কিছুদিন পরই বাংলা নববর্ষ ১৪৩২। নানা আয়োজনে বর্ষবরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় এরই মধ্যে শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। এবার ‘স্বৈরাচারের প্রতীকী’ ভাস্কর্য ছাড়াও থাকছে পাঁচটি মোটিফ। আয়োজকরা জানিয়েছেন, বাঙালি সংস্কৃতির সাথে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর ঐতিহ্য একাত্মতায় উদযাপিত হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক শোভাযাত্রা।
নববর্ষে ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান- শ্লোগানে প্রস্তুত হচ্ছে চারুকলা। এবার বর্ষবরণের শোভাযাত্রার জন্য পাঁচটি মোটিফ প্রস্তুত করা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে ফ্যাসিবাদের প্রতীক, জাতীয় মাছ ইলিশ, সাহসের প্রতীক বাঘ, শান্তির পায়রা ও ঐতিহ্যবাহী বাহন পালকি।
বর্ষবরণ উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ড. এ এ এম কাওসার হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশে যেন আর কখনও স্বৈরাচার সৃষ্টি হতে না পারে, ফ্যাসিস্ট সৃষ্টি হতে না পারে। আমাদের শিল্পী সমাজ আমরা সচেতন, আমরা সব সময় সচেতন থাকব, আমরা ন্যায়ের পক্ষে থাকব বলেই এই মোটিফটাকে উপস্থাপন করব।’
এবারের আয়োজনে প্রথমবারের মত থাকছে পট চিত্র। গাজীর পট, বনবিবি, বেহুলা লখিনদর, মোগল আমল ও জুলাই বিপ্লব নিয়ে ১০০ ফুট দীর্ঘ পট চিত্র তৈরি হচ্ছে।
একজন শিল্পী বলেন, ‘বাংলা নববর্ষ যে সম্রাট আকবরের আমল থেকে শুরু হয়েছে, আকবরের একটা সিরিজ থাকবে। এভাবেই ২০ ফিট করে ১০০ ফিটের একটা র্যালিতে যাবে।’
এবারের শোভাযাত্রায় থাকবে বড় আকারের রাজা-রানীর অন্তত ৪টি মুখোশ। এছাড়াও বাঘ, প্যাঁচা, পাখি, ফুলসহ শতাধিক বর্ণিল মুখোশ।
চারুকলার একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘এবারের আমাদের থিম হচ্ছে গাজীর পট এবং এটার মাধ্যমেই আমরা নতুন প্রজন্মের কাছে আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরতে চাই। একেক জনের একেক রং পছন্দ। আমরা এখানে কাউকেই বাধা দেই না।’
ভিন্ন আঙ্গিকে হবে এবারের বর্ষবরণের শোভাযাত্রা। বাঙালি সংস্কৃতির সাথে দেশের সব জাতির অন্তর্ভুক্তিমূলক ঐতিহ্যের মিলন ঘটবে শোভাযাত্রায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম চঞ্চল বলেন, ‘অন্ধকার থেকে আলোর দিকে যাওয়া এবং ঐক্যের একটা বিষয় আছে। বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর আশা আকাঙ্ক্ষা, আবেগ ভালোবাসা এসব বিষয়গুলো আমরা এবার অনেক বেশি বিবেচনা করছি।’
আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চারুকলা প্রাঙ্গণে বর্ষ বিদায় ও বরণে তিন দিন ব্যাপী নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
এসএম