জাপানে প্রলয়ঙ্করী মেগা-ভূমিকম্প আঘাত হানলে প্রায় তিন লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে দেশটির সরকার। এ ছাড়া, দেশটির প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে এমন ভূমিকম্প আঘাত হানলে ১.৮১ ট্রিলিয়ন ডলার (প্রায় ২৭০ ট্রিলিয়ন ইয়েন) অর্থনৈতিক ক্ষতি হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে। সোমবার (৩১ মার্চ) প্রকাশিত ক্যাবিনেট অফিসের এক প্রতিবেদনে এই আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে। এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জাপানের মোট জাতীয় উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় অর্ধেক। খবর রয়টার্স।
জাপান বিশ্বের অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ। দেশটির সরকার মনে করে, নানকাই ট্রফ অঞ্চলে ৮ থেকে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পের সম্ভাবনা প্রায় ৮০ শতাংশ। সবচেয়ে ভয়াবহ আশঙ্কা, অর্থাৎ ৯ মাত্রার ভূমিকম্প হলে জাপানে ১২ লাখ ৩০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে, যা মোট জনসংখ্যার প্রায় এক শতাংশ। বিশেষ করে, শীতকালে রাতের বেলা যদি ভূমিকম্প আঘাত হানে, তাহলে সুনামি ও শত শত ভবন ধ্বংসের ফলে আনুমানিক দুই লাখ ৯৮ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটতে পারে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটির মোট জাতীয় উৎপাদনের প্রায় অর্ধেক, ২৭০.৩ ট্রিলিয়ন ইয়েন অর্থনৈতিক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। আগের পূর্বাভাসে এই ক্ষতির পরিমাণ ধরা হয়েছিল ২১৪.২ ট্রিলিয়ন ইয়েন।
নানকাই ট্রফ অঞ্চলটি জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলের কাছে অবস্থিত এবং প্রায় ৯০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। এই অঞ্চলে ইউরেশীয় প্লেটের নিচে ফিলিপাইন সি প্লেটের সাবডাকশনের কারণে টেকটোনিক চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। ভূতাত্ত্বিক চাপ সঞ্চিত হওয়ায় প্রতি ১০০ থেকে ১৫০ বছরে একবার মেগা ভূমিকম্পের আশঙ্কা তৈরি হয়।
গত বছর জাপান তার প্রথম ৯ মাত্রার মেগা ভূমিকম্প সম্পর্কে সতর্কতা জারি করেছিল। এর আগে নানকাই ট্রফের প্রান্তে ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। উল্লেখ্য, ২০১১ সালে ৯ মাত্রার এক ভূমিকম্পে সৃষ্ট সুনামিতে ১৫ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। সে সময় উত্তর-পূর্ব জাপানে এক পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের তিনটি রিঅ্যাক্টর গলে গিয়েছিল।
এসএন