ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রীর পশ্চিম তীর সফরে বাধা দিল ইসরায়েল

ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মুস্তাফাকে পশ্চিম তীরের কয়েকটি শহর ও গ্রাম পরিদর্শনের অনুমতি দেয়নি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। এসব এলাকাকে বারবার অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে দেখা গেছে।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফিলিস্তিনের ‘বসতি ও দেয়াল প্রতিরোধ কমিশন’-এর প্রধান মুআয়্যাদ শাবান। তিনি বলেন, সফরের জন্য ইসরায়েলের সঙ্গে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সমন্বয় চাইলেও তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। ফলে প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফার রামাল্লাহর পূর্বাঞ্চলীয় বুরকা ও দেইর দিবওয়ান এবং নাবলুসের দক্ষিণে দোমা ও কুসরা সফর বাতিল হয়।

শাবান এই ঘটনাকে “বিপজ্জনক নজির” বলে মন্তব্য করেছেন। কারণ ফিলিস্তিনি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের যেকোনো ভ্রমণের জন্য ইসরায়েলের সঙ্গে নিরাপত্তা সমন্বয় বাধ্যতামূলক, যা ইচ্ছাকৃতভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে।

ফিলিস্তিনি পক্ষের দাবি, ইসরায়েল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে মূলত উগ্র বসতি স্থাপনকারীদের চাপে। প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফার সফরকে ঘিরে তারা উস্কানিমূলক প্রচারণা চালায় এবং সফর বাতিলের দাবি তোলে, যা শেষ পর্যন্ত ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ মেনে নেয়।

তুরস্কভিত্তিক বার্তা সংস্থা আনাদোলুর তথ্যমতে, ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ পশ্চিম তীরে প্রায় ৭ লাখ ৭০ হাজার ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী অবস্থান করছে। এদের অনেকে বৈধভাবে স্বীকৃত বসতিতে থাকলেও, একটি বড় অংশ বসবাস করছে অননুমোদিত আউটপোস্টে। এর মধ্যে অনেক বসতি কৃষি ও পশুপালন কেন্দ্রিক।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় চলমান সংঘাতের পর পশ্চিম তীরেও সহিংসতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফিলিস্তিনি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১৮ মাসে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনা ও বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় অন্তত ৯৫২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ৭ হাজারের বেশি।

এদিকে, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদি দখলদারিত্বকে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে এবং সব বসতি প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়। কিন্তু ইসরায়েল সেই রায় উপেক্ষা করে পশ্চিম তীরে বসতি সম্প্রসারণ ও দমন-পীড়ন অব্যাহত রেখেছে।

আরআর/এসএন   

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সরকারি অফিসে কেন ঘুষ দিয়ে কাজ করাতে হবে?: তাসনিম জারা Jul 07, 2025
img
ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সমালোচকদের কড়া জবাব দিলেন গিল Jul 07, 2025
img
মাস্কের আমেরিকা পার্টিকে ‘হাস্যকর’ বললেন ট্রাম্প Jul 07, 2025
img
দেশে মবের কোনো বিচার হচ্ছে না : মাসুদ কামাল Jul 07, 2025
img
ফের পাকিস্তানি তারকাদের নিয়ে কঠোর অবস্থানে ভারত Jul 07, 2025
img
৫ মাস পর জাতীয় নির্বাচন হবে ধরে নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Jul 07, 2025
img
বিশ্বে বায়ুদূষণে শীর্ষ শহর কুয়েত সিটি, ঢাকার অবস্থান ২৬তম Jul 07, 2025
img
গাজা ইসরায়েলি বিমান হামলায় প্রাণ গেল আরও ৮১ জনের Jul 07, 2025
img
দেশের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় জনগণ ঐক্যবদ্ধ : মির্জা ফখরুল Jul 07, 2025
img
দুপুরের মধ্যে দেশের ৭ জেলায় ৬০ কি.মি. বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস Jul 07, 2025
আ.লীগের নাম, তার ইতিহাস, তার অবদান ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়: রনি Jul 07, 2025
১০ মিনিটে গোটা বিশ্বের সারাদিনের সর্বশেষ আলোচিত সব খবর Jul 07, 2025
সীমান্তে দাদাদের বাহাদুরির দিন শেষ মন্তব্য নাহিদের Jul 07, 2025
img
টেক্সাসে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮২, নিখোঁজ ৪১ Jul 07, 2025
img
আজ ঢাকার যেসব এলাকায় ১১ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে Jul 07, 2025
‘সীমান্তে অনেক বাহাদুরি হয়েছে দাদাদের, সেই দিন শেষ’ Jul 07, 2025
img
‘আমরা আপনাদের নিরাশ করব না, বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে নিয়ে যেতে চাই’ সংবর্ধনায় ঋতুপর্ণা-আফঈদার প্রতিশ্রুতি Jul 07, 2025
img
নারী ফুটবলারদের সম্মানে মধ্যরাতে সংবর্ধনা দিল বাফুফে Jul 07, 2025
img
বিএনপির দুইপক্ষের অস্থিরতা, চিলমারীতে পুলিশের টহল জোরদার Jul 07, 2025
img
স্মৃতির ওজন নিয়ে রাম কাপুরের মন্তব্যে তীব্র বিতর্ক Jul 07, 2025