবাই কুখ্যাত অপরাধী গোষ্ঠী ট্রেন ডি আরাগুয়া গ্যাংয়ের সদস্য। ট্রাম্প তখন কথিত গ্যাং সদস্যদের বিতাড়িত করতে যুদ্ধকালীন ক্ষমতা প্রয়োগ করেন।
ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এই শুল্ক আরোপ করছে ‘বিভিন্ন কারণের জন্য, যার মধ্যে একটি হলো ভেনিজুয়েলা কৌশলে ও প্রতারণার মাধ্যমে হাজার হাজার উচ্চ পর্যায়ের অপরাধী ও অন্যান্য অপরাধীদের গোপনে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছে।’
তিনি আরো জানান, সব নথিপত্র স্বাক্ষরিত ও নিবন্ধিত হবে এবং এই শুল্ক আগামী ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের ‘মুক্তি দিবসে’ কার্যকর হবে। ট্রাম্প এই দিনটিকে বিশেষ উপাধি দিয়ে উল্লেখ করেন। কারণ তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, সেদিন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হবে, যা ওয়াশিংটনের মতে, অন্যায্য বাণিজ্য চর্চার বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া। এরই মধ্যে তিনি চীন, কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে মারাত্মক ফেন্টানিল প্রবাহ বন্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে এবং বাণিজ্য ভারসাম্যের অসঙ্গতির যুক্তি দেখিয়ে।
এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময় এলো, যখন চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র জ্বালানি কম্পানি শেভরনকে ভেনিজুয়েলায় তাদের কার্যক্রম এক মাসের মধ্যে বন্ধ করার নির্দেশ দেয়, যা দেশটির অর্থনৈতিকভাবে চাপে থাকা কর্তৃপক্ষের জন্য বড় আঘাত।
এসএম