গণপরিষদ কেন দিতে হবে, দেশ কি বিচ্ছিন্ন হয়েছিল: রিজভী

কেন গণপরিষদ দিতে হবে? বাংলাদেশ কি বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল বলে প্রশ্ন করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি আরও বলেন, গণপরিষদ তখনি হয় যখন একটি দেশ নতুন স্বাধীন হয়, স্বাধীন হবার পর যে দেশে আইন থাকে না, সংবিধান থাকে না, সরকার থাকে না। তখন সেখানে একটি পরিষদ করে সংবিধান রচনা করা হয়। সরকার গঠন করা হয়। কিন্তু আমরা তো এই দেশ পেয়েছি ১৯৭১ সালে ৯মাস যুদ্ধ করে। এখানে গণপরিষদের কথা কেন বলা হচ্ছে? কারা বলতে চাচ্ছে। মূলত একটি রাজনৈতিক দল যারা ১৯৭১ সালে রাজনৈতিকভাবে অপরাধ করেছেন। সেই ৭১-এর স্মৃতি, ১৯৭১-এর বড় অর্জনকে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা ও গণ পরিষদের’ নামে মানুষের মন থেকে ভুলিয়ে দিতে চান তারা।

শনিবার (২৯ মার্চ) দুপুরে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার তামাই এলাকায় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীমের উদ্যোগে বেলুকচি-চৌহালী-এনায়েতপুরের ৭ হাজার দুঃস্থ মানুষের মাঝে শাড়ি, লুঙ্গি, পাঞ্জাবি ও ১ হাজার পরিবারের মাঝে ঈদ সামগ্রী এবং দুইজন শহীদ পরিবারের মাঝে ২ লাখ টাকা অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ৭১ এ যাদের ভুমিকা বিতর্ক ছিল, যারা ৭১ অপরাধমূলক ভুমিকা পালন করেছে। তারা না হয় তাদের ভুমিকা মানুষের মন থেকে ভুলিয়ে দেওয়ার জন্য দ্বিতীয় স্বাধীনতাসহ নানা কথা বলছেন। কিন্তু যারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতা ছিলেন, নতুন রাজনৈতিক দল করেছেন, তারা যদি এইসব কথা বলেন, তবে আমাদের বড় প্রশ্ন জাগে? আপনারা কার কথায় এসব বলছেন? আপনাদের এসব কথা বলা ঠিক না।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, সংস্কারের কথা বলে জনগণের সাথে নির্বাচন নিয়ে লুকোচুরি খেলছেন। একবার বলেন মার্চ, একবার জুন, একবার ডিসেম্বর। কেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ লুকোচুরি খেলছেন। সংস্কারতো চলমান প্রক্রিয়া। সংস্কারতো করবে নির্বাচিত সরকার। আপনারা শুধু সুপারিশ করতে পারবেন।

তিনি বলেন, যারা আওয়ামী লীগের দোসর, অন্যায় যারা করেছে, র‌্যাব-পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে, হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে শিশু তরুণদের হত্যা করা হয়েছে। যে রক্তাক্ত জনপদ তৈরি করেছিল শেখ হাসিনা। সেই হাসিনাসহ দোষীদের বিচার করতে এতোদিন লাগবে কেন? আর বিচারের নামে জনগণের অধিকার কেন কেড়ে নেওয়া হবে? জনগণ কেন তার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি করতে পারবে না?

কতিপয় দলের প্রশ্ন ‘আন্দোলন কি নির্বাচনের জন্য হয়েছে? এমন কথার উত্তরে রিজভী বলেন, অবশ্যই গণতন্ত্র কেড়ে নিয়েছিল শেখ হাসিনা, ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যেতে দেয়নি, ভোট কেন্দ্রে গরু-বাছুর ও কুকুর ঘুরে বেড়িয়েছে। এই হারানো অধিকার ফেরানোর জন্যেই আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছে। কেন নির্বাচন দেরি হবে?

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যে কাজ সেই কাজ না করে অন্য কাজ করছেন। আওয়ামী লীগ কালো টাকা ছড়িয়ে বাজারে সিন্ডিকেট করছে। এমনকি বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছেন। আওয়ামী দোসররা হাট-বাজার দখল করেছে। যা আওয়ামী লীগ আমলে হয়েছে। কিন্তু ড. ইউনূস সরকারের আমলে কেন এগুলো হবে? এটাই জনগণের প্রশ্ন।

এ সময় বেলকুচি উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জামাল ভূঁইয়া, সাবেক আহবায়ক নুরু ল ইসলাম গোলাম, সাবেক সদস্য সচিব বনী আমিন পৌর বিএনপির সাবেক আহবায়ক আলতাফ হোসেন প্রামাণিক সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজ্জাক মন্ডলসহ বিএনপি নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এসএম/এসএন

Share this news on: