বলিউডে ‘কপ ইউনিভার্স’-এর সূত্রপাত পরিচালক রোহিত শেট্টির হাত (Rohit Shetty) ধরেই। ‘সিংহম’ হয়ে বক্স অফিসে শোরগোল ফেলেছিলেন অজয় দেবগন। তারপর আসে ‘সিংহম রিটার্নস’। আবারও সুপারহিট অজয়-রোহিত জুটি। এর মধ্যেই আবার ‘সিম্বা’ হয়ে সাফল্য পান রণবীর সিং। ‘সূর্যবংশী’ সিনেমায় ক্যাটরিনা কাইফের সঙ্গে জুটি বাঁধেন অক্ষয় কুমার। চব্বিশে তারকাখচিত ‘সিংহম এগেইন’ দিয়ে বক্স অফিসে শোরগোল ফেলে দেন রোহিত। যে ছবিতে দীপিকা পাড়ুকোন, অক্ষয় কুমার, করিনা কাপুর, রণবীর সিং, টাইগার শ্রফের মতো একগুচ্ছ তারকামুখ ছিল। এবার রোহিত শেট্টির পুলিশি ব্রহ্মাণ্ডে জন আব্রাহাম। বলিউড মাধ্যম সূত্রে খবর, ‘সেলেব্রিটি’ পুলিশ কমিশনার রাকেশ মারিয়ার (Rakesh Maria) ঘটনা বহুল চর্চিত জীবনকাহিনি এবার বলিউডের পর্দায় তুলে ধরতে চলেছেন পরিচালক।
সূত্রের খবর, রাকেশ মারিয়ার বায়োপিকের জন্যই মলাট চরিত্রে জন আব্রাহামকে (John Abraham) বেছে নিয়েছেন রোহিত শেট্টি। রাকেশ মারিয়ার আত্মজীবনী ‘লেট মি সে ইট নাও’-এর অবলম্বনেই সিনেমা তৈরি করতে চলেছেন বলিউড পরিচালক। বান্দ্রার এক তরুণ কীভাবে মুম্বইয়ের ডাকাবুকো পুলিশ অফিসার হয়ে ওঠেন, সেই ঘটনাই ফুটে উঠবে এই ছবিতে। রাকেশ মারিয়ার বাবা ছিলেন বলিউডের ডাকসাইটে প্রযোজক। তবে শৈশব থেকেই সিনেমার প্রতি কোনও টান ছিল না তাঁর। বরং তাঁকে টানত খাকি উর্দি। পুলিশি পেশার গোড়ার দিকে মুম্বইয়ের ট্রাফিক সামলাতেন রাকেশ মারিয়া। তবে ‘৯৩ সালের ধারাবাহিক মুম্বই বিস্ফোরণ বদলে দেয় তাঁর জীবন।
সেই মামলার তদন্তকারী টিমে ছিলেন রাকেশ। সেই থেকেই রাতজেগে মুম্বইকে প্রায় নিজের হাতের তালুতে নিয়ে আসা তাঁরা। শোনা যায়, এই পুলিশ অফিসারই সঞ্জয় দত্তকে চুলের মুঠি ধরে চেয়ার থেকে উঠিয়ে মারধর করে অভিনেতার মুখ থেকে অপরাধের কথা কবুল করিয়ে নেন। রাকেশ মারিয়ার ম্যারাথন জেরার মুখে পড়েই বাড়িতে ‘একে ৪৭’ রাখার কথা স্বীকার করেন সঞ্জুবাবা। এরপরই রাতারাতি উপরমহলের চর্চার কারণ হয়ে দাঁড়ান এই ‘সেলেব পুলিশ’। তবে সাফল্যের সঙ্গে তাঁর কেরিয়ারে বিতর্কও ধরা দিয়েছে একাধিকবার। কখনও ক্রিকেট বেটিং চক্রে তাঁর নাম জড়িয়ে পড়ে। আবার কখনও বা মুম্বইয়ের একটি ধর্মস্থানে বিস্ফোরণের হুঁশিয়ারি জানানো হয় মারিয়ার মেল আইডি থেকে। পরবর্তীতে যদিও প্রমাণিত হয়, মারিয়ার মেল আইডি থেকে সেই কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন অন্য এক পুলিশ। ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের একটি বড়সড় মডিউলের হদিশও দেন এই পুলিশ কর্তা। সেটা ২০০৭ সাল। তার পরের বছরই ২০০৮ সালে মুম্বইয়ের ২৬/১১-র ঘটনার তদন্তভার পড়ে রাকেশের উপর। তাঁর নেতৃত্বেই আজমল কাসভ ধরা পড়ে। এমনকী শিনা বোরা মৃত্যুকাণ্ডেও তৎপরতার সঙ্গে তদন্ত চালিয়েছিলেন তিনি। সেই রাকেশ মারিয়াকে বিদেশে পলাতক ললিত মোদির সঙ্গে দেখে পরবর্তীতে অবাক হয়েছিলেন অনেকেই। এবার সেই পুলিশ অফিসারের ঘটনাবহুল জীবনের উত্থান-পতন বলিউডের পর্দায় তুলে ধরবেন রোহিত শেট্টি।
বলিউড মাধ্যম সূত্রে খবর, রোহিত বরাবরই তাঁর পুলিশি ব্রহ্মাণ্ডে সত্য ঘটনা অবলম্বনে একটি ছবি তৈরি করতে চেয়েছিলেন। আর রাকেশ মারিয়ার জীবনের গল্প থ্রিলারের থেকে কোনও অংশে কম নয়। ওঁর তদন্ত করা একাধিক হাইপ্রোফাইল মামলা গোটা দেশে চর্চার শিরোনামে ঠাঁই পেয়েছিল। সেটা মুম্বইয়ের ধারাবাহিক বিস্ফোরণ হোক বা ২৬/১১-র ঘটনা। প্রাথমিক পর্যায়ে রোহিত মারিয়ার সঙ্গে এই বিষয়ে কথাও বলেছেন। অবশেষে সেই ছবির কাজ শুরু হচ্ছে। জানা গেল, মুম্বইয়ের ৪০টি রিয়েল লোকেশনে শুট করা হবে এই সিনেমা। সেই তালিকায় মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাস, ডোংরি এবং তাজ হোটেলও রয়েছে।
এসএন