ইউক্রেন যুদ্ধের পরে এবার আফ্রিকার খনিজ-সমৃদ্ধ অঞ্চল কঙ্গো ও রুয়ান্ডায় নজর দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিদ্রোহীদের হামলায় উত্তপ্ত-পূর্ব কঙ্গোতে চলমান সংঘাত নিরসনের জন্য শান্তি চুক্তি চায় ওয়াশিংটন, যার সঙ্গে যুক্ত থাকবে দুটি দেশের সঙ্গে বিশাল খনিজ সম্পদ চুক্তি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আফ্রিকা বিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা মাসাদ বুলোস বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘যেদিন আমরা শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করব, সেদিনই কঙ্গো ও রুয়ান্ডার সঙ্গে পৃথক খনিজ বিনিয়োগ চুক্তি সই হবে।’
কঙ্গো ও রুয়ান্ডার চলমান বিরোধে শান্তি আনতে চাইলেও বিশ্লেষকরা বলছেন, এর পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের বড় উদ্দেশ্য হচ্ছে আফ্রিকার খনিজ খাতে পশ্চিমা প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ বিস্তার। চুক্তির আওতায়, মার্কিন কোম্পানিগুলো এসব দেশে খনিজ উত্তোলন, পরিশোধন অবকাঠামো নির্মাণ ও রপ্তানি ব্যবস্থায় ব্যাপক বিনিয়োগ করবে।
এছাড়া, ইরান থেকে তেল আমদানিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের ঘোষণা দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘যে কোনো দেশ বা কোম্পানি যদি ইরান থেকে তেল কেনে, তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র আর কোনো ব্যবসায়িক সম্পর্ক রাখবে না।’
এই ঘোষণার পরপরই বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়ে যায়, মার্কিন অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়ে ব্যারেল প্রতি দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬০ ডলারে আর ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম বেড়ে হয়েছে প্রায় ৬৩ ডলার।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের লক্ষ্য আসলে চীন। কারণ, বর্তমানে চীন প্রতিদিন প্রায় ১০ লাখ ব্যারেল ইরানি তেল আমদানি করে। র্যাপিডান এনার্জির সিইও এবং সাবেক সিআইএ কর্মকর্তা স্কট মডেল বলেন, ‘এই বক্তব্যের মাধ্যমে ট্রাম্প জানিয়ে দিলেন, তিনি বল প্রয়োগ করেই দর কষাকষি চান।’
বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের ভূরাজনৈতিক কৌশলের ফোকাস এখন আফ্রিকার খনিজ ও মধ্যপ্রাচ্যের শক্তির উৎস। যুদ্ধ, শান্তি ও অর্থনৈতিক চুক্তির নামে শুরু হয়েছে বৈশ্বিক শক্তির নতুন প্রতিযোগিতা।
আরএম/এসএন