যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কে ভারতের যেসব খাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি

ভারতসহ বিভিন্ন দেশের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত পাল্টা শুল্ক আগামী ২ এপ্রিল থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। এই শুল্ক যদি শেষ পর্যন্ত সত্যিই আরোপ হয়, তবে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে ভারতের বিভিন্ন শিল্প।

২০২১-২২ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ছিল ভারতের সর্ববৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার। ভারতের মোট বাণিজ্যের ১০ দশমিক ৭৩ শতাংশ, মোট রপ্তানির ১৮ শতাংশ এবং মোট আমদানির ৬ দশমিক ২২ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
 
ভারতের চিংড়ি রপ্তানি কঠিন হয়ে পড়বে, ব্যয় বাড়বে ওষুধে, ক্ষতিগ্রস্ত হবে জুতার বাজার
 
ভারত যুক্তরাষ্ট্রে ৩০টি খাতে পণ্য রপ্তানি করে, যার মধ্যে ছয়টি কৃষি ও ২৪টি শিল্পখাত। যদি খাতভিত্তিক শুল্ক আরোপ করা হয়, তবে বিভিন্ন পণ্য কী পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
 
> অ্যালকোহল, ওয়াইন ও স্পিরিট: এগুলোর ওপর ১২২ দশমিক ১০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধি পাবে। যদিও এই খাতে ভারতের রপ্তানি মাত্র ১ দশমিক ৯২ কোটি ডলারের।

> দুগ্ধজাত পণ্য: ১৮১ দশমিক ৪৯ কোটি ডলারের রপ্তানি ৩৮ দশমিক ২৩ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির ফলে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। এতে ভারতের ঘি, মাখন ও গুঁড়া দুধের দাম বেড়ে প্রতিযোগিতামূলক বাজার হারানোর আশঙ্কা তৈরি হবে।

> মাছ, মাংস ও প্রক্রিয়াজাত সামুদ্রিক খাদ্য: ২৫৮ কোটি ডলারের রপ্তানিতে ২৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির ফলে বড় ক্ষতি হবে, বিশেষ করে ভারতের চিংড়ি রপ্তানি কঠিন হয়ে পড়বে।

> জীবিত প্রাণী ও প্রাণিজ পণ্য: ১ দশমিক ০৩ কোটি ডলারের রপ্তানিতে ২৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।

> প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, চিনি ও কোকোয়া: ১০৩ কোটি ডলারের রপ্তানিতে ২৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধি পেলে ভারতীয় স্ন্যাকস ও মিষ্টিজাতীয় পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে ব্যয়বহুল হয়ে উঠবে।
 
> জুতা: ১৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির ফলে ভারতীয় জুতার বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

> হীরা, সোনা ও রূপা: ১ হাজার ১৮৮ কোটি ডলারের রপ্তানিতে ১৩ দশমিক ৩২ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির পেতে পারে। এর ফলে ভারতের গয়নার দাম বাড়বে এবং তারা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে।

> শিল্পপণ্য: ওষুধ খাতে ১০ দশমিক ৯০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির মুখে পড়বে, যা ভারতীয় জেনেরিক ও বিশেষায়িত ওষুধের ব্যয় বাড়িয়ে তুলবে।
বিজ্ঞাপন

> ভোজ্যতেল: ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির ফলে ভারতের নারকেল ও সরিষার তেলের দাম বাড়বে।

> আকরিক, খনিজ, পেট্রোলিয়াম ও পোশাক খাত: এসব খাতে নতুন কোনো শুল্ক আরোপ করা হবে না।
 
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এসব শুল্কের ফলে ভারতের রপ্তানি বাজার সংকুচিত হতে পারে এবং কিছু ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প বাজার খুঁজতে হতে পারে।


এমআর/এসএন


Share this news on: