অভ্যুত্থানের ক্ষতিপূরণের টাকা আত্নসাৎ, হাতেনাতে ধরা একজন

জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহত পরিবারদের সহায়তায় সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থের একটি অংশ মধ্যস্বত্বভোগীদের হাতে চলে যাচ্ছে। এমনকি, অনেক পরিবার এখনও তাদের প্রাপ্য সহায়তা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি, জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে বরাদ্দকৃত অর্থের বিনিময়ে জালিয়াতির একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে, যারা অর্থের বিনিময়ে কাগজপত্র প্রস্তুত করে দিচ্ছে। এমনই এক অভিযুক্ত আফরিনকে হাতেনাতে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন।

হাফিজা আক্তার (হ্যাপি) নামে এক শহীদ পরিবারের সদস্য জানান, তার স্বামী আহসান শরীফের নাম রাষ্ট্রীয় তালিকায় থাকলেও সহায়তা পেতে তাকে ৫ হাজার টাকা দিতে বাধ্য করা হয়। একইভাবে, নারায়ণগঞ্জের অঙ্কন দাস, বেলাল হোসেন ও বুলবুল শিকদারের পরিবারও অভিযোগ করেন যে তাদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করা হয়েছে। আফরিন নামের এক নারী, যিনি আগে এনসিপির নারায়ণগঞ্জ শাখার সংগঠক ছিলেন, তিনি শহীদ ও আহত পরিবারদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগে বহিষ্কৃত হন।

ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা যায়, আফরিন একাধিক সংস্থা থেকে টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করতেন। তিনি পরিবারগুলোকে বলতেন, "আপনি যদি ১০ হাজার টাকা দেন, তাহলে পরবর্তী অনুদান পাবেন, নইলে পাবেন না।" এমনকি সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত ২০ হাজার টাকার মধ্যে অর্ধেক আদায়ের চেষ্টাও করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন এই ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে, "যারা শহীদ ও আহতদের সহায়তায় নিয়োজিত, তাদের এমন কাজে লিপ্ত হওয়া অমার্জনীয়।" সংগঠনটি বিষয়টি তদন্ত করে আফরিনকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে।

অনেক আহত ও শহীদ পরিবার এখনও তাদের প্রাপ্য সহায়তা পাচ্ছেন না। তারা সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কাছে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি, যারা সুস্থ রয়েছেন, তাদেরও আহত ও শহীদ পরিবারদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, সরকারি সহায়তা প্রকৃত প্রাপকদের কাছে পৌঁছানোর প্রক্রিয়া কতটা স্বচ্ছ? দুর্নীতি রোধে কঠোর নজরদারি ও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে, জুলাই অভ্যুত্থানের মতো ঐতিহাসিক আন্দোলনের শহীদ ও আহতদের পরিবাররা আরও বঞ্চিত হবেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

এফপি/টিএ


Share this news on:

সর্বশেষ

img
পূজায় চমক নিয়ে ‘আয়েশা’ রূপে আসছেন কৌশানী! Jul 10, 2025
img
৪৪ লাখ ভোটারের সম্পূরক ভোটার হালনাগাদ প্রকাশ আগামী সপ্তাহে: ইসি সানাউল্লাহ Jul 10, 2025
img
করণ জোহরের শীর্ণ চেহারা দেখে উদ্বিগ্ন অনুরাগীরা! Jul 10, 2025
img
বৈরী আবহাওয়ায় ট্রলারডুবি, বঙ্গোপসাগরে ৩ জেলে নিখোঁজ Jul 10, 2025
img
শক্তিশালী বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠায় সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে কানাডা Jul 10, 2025
img
বান্দরবানের লামা উপজেলার সব রিসোর্ট বন্ধ রাখার নির্দেশ Jul 10, 2025
img
নারী কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ সম্বোধন বাতিলের সিদ্ধান্ত Jul 10, 2025
img
ভারতে উপহার হিসেবে ৩০০ কেজি আম পাঠালেন প্রধান উপদেষ্টা Jul 10, 2025
img
পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেবেন প্রবাসীরা: ইসি Jul 10, 2025
img
রেজাল্ট বাজে হয়েছে বা ফেল করেছেন বলে মন খারাপ করবেন না: খায়রুল বাসার Jul 10, 2025
img
টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ, দলে ফিরলেন নাঈম-সাইফউদ্দিন Jul 10, 2025
img
সোশ্যাল মিডিয়ার তথ্য লুকালে মার্কিন ভিসা বাতিলের ঝুঁকি Jul 10, 2025
img
আমরা এখনও ঘনিষ্ঠ হই, আমিরের প্রাক্তন কিরণ Jul 10, 2025
img
চিত্রনায়িকা পপির চাচাকে নিজ বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ Jul 10, 2025
img
বাংলাদেশ ব্যাংকের তিন সাবেক গভর্নরসহ ৯ শীর্ষ কর্তাদের নথি তলব Jul 10, 2025
img
রাজধানী ঢাকাসহ ১২ জেলায় হতে পারে ঝড় Jul 10, 2025
img
প্রধান বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত দুই বিষয়ে একমত হয়েছে দলগুলো: আলী রীয়াজ Jul 10, 2025
img
পলিথিন বন্ধে শুরু হচ্ছে যৌথ বাহিনীর অভিযান : পরিবেশ উপদেষ্টা Jul 10, 2025
img
পুরো আসনের ভোটের ফল স্থগিত বা বাতিল করার ক্ষমতা ফেরত চাইল ইসি Jul 10, 2025
img
নির্বাচনের কারণে পেছাতে পারে এবারের বিপিএল Jul 10, 2025