ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভের জেরে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘রোষানলে’ পড়ে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এক বিদেশি শিক্ষার্থী। ভিসা বাতিল হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার হতে পারেন– এমন যখন পরিস্থিতি, তখন স্বেচ্ছায় দেশটি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকের এই শিক্ষার্থী।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোমোদু তাল নামের ওই শিক্ষার্থী যুক্তরাজ্য ও গাম্বিয়ার যৌথ নাগরিক। ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ চলাকালে গত বছর নিজের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার কারণে তার শিক্ষার্থী ভিসা বাতিল করে ট্রাম্প প্রশাসন।
ভিসা বাতিল হওয়ার পর বহিষ্কার হওয়া ঠেকাতে এর আগে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন তাল। তবে সোমবার এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান, ‘মাথা উঁচু করে স্বাধীনভাবে’ তিনি যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নির্বাসন স্থগিত করার জন্য তার অনুরোধ আদালত প্রত্যাখ্যান করার পরই এই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে পোস্টে উল্লেখ করেন।
ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে সক্রিয় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ থেকে বহিষ্কারের লক্ষ্যে চিহ্নিত হওয়ার পর তাল অন্তত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী যিনি যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার পথ বেছে নিলেন। ট্রাম্প প্রশাসন এই ঘটনাগুলোকে ‘স্ব-নির্বাসন’ হিসেবে চিহ্নিত করছে।
সোমবার এক্স পোস্টে তাল লেখেন, “যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে যা দেখছি, তাতে আদালতের অনুকূল রায়ে আমার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও বিশ্বাসের প্রকাশ নিশ্চিত হবে– এমন আস্থা আমি হারিয়ে ফেলেছি।”
তিনি আরও লেখেন, “রাস্তায় হাঁটলে অপহরণের শিকার হতে পারি– এমন ভয়ও তৈরি হয়েছে। এসব বিবেচনা করে আমি দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার কারণে নিউইয়র্কের আইভি লিগের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তালকে দুবার বহিষ্কার করা হয়েছিল।গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার কারণে অন্তত ৩০০ শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, অভিবাসন ও জাতীয়তা আইন অনুসারে, যেসব বিদেশি নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতি এবং জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থের বিরোধী, তাদের বহিষ্কার করার ক্ষমতা পররাষ্ট্র দপ্তরের রয়েছে।
এর আগে স্বেচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া এক ভারতীয় শিক্ষার্থী সিএনএনকে বলেছিলেন, “আমি কোনো সন্ত্রাসীর সমর্থক নই।” তিনি আরও জানান, তিনি কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পুনরায় ভর্তি হয়ে তার পিএইচডি প্রোগ্রাম শেষ করতে চান।
গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু ছিল এই কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়।
এমআর/এসএন