মানবিক করিডোরের নামে দেশকে যুদ্ধক্ষেত্র বানাবেন না: আব্বাসী

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলামের উদ্যোগে আয়োজিত মহাসমাবেশে জৈনপুরী দরবার শরীফের পীর ড. এনায়েত উল্লাহ আব্বাসী সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও সামাজিক ইস্যু নিয়ে কঠোর বক্তব্য রাখেন। তিনি বিতর্কিত নারী সংস্কার কমিশন এবং মানবিক করিডর ইস্যুকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও ইসলামি মূল্যবোধের ওপর “সরাসরি আঘাত” হিসেবে বর্ণনা করেন।

বক্তব্যে তিনি বলেন, “একদিকে বিতর্কিত নারী সংস্কার কমিশন গঠন করে আমাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে মানবিক করিডরের সিদ্ধান্ত নিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে।”

তিনি অভিযোগ করেন, “এই বিতর্কিত কমিশন আমাদের দৃষ্টি সরিয়ে রেখে বাংলাদেশের স্বাধীনতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সওদাবাজির অংশ কিনা, তা খতিয়ে দেখা উচিত।”

আলেম-ওলামাদের ঐক্য এবং হেফাজতের অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, “হেফাজত বাংলাদেশে সর্ববৃহৎ অরাজনৈতিক ইসলামি সংগঠন। সকল মাসলাকের মানুষ হেফাজতের পাশে আছে।”

ড. আব্বাসী আরও বলেন, “হেফাজত রাজনীতিতে যাবে না, কিন্তু রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ৫৩ বছরের ইতিহাস কলঙ্কিত। আলেম-ওলামা ও মাদ্রাসা ছাত্রদের রক্তে পা রেখে যারা ক্ষমতায় গেছে, তারাই পরে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এবার তাদের সেই সুযোগ আর দেওয়া হবে না।” নারী কমিশন ইস্যুতে তিনি বলেন, “শুধু প্রস্তাব বাতিল করলেই চলবে না, যারা এই প্রস্তাব করেছে, বিশেষ করে ‘নারী নামের হিজড়ারা’, তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।”

ড. ইউনূসের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “আপনাকে পরিষ্কার করতে হবে, আপনি মানবিক করিডরের নামে বাংলাদেশকে ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও ইন্দো-প্যাসিফিক সামরিক নকশার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন কিনা।”

তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “বাংলাদেশের সবুজ-লাল পতাকার দিকে কেউ চোখ তুললে সেই চোখ উপড়ে ফেলা হবে। দেশের মাটিতে কেউ আগ্রাসনের থাবা বসাতে এলে তার কালো হাত ভেঙে দেওয়া হবে।”

তিনি ব্লাস্ট ফ্যামিলি আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়ে বলেন, “মুক্ত মতপ্রকাশ ও স্বাধীনতার নামে কেউ ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড চালাতে পারবে না – তাকে আইনের আওতায় আনতেই হবে।”

বক্তব্যের শেষাংশে ড. আব্বাসী বলেন, “অসংখ্য আলেম-ওলামা এখনো জঙ্গি তকমা নিয়ে কারাগারে আছেন। যদি রাজনৈতিক নেতারা মুক্তি পায়, তাহলে আলেমদের মুক্তির আগেই দেশে কোনো নির্বাচন নয় – আগে সংস্কার, তারপরই নির্বাচন।”

এফপি/এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান কারোর ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয় : উমামা ফাতেমা Jul 03, 2025
img
বিতর্কের মাঝে দেশাত্মবোধক সিনেমায় দিলজিৎ Jul 03, 2025
img
পুরনো বন্দোবস্তের রাজনীতির নেতৃত্বে পরিবর্তন হয়েছে, বন্দোবস্ত পরিবর্তন হয়নি : নাহিদ ইসলাম Jul 03, 2025
img
চলমান সংস্কার কাজে সমর্থন অব্যাহত রাখবে যুক্তরাষ্ট্র : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা Jul 03, 2025
img
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারে জাইকার সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি Jul 03, 2025
img
আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পারভিন: ইমরান হাসমি Jul 03, 2025
img
তরুণদের সুপারহিরো না হওয়ার উপদেশ ব্র্যাড পিটের Jul 03, 2025
img
ইসরাইলের পিআর পদ্ধতি কেন আলেম, উলামা ও পীরদের আদর্শ হলো সেটা বুঝে আসে না : প্রিন্স Jul 03, 2025
img
ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু Jul 03, 2025
img
পরিচালকের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ শার্লিজের Jul 03, 2025
পঞ্চগড়ে দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রার তৃতীয় দিনে যা বললেন নাহিদ Jul 03, 2025
ইতালীয় নাগরিক হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৩ জনের যাবজ্জীবন,৪ জন খালাস Jul 03, 2025
ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় স্তব্ধ দেশের আন্তর্জাতিক পর্যটন! Jul 03, 2025
স্ত্রীর কাছ থেকে কিডনি পেয়েই পরকীয়ায় জড়ালেন স্বামী! Jul 03, 2025
উত্তরসূরি নির্বাচনের ঘোষণা দালাই লামার, বাগড়া দিলো চীন Jul 03, 2025
‘একটা সংলাপও ঠিকমতো বলতে পারো না’ ছেলেকে অমিতাভের খোঁচা Jul 03, 2025
img
সংসদে হিম্মত নিয়ে কথা বলার মতো নেতা আমাদের নেই : ফারুক হাসান Jul 03, 2025
img
ইউক্রেনের হামলায় নিহত রাশিয়ার নৌবাহিনীর উপপ্রধান Jul 03, 2025
img
‘গরুর মাংস খান রণবীর’, ভারতজুড়ে বি-র্ত-ক Jul 03, 2025
img
জায়েদ খানের সঙ্গে আসছেন অভিনেত্রী তানজিন তিশা Jul 03, 2025