ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর টানা সপ্তম রাতেও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (৩০ এপ্রিল) গভীর রাতে কুপওয়ারা, উরি ও আখনূর সেক্টরে এই গোলাগুলি হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, পাকিস্তানি সেনারা হালকা অস্ত্র দিয়ে গুলি চালায় এবং ভারত তার যোগ্য জবাব দেয়। এ ঘটনায় এখনও কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনার পেছনে সাম্প্রতিক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি ভূমিকা রেখেছে। গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে একটি সন্ত্রাসী হামলার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে দুই দেশের ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশনস (ডিজিএমও) সম্প্রতি আলোচনায় বসেন। ভারতীয় পক্ষ পাকিস্তানকে বিনা উসকানিতে গুলি চালানো থেকে বিরত থাকতে কড়া সতর্কবার্তা দিয়েছে।
বর্তমান সংঘাত ২০০৩ সালের যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে হুমকির মুখে ফেলেছে। দুই দেশ ২০২১ সালে এই ৭৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে চুক্তি মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
এদিকে আন্তর্জাতিক মহল থেকেও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে আহ্বান জানিয়েছেন এবং নয়াদিল্লির সন্ত্রাসবিরোধী পদক্ষেপে ওয়াশিংটনের সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেনাবাহিনীকে প্রয়োজন অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া জানানোর ক্ষেত্রে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় সক্রিয় হয়েছেন। তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলেন। এই সময়ে তিনি ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং যেকোনো ধরনের সংঘাত এড়িয়ে চলার আহ্বান জানান। প্রয়োজনে ‘সৌহার্দপূর্ণ মধ্যস্থতা’র প্রস্তাবও দেন তিনি।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে আলাপকালে ভারতের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ এবং সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানানোর অনুরোধ করেন। একইসঙ্গে ভারতের একতরফাভাবে সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেন এবং বলেন, সিন্ধুর পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করাকে পাকিস্তান কোনোভাবেই মেনে নেবে না।
এসএম/টিএ