ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ফতোয়া জারি শীর্ষ আলেমদের

অবরুদ্ধ গাজায় ১৮ মাস ধরে ইতিহাসের বর্বরতম হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। যেন আসমান জমিনে কেউ নেই গাজাবাসীকে বাঁচাতে। মধ্যপ্রাচ্যের দুই-একটি দেশ ছাড়া মুসলিম বিশ্বের বাদ বাকী সব দেশ নেহাতই দর্শকের মত দাঁড়িয়ে দেখে যাচ্ছেন নৃশংসতম এই গণহত্যা।

রাষ্ট্রগুলোর এই ব্যর্থতায় চুপ থাকতে না পেরে এবার মুখ খুলেছেন মুসলিম বিশ্বের শীর্ষ আলেম-ওলামারা। প্রথমবারের মতো জায়নবাদী ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে জিহাদের ডাক দিয়ে ফতোয়া জারি করেছেন তারা। গাজায় হত্যাযজ্ঞ থামাতে বিশ্বের সকল মুসলিমকে এতে সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। মুসলিম বিশ্বের ধর্মীয় এই নেতারা বলছেন যথেষ্ট হয়েছে।

এবারে অবশ্যই বন্ধ করতে হবে গাজায় হত্যাযজ্ঞ। ফতোয়া অনুযায়ী গাজাবাসীকে রক্ষায় আরব ও ইসলামি বিশ্বের দেশগুলোর ব্যর্থতা ইসলামি আইন অনুসারে গুরুতর অপরাধের সামিল।

ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম ইরনা নিউজ জানিয়েছে, মুসলিম আলেমদের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব মুসলিম স্কলারস (IUMS) এর পক্ষ থেকে এই ধর্মীয় নির্দেশ জারি করেছে।

আলেমদের প্রতিনিধি হিসেবে আইইউএমএস এর মহাসচিব আলী আল-কারদাঘী এর ঘোষণা করেন। তাকে সমর্থন জানিয়েছেন আরও ১৪ জন বিজ্ঞ ইসলামি পন্ডিত। কারদাঘী মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে সম্মানীত ধর্মীয় ব্যক্তিদের মধ্যে একজন। বিশ্বের ১৭০ কোটি সুন্নী মুসলমানের কাছে ব্যাপক গুরুত্ব বহন করে তার ফতোয়া বা ফর্মানগুলো।

পনেরো দফা সংবলিত ওই ফরমানে অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধ বন্ধে প্রত্যেক মুসলিম দেশকে হস্তিক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়েছে। একইসাথে ইসয়াইলের সাথে এসব দেশের যেকোনো ধরণের শান্তি বা সমঝোতা চুক্তির পুনর্বিবেচনার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

গাজাযুদ্ধবন্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপর সর্বোচ্চ চাপ তৈরি করতে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিমদের প্রতিও আহ্বান জানানো হয় এতে। ফরমানে বলা হয় গাজায় পরিকল্পিত গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধে সব মুসলিম দেশের জরুরি ভিত্তিতে সামরিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করা প্রয়োজন। ইসলামি আইন অনুসারে ইসয়ায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি নিষিদ্ধ।
সুয়েজ খাল, হরমুজ প্রণালিসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন জলপথ, সমুদ্র, আকাশ বা স্থলপথে কোনো কিছু পরিবহনে ইসরায়েলি সহায়তাও নিষিদ্ধ। দখলদারদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অবরোধ আরোপের নির্দেসব দেওয়া হয় ফরমানে।

ফরমান কী?
ফরমান বা ফতোয়া এক ধরণের ইসলামী আইনি আদেশ। কোরআন ও হাদীসেদ আলোকে ইসলামী নেতারা এ আদেশ জারি করেন। এটি মেনে চলা বাধ্যতামূলক নয়। তবে গাজা যুদ্ধের এই পর্যায়ে ইসলামী পন্ডিতদের এই ফতোয়া জারির বিষয়টি মুসলিম বিশ্বের জন্য বিশেষ তাৎপর্যের৷ 

এসএন 

Share this news on: