শাকিব খান অভিনীত ‘বরবাদ’ ১০০ কোটির মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলতে পারে। বাংলাদেশের কোনো সিনেমা ১০০ কোটি টাকার আয় করবে, বছরখানেক আগেও এমনটা কল্পনা করা ছিল দিবাস্বপ্নের মতো। কিন্তু ২০২৩ সালেই যেন সকল হিসাব-নিকাশ পাল্টে গেল। ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খানের ‘প্রিয়তমা’ ঈদে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতেই ঝড় তুললো।
এই সিনেমার পরিচালক ও প্রযোজকদের দাবি, ‘প্রিয়তমা’র গ্রস কালেকশন প্রায় ৪৪ কোটির ওপরে। ঢাকাই সিনেমায় যেটাকে সর্বোচ্চ আয়েরও রেকর্ড বলা যেতে পারে।
ঠিক এক বছর পরই প্রিয়তমার রেকর্ড ভেঙে দেয় শাকিব খানের আরও একটি সিনেমা। রায়হানী রাফী নির্মিত ‘তুফান’ নিয়ে এবার ঝড় তোলেন শাকিব। লন্ডভন্ড করে দেন ঢালিউডের অতীতের সকল রেকর্ড।
জানা যায়, তুফানের মোট আয় দাঁড়ায় প্রায় ৫৬ কোটি টাকা। যা প্রিয়তমার গ্রস কালেকশনের থেকেও প্রায় ১২ কোটি বেশি।
এরপরই ভক্তরা ভাবতে শুরু করেন, বলিউডের মতো এবার হয়তো ঢালিউডেও ১০০ কোটির ঘরে পা রাখতে পারে ঢাকাই কোনো সিনেমা। আর সেটা মেগাস্টার শাকিব খানের হাত ধরেই সম্ভব হতে পারে।
শাকিব অবশ্য ভক্তদের নিরাশ করলেন না। এবারের ঈদুল ফিতরে মেহেদী হাসান হৃদয় পরিচালিত ‘বরবাদ’ নিয়ে হাজির হলেন তিনি। যেই সিনেমা মুক্তির প্রথমদিনেই দর্শকমহলে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিল।
এরপর সময়ের সাথে সাথে বরবাদ দেখতে সিঙ্গেলস্ক্রিন, মাল্টিপ্লেক্সগুলোতে দর্শক হুমড়ি খেয়ে পড়ল। ‘বরবাদ’ দেখতে প্রেক্ষাগৃহে দর্শকদের এতটাই চাপ ছিল যে, শাকিব খান বলেই ফেললেন- তার পরিবারের মানুষও টিকিটের অভাবে নাকি সিনেমাটি এখনও পর্যন্ত দেখতে পারছেন না।
সিনেমা মুক্তির প্রথম সপ্তাহ শেষে বরবাদের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান রিয়েল এনার্জি প্রডাকশন জানায়, মুক্তির প্রথম সাতদিনে বরবাদের গ্রস কালেকশন ২৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। যা ছিল তুফান-প্রিয়তমাকে ছাড়িয়ে গিয়ে নতুন এক রেকর্ড।
স্বাভাবিকভাবেই এরপর প্রশ্ন আসে, বরবাদ কি তাহলে এবার তুফানকে ছাড়িয়ে একশ কোটির গণ্ডি ছুয়ে ফেলতে পারে? আপাতত শাকিবের এই সিনেমা নিয়ে তেমনটা প্রত্যাশা করলেও দিবাস্বপ্নের মতো কিছু হবে না, সেটা বলে দেওয়া যেতে পারে।
কারণ সিনেমা মুক্তির দ্বিতীয় সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও এখনও সিঙ্গেল স্ক্রিন ও মাল্টিপ্লেক্স মিলিয়ে প্রায় ১২৩টি সিনেমা হলে চলছে ‘বরবাদ’। গত দুই সপ্তাহে যেই সংখ্যাটা কমেনি। ফলে বরবাদের আয় খুব শিগগিরই ৫০ কোটি ছুঁয়ে ফেলবে।
এ বিষয়ে বরবাদের প্রযোজক শাহরিন আক্তার জানান, প্রথম ৭ দিনে সিনেমার গ্রস কালেকশন ছিল সাড়ে ২৭ কোটি টাকা। পরবর্তী ৪ দিনে ছিল ১০ কোটির বেশি। সে হিসেবে অঙ্কটা দাঁড়ায় ৩৭ কোটিরও বেশি।
তিনি আরও জানালেন, মাল্টিপ্লেক্স ও সিঙ্গেল স্ক্রিনে শো-এর সংখ্যা না কমলে এই সপ্তাহেই বরবাদের আয় ছাঁড়িয়ে যেতে পারে ৫০ কোটি টাকা।
এই প্রযোজক আশা করছেন, ঈদুল আজহা পর্যন্ত বরবাদের এই দাপট প্রেক্ষাগৃহে বজায় থাকবে। সে হিসেবে তাদের হাতে আছে এখনও প্রায় দেড় মাস। যদি আয়ের এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকে তাহলে এই সিনেমার গ্রস কালেকশন ১০০ কোটিও ছুঁয়ে ফেলতে পারে।
বরবাদ এখনও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মুক্তি পায়নি। সিনেমাটি অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে মুক্তি পাবে। এই প্রযোজক আশা করছেন, সেখান থেকেও সিনেমার আয় ১০-১৫ কোটির মতো থাকতে পারে।
সবমিলিয়ে বরবাদের আয় ১০০ কোটি ছুঁয়ে ফেললেও অবাক করার মতো কিছু হবে না, এমনটাই মনে করছেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরাও। সেক্ষেত্রে শাকিব খানের হাত ধরেই ঢালিউডে সৃষ্টি হতে পারে নতুন আরও একটি রেকর্ড।
আরআর/টিএ