লালমনিরহাটে তিস্তা সড়ক সেতুর টোল প্লাজায় হামলা ও কর্মীদের মারধরের পর ছিনতাইয়ের অভিযোগে দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরনবী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে দুপুরে তাদের লালমনিরহাট জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতারকৃত দুজন হলেন—লালমনিরহাট সদর উপজেলার পশ্চিম গুড়িয়াদহ গ্রামের মো. আবু বক্কর সিদ্দিক (৪৮) ও মোস্তফি এলাকার হাসানুল ইসলাম (৪০)।
ওসি বলেন, তিস্তা টোল প্লাজায় মারধরের ঘটনায় মামলার এজাহারভুক্ত দুজন আসামিকে গ্রেফতারের পর শনিবার বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্তের পাশাপাশি পলাতক অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে টোল প্লাজায় হামলা, ভাঙচুর ও ক্যাশবাক্স থেকে ১৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে একটি মামলা করেন টোল আদায়ে নিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রানা কনস্ট্রাকশনের পরিচালকমণ্ডলীর সদস্য ও রংপুর জেলা যুবদলের সভাপতি মো. নাজমুল আলম। গত বুধবার রাতে টোল প্লাজায় ওই হামলার ঘটনা ঘটে। এতে টোল প্লাজার পাঁচ কর্মী আহত হন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, টোল না দেওয়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার জেরে মাহফুজার রহমান ওরফে রাজু (৪০) নামের স্থানীয় এক বিএনপি নেতার নেতৃত্বে ওই হামলা চালানো হয়। অভিযুক্ত মাহফুজার রহমানের বাড়ি সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের মোস্তফি এলাকায়। তিনি গোকুন্ডা ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
এদিকে, এই ঘটনা কেন্দ্র করে তিস্তা সড়ক সেতুর টোল প্লাজায় মারধরের মামলার প্রধান আসামি মাহফুজার রহমান পাল্টা মামলা করেছেন সদর থানায়। এতে হামলায় আহত টোল প্লাজার কর্মী সুরুজ্জামান, জুয়েল ইসলামসহ আটজনকে আসামি করা হয়েছে। গত শুক্রবার দিবাগত রাতে লালমনিরহাট সদর থানায় তিনি এই মামলাটি করেন।
মামলার এজাহারে মাহফুজার রহমান দাবি করেন, তিনি লালমনিরহাট তিস্তা পার্কের পরিচালক এবং সেখানে যাতায়াতের জন্য মোটরসাইকেল ব্যবহার করেন। তিস্তা সেতু পারাপারের প্রয়োজন না হলেও টোল প্লাজায় কর্মরত সুরুজ্জামান, জুয়েল ইসলামসহ এজাহারভুক্ত আসামিরা প্রায়ই টোল চাওয়ার অজুহাতে তার সঙ্গে অনৈতিক আচরণ করতেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, গত বুধবার সন্ধ্যায় আলু বিক্রির ১৫ লাখ ১০ হাজার ৫৫০ টাকা ব্যাগে করে তিস্তা পার্কে যাওয়ার সময় টোল প্লাজায় কর্মরত আসামিরা তার পথরোধ করেন এবং অন্যায়ভাবে টোল দাবি করেন। এ সময় তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয় এবং টাকা ভর্তি ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরনবী বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে এবং ঘটনার পেছনের কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে প্রাথমিক তদন্তে টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।
এফপি/টিএ