রসুনের বাম্পার ফলন, ন্যায্য দাম পেয়ে খুশি কৃষক

শস্যভাণ্ডার খ্যাত সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন রসুনের ঘ্রাণ। চলতি বছরে রসুনের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ দিকে বাজারে চড়া মূল্য পাওয়ায় কৃষকেরা বেজায় খুশি। উপজেলায় কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এ বছর রসুন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ১৭০ হেক্টর জমিতে নির্ধারণ করা হলেও এবার লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণ রসুন চাষ হয়েছে ৪৭৫ হেক্টর জমিতে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে আরও জানা যায়, তাড়াশ উপজেলা ৮ ইউনিয়নের চরহামকুড়িয়া, চরকুশাবাড়ী, নাদোসৈয়দপুর, ধামাইচ, সবুজপাড়া, বিন্নাবাড়ী, দিঘী সগুনা, কুন্দইল, ধামাইচ এলাকার মাঠে মাঠে রসুন তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। পুরুষের পাশাপাশি রসুন তোলার কাজে নারীরাও সহযোগিতা করছেন।

হামকুড়িয়া গ্রামের কৃষক সাব্বির আহমেদ বলেন, এ বছর বীজ রসুনের বাজার মূল্য বেশি হওয়ায় প্রতি বিঘা জমিতে বীজ, সার, বপন, হাল চাষ, নিড়ানি ও অন্যান্য খরচ হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে রসুন উৎপাদন হয়েছে কমপক্ষে ৩৫/৪০ মণ। যার বর্তমান বাজার মূল্য এক লাখ ৪০ হাজার থেকে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি ৪০ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার খরচ হলেও কৃষকের লাভ হয়েছে তিনগুণ টাকা। ফলে কৃষকেরা রসুন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে।

রসুনচাষি আতাব আলী বলেন, প্রায় চার বিঘা জমি লিজ নিয়ে রসুন আবাদ করেছি। এতে বিঘা প্রতি প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে আমার। তবে এবার যে ফলন হয়েছে।

বর্তমানে ৪ হাজার মণ দরে রসুন বিক্রি করেছেন বলে জানান তিনি।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যেমতে, শীতের শুরুতে নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসের ভেজা মাটি রসুন চাষের জন্য উপযোগী। দিনে দিনে চলনবিল অঞ্চলে বিনা চাষে রসুনের আবাদ কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। খরচ কম, ফলন ভালো ও লাভের পরিমাণও বেশি, তাই তারা রসুন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। শুধুমাত্র তাড়াশেই প্রতি বছর ৪৭৫ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ তিনগুন। এদিকে বিনা চাষে রসুন আবাদ করলেও সার-বীজ-কীটনাশক দিয়ে বিঘা প্রতি উৎপাদন খরচ ৩৫ থেকে ৪৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। আর বিঘা প্রতি গড়ে ৩৫ মণ রসুন উৎপাদন হয়েছে।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, উপজেলায় ৪৭৫ হেক্টর জমিতে রসুনের চাষ হয়েছে। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। আশা করছি, বর্তমানে বাজার দরের চেয়ে আরও দাম বাড়বে। এসব রসুন দেশের চাহিদা অনেকটাই পূরণ করবে।

এফপি/টিএ 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
মালয়েশিয়ায় জঙ্গি সন্দেহে আটক তিনজন দেশে ফিরেছেন, জিজ্ঞাসাবাদ চলছে : আসিফ নজরুল Jul 05, 2025
img
সকালের মধ্যে দেশের ৭ জেলায় ৬০ কি.মি. বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস Jul 05, 2025
img
জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে টালবাহানা করা হচ্ছে : নাহিদ ইসলাম Jul 05, 2025
img
এনসিপির কর্মসূচি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পুনর্গঠনে একটি নতুন রাজনীতির সূচনা: প্রেস সচিব Jul 05, 2025
img
সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করলে ঐক্যবদ্ধভাবে তা মোকাবিলা করা হবে: আখতার Jul 05, 2025
img
এজবাস্টনে বড় লিড নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করল ভারত, চাপে ইংল্যান্ড Jul 05, 2025
img
৬ ঘণ্টা পর খুলনা রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক Jul 05, 2025
img
মুন্সীগঞ্জে বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল ২ মোটরসাইকেল আরোহীর Jul 05, 2025
img
হাসারাঙ্গাকে সামলানোর নতুন কৌশল খুঁজে পেল বাংলাদেশ! Jul 05, 2025
img
সংস্কার শেষে এই সংবিধানের অধীনেই দেশ চলবে: রিজভী Jul 04, 2025
img
আওয়ামী লীগ শুধু হিন্দুদের ব্যবহার করেছে মাত্র: আযম খান Jul 04, 2025
img
আগস্টে তুরস্কের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ নারী দল! Jul 04, 2025
img
ধূমপানের দৃশ্য নয়, নীতির কাছে আপসহীন অভিনেত্রী রাশমিকা! Jul 04, 2025
img
খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক তুলে নিল রাজস্ব বোর্ড Jul 04, 2025
img
বিএনপি জনগণের রাজনীতি করে, ক্ষমতার রাজনীতি করে না: ওবায়দুর রহমান চন্দন Jul 04, 2025
img
‘রামায়ণ’ হতে যাচ্ছে ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল সিনেমা Jul 04, 2025
img
দেশে টানা ৫ দিন ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস Jul 04, 2025
১০ মিনিটে সারাদিনের দেশের আলোচিত সব খবর Jul 04, 2025
img
সরকারের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে না পারা : শিবির সভাপতি Jul 04, 2025
img
জুলাই যোদ্ধাদের সনদ দেওয়া সম্ভব কিন্তু একটু ক‌ঠিন : উপদেষ্টা শারমীন Jul 04, 2025