চাঁদে ডেটা সেন্টার স্থাপন এখন আর কল্পনা নয়, বরং বাস্তবতা হতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান লোনস্টার ডেটা হোল্ডিংস পরীক্ষামূলকভাবে চাঁদে তথ্যভান্ডার স্থাপনের সফলতা পেয়েছে। এটি প্রযুক্তির ইতিহাসে একটি বড় মাইলফলক।
ডেটা সেন্টার হচ্ছে এক বা একাধিক কম্পিউটারের বিশাল ব্যবস্থা, যেখানে ওয়েবসাইট, সরকারি বা ব্যবসায়িক তথ্য প্রক্রিয়া ও সংরক্ষণ করা হয়। বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) জন্য বিপুল পরিমাণ তথ্য সংরক্ষণ এবং প্রক্রিয়া করা প্রয়োজন। গবেষণায় দেখা গেছে, ২০৩০ সালের মধ্যে ডেটা সেন্টারের চাহিদা ১৯-২২ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।
গত মাসে, লোনস্টার ডেটা হোল্ডিংস একটি ছোট বইয়ের আকৃতির ডেটা সেন্টার চাঁদে পাঠিয়েছে। এটি পাঠানোর জন্য তারা যুক্তরাষ্ট্রের ইনটিউটিভ মেশিনসের ‘এথেনা লুনার ল্যান্ডার’ ব্যবহার করে। এই ল্যান্ডারটি স্পেসএক্সের ফ্যালকন-৯ রকেটে চাঁদে পাঠানো হয়।
লোনস্টার ডেটা হোল্ডিংস জানিয়েছে, মহাকাশে ডেটা সেন্টার স্থাপন করলে তা নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য তথ্য প্রক্রিয়া করার সুযোগ দেবে। সৌরশক্তির মাধ্যমে সেগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে। প্রতিষ্ঠানের প্রেসিডেন্ট স্টিফেন এইসলে বলেন, ‘মহাকাশে ডেটা সেন্টার স্থাপন করলে নিরাপত্তা বাড়বে এবং ভবিষ্যতে এটি একটি বড় প্রযুক্তিগত সুবিধা হবে।’
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মহাকাশে ডেটা সেন্টার স্থাপনের ফলে পৃথিবীর উপর চাপ কমবে, কারণ মহাকাশে বিদ্যুৎ এবং ঠান্ডা রাখার প্রযুক্তির খরচ কম হবে। তাছাড়া, চাঁদে তথ্য সংরক্ষণ করলে পৃথিবীতে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা যুদ্ধ হলেও ডেটা নিরাপদ থাকবে। ভবিষ্যতে, চাঁদে প্রযুক্তিগত হাব গড়ে তোলার সম্ভাবনা রয়েছে, যেখানে বিভিন্ন দেশ এবং প্রাইভেট কোম্পানি বড় বিনিয়োগ করবে।
এর আগে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল যেখানে পৃথিবীর কক্ষপথে ডেটা সেন্টার স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছিল। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মহাকাশে ডেটা সেন্টার স্থাপন হলে ইউরোপের ডিজিটাল ভূচিত্র বদলে যাবে এবং এটি পরিবেশবান্ধব হবে।
এসএস