চীন-যুক্তরাষ্ট্র দ্বন্দ্বে রপ্তানির দুয়ার খুলছে বাংলাদেশের

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বাণিজ্যিক দ্বন্দ্বে পোশাক আমদানির বাজারে বাংলাদেশের শক্তিশালী অবস্থান তৈরি হয়েছে। গত ৭ বছর ধরে দেশটিতে প্রায় ৩৬ শতাংশ পোশাক রপ্তানি বেড়েছে। এর বিপরীতে চীন হারিয়েছে ৪০ শতাংশ বাজার। সম্প্রতি মার্কিন বাণিজ্য বিভাগভুক্ত সংস্থা অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (ওটেক্সা) পরিসংখ্যান থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
 
পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ৩৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ বেড়েছে। একই সময়ে চীন বাজার হারিয়েছে ৩৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
 
প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে ৭ হাজার ৩৪২ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। ২০১৮ সালে এ রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ৪০১ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে চীনের রপ্তানি ২০১৮ সালে ছিল ২৭ হাজার ৩৭১ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার। যা ২০২৪ সালে কমে ১৬ হাজার ৫০৭ দশমিক ৪১ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

বাজার হারানোর কাতারে আরও রয়েছে ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকো, হন্ডুরাস এবং দক্ষিণ কোরিয়া। ৭ বছরে এসব দেশ যথাক্রমে ৫ দশমিক ২ শতাংশ, ২২ দশমিক ৪ শতাংশ, ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং ২২ দশমিক ১১ শতাংশ রপ্তানি কমেছে।
 
অন্যদিকে, বাংলাদেশের সঙ্গে ভিয়েতনাম ও ভারতের প্রবৃদ্ধিও বেড়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই দুই দেশের রপ্তানি যথাক্রমে ২২ দশমিক ৬০ শতাংশ এবং ২৩ দশমিক ২৭ শতাংশ বেড়েছে। একই সঙ্গে কম্বোডিয়া ও পাকিস্তানের চমকপ্রদ উত্থানের তথ্যও দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে দেশ দুটির রপ্তানি যথাক্রমে ৫৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ ও ৫৮ দশমিক ৬২ শতাংশ বেড়েছে।

বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক এবং বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, এই তথ্য আমাদের পোশাক খাতের সক্ষমতা এবং প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানের বাস্তব প্রতিফলন। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্যিক যুদ্ধের সুযোগ কাজে লাগাতে পারায় বাংলাদেশসহ কিছু দেশ উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছে। এটি প্রমাণ করে, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের অবস্থান দিন দিন আরও সুদৃঢ় হচ্ছে।

তবে জিওপলিটিক্যাল পরিস্থিতি, ট্যারিফ যুদ্ধ এবং ক্রেতাদের বিকল্প সরবরাহকারী খোঁজার প্রবণতা বিশ্ব পোশাক বাজারে অবস্থান ধরে রাখা বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে মন্তব্য করেছেন তিনি।


এমআর/টিএ


Share this news on:

সর্বশেষ

img
ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সমালোচকদের কড়া জবাব দিলেন গিল Jul 07, 2025
img
মাস্কের আমেরিকা পার্টিকে ‘হাস্যকর’ বললেন ট্রাম্প Jul 07, 2025
img
দেশে মবের কোনো বিচার হচ্ছে না : মাসুদ কামাল Jul 07, 2025
img
ফের পাকিস্তানি তারকাদের নিয়ে কঠোর অবস্থানে ভারত Jul 07, 2025
img
৫ মাস পর জাতীয় নির্বাচন হবে ধরে নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Jul 07, 2025
img
বিশ্বে বায়ুদূষণে শীর্ষ শহর কুয়েত সিটি, ঢাকার অবস্থান ২৬তম Jul 07, 2025
img
গাজা ইসরায়েলি বিমান হামলায় প্রাণ গেল আরও ৮১ জনের Jul 07, 2025
img
দেশের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় জনগণ ঐক্যবদ্ধ : মির্জা ফখরুল Jul 07, 2025
img
দুপুরের মধ্যে দেশের ৭ জেলায় ৬০ কি.মি. বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস Jul 07, 2025
আ.লীগের নাম, তার ইতিহাস, তার অবদান ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়: রনি Jul 07, 2025
১০ মিনিটে গোটা বিশ্বের সারাদিনের সর্বশেষ আলোচিত সব খবর Jul 07, 2025
সীমান্তে দাদাদের বাহাদুরির দিন শেষ মন্তব্য নাহিদের Jul 07, 2025
img
টেক্সাসে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮২, নিখোঁজ ৪১ Jul 07, 2025
img
আজ ঢাকার যেসব এলাকায় ১১ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে Jul 07, 2025
‘সীমান্তে অনেক বাহাদুরি হয়েছে দাদাদের, সেই দিন শেষ’ Jul 07, 2025
img
‘আমরা আপনাদের নিরাশ করব না, বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে নিয়ে যেতে চাই’ সংবর্ধনায় ঋতুপর্ণা-আফঈদার প্রতিশ্রুতি Jul 07, 2025
img
নারী ফুটবলারদের সম্মানে মধ্যরাতে সংবর্ধনা দিল বাফুফে Jul 07, 2025
img
বিএনপির দুইপক্ষের অস্থিরতা, চিলমারীতে পুলিশের টহল জোরদার Jul 07, 2025
img
স্মৃতির ওজন নিয়ে রাম কাপুরের মন্তব্যে তীব্র বিতর্ক Jul 07, 2025
img
মণিরত্নমের পর এবার রণবীরের সঙ্গে! কে এই সারা অর্জুন? Jul 07, 2025