চাঁদপুরের চরে চালু হলো ভাসমান হাসপাতাল

চাঁদপুরে মূল জনপদ থেকে বিচ্ছিন্ন নদীবেষ্টিত দূর্গম চরের মানুষের জন্য চালু হয়েছে ভ্রাম্যমাণ ভাসমান হাসপাতাল। কোনো খরচ ছাড়াই বাদশা আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজ নামের এই হাসপাতাল থেকে স্বাস্থ্যসেবা পাবেন চরের বাসন্দারা।

বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে হাইমচর উপজেলার মেঘনা নদীর পশ্চিমপাড়ে চরে হাসপাতালটি উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা সচিব মো. সাইদুর রহমান।

হাসপাতালটি পরিচালনা করছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ফ্রেন্ডশীপ।

সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা রুনা খান জানান, বাদশা আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজ ভাসমান হাসপাতালের লক্ষ্য একটাই চরের মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। এখানে প্রাথমিক চিকিৎসা, রোগ নির্ণয় থেকে শুরু করে অস্ত্রোপচার- সবকিছুই মিলছে একেবারে বিনামূল্যে।

তিনি আরও জানান, চাঁদপুরে নদীবেষ্টিত বেশ কয়েকটি যেখানে চর আছে। সেখানকার বাসিন্দাদের কাছে স্বাস্থ্যসেবা ছিল সোনার হরিণ। স্থানীয়ভাবে সরকারি কি বেসরকারি, কোনো ধরণের স্বাস্থ্যসেবাই পেতেন না তারা। তবে এসব চরবাসীর মধ্যে নতুন করে আশার আলো ছড়িয়েছে বাদশা আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজ হাসপাতাল।

হাতের নাগালে এমন স্বাস্থ্যসেবা পেয়ে দারুণ খুশি চরবাসীও।

এক রোগী বলেন, “এর আগে ঝড়বৃষ্টি মাথায় নিয়ে উত্তাল নদী পেরিয়ে জেলা শহর কিংবা রোগের ধরণ দেখে ছুটতে হতো রাজধানী পর্যন্ত। তাও যাদের আর্থিক সামর্থ্য ছিল শুধুই তারা চিকিৎসা নিতো। আমাদের ব্যয়বহুল চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব হত না।

“এখানে ভাসমান হাসপাতাল হওয়ায় খুব উপকার পেয়েছি। বিনামূল্যে চক্ষু অপারেশন করেছি। এক টাকাও লাগেনি। আমি খুব খুশি।”

রুনা খান জানান, সাত জন চিকিৎসকসহ ৩২ সদস্যের ভ্রাম্যমাণ ভাসমান হাসপাতালটিতে প্রতিদিন ১৫০-২০০ রোগী চিকিৎসা ও বিনামূল্যে ওষুধ পাচ্ছেন। হাইমচরসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৩২ লাখ মানুষের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে এই কাজ করবে এই প্রকল্প।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সাইদুর রহমান বলেন, নদীবেষ্টিত চরাঞ্চলেগুলি দুর্গম হওয়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছানো কঠিন। অবহেলিত এ মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই বাদশা আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজের নামে ভ্রাম্যমাণ ভাসমান হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. আবু জাফর, কিং আব্দুল্লাহ হিউম্যানিটিরিয়ান ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সোলায়মান আব্দুল আজিজ, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন, পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিবসহ সৌদি আরব সরকারের প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিলেন।

এসএম

Share this news on: