হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ আগামী ৩ মে ঢাকায় একটি মহাসমাবেশের আয়োজন করবে, যার মূল উদ্দেশ্য হলো আওয়ামী লীগ আমলে গুম-খুনের বিচার এবং ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে নৃশংসতা নিয়ে চার দফা দাবি তুলে ধরা। গত ২৮ মার্চ ঢাকার জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদ্রাসায় হেফাজতের কেন্দ্রীয় বিশেষ কমিটির জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
চার দফা দাবি:
১. ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে নির্বিচারে হত্যার বিচার।
২. আওয়ামী লীগ আমলে গুম-খুনের বিচার।
৩. হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার।
৪. গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার এবং সংবিধানে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস ফের সংযুক্ত করা।
এছাড়াও, হেফাজতে ইসলাম আগামীতে নির্বাচনী রাজনীতিতে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে এবং নিশ্চিত করেছে যে তারা কারও ক্ষমতায় যাওয়ার হাতিয়ার হবে না।
গত শনিবার রাতে হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতারা বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে বিএনপির শীর্ষ নেতারা হেফাজতের সমর্থন চাইলে, হেফাজত নেতারা জানিয়েছেন, তারা নির্বাচনী জোটে যোগ দেবে না এবং হেফাজত কখনোই কারও ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহৃত হবে না।
হেফাজতের ৮ দফা প্রস্তাব:
হেফাজত তাদের বৈঠকে বিএনপিকে ৮ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে, যা :
1. সংবিধানে ‘আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ বহাল রাখা।
2. শাপলা চত্বরে গণহত্যার বিচার শুরু করা।
3. শাপলা চত্বরে হেফাজতের কর্মীসহ বিএনপির নেতাকর্মীদের মামলাগুলো প্রত্যাহার।
4. ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেওয়া।
5. গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা।
৬. আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশকে জঙ্গি ও উগ্রবাদী রাষ্ট্র হিসেবে ভারত এবং আওয়ামী লীগের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ ভাষায় কথা বলতে বিএনপিকে আহ্বান।
৭. বিএনপির কিছু কর্মকাণ্ডে দেশের মানুষ ও ওলামায়ে কেরাম যে অসন্তুষ্ট, তা বিএনপিকে জানানো হয়েছে। বরং জাতীয় ঐক্য গঠনে বিএনপি ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে, সেই আশা ব্যক্ত করা হয়েছে।
৮. গণহত্যার দায়ে ফ্যাসিস্ট দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসতে বিএনপিকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
হেফাজত ইসলামের নেতারা তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে, তারা নির্বাচনী রাজনীতির বাইরে থাকবে এবং জনগণের পক্ষেই মতামত প্রদান করবে।
এসএস/এসএন