রোহিঙ্গা ও বিদেশিদের আমরা এনআইডির ডাটাবেজে প্রবেশ করতে দেব না, বলেছেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর।
সোমবার (৫ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
এনআইডি মহাপরিচালক বলেন, গত সপ্তাহে সিদ্ধান্ত ছিল রোহিঙ্গাদের বিষয়ে ডাটাবেজটা ইসিকে এপিআইর মাধ্যমে দেওয়া। কিন্তু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য দপ্তর মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই তথ্য আমাদের কাছে থাকবে। যেখান থেকেই হোক তথ্যটা যেন পাই। মূলত রোহিঙ্গা আর বিদেশিদের আমরা আমাদের ডাটাবেজে প্রবেশ করতে দেব না। রোহিঙ্গাদের সার্ভার কোন মন্ত্রণালয়ে যাবে, সেটার এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পাইনি। আগের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে এ সপ্তাহের মধ্যে আমরা পেয়ে যেতাম। এখন সরকারের যদি বিকল্প সিদ্ধান্ত হয়, তাহলে যেখানে থাকুক আমরা যদি রোহিঙ্গাদের আঙ্গুলের ছাপ যাচাই করতে পারি, তাহলেই হবে।
এনআইডি সংশোধনের বিষয়ে হুমায়ুন কবীর বলেন, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা পর্যায়ে এনআইডি সংশোধনের যে ক্ষমতা ছিল, সেটা জেলা অফিসারকেও দিয়েছি। মানুষের সেবা নিশ্চিত করা জন্য যৌক্তিক আবেদনগুলো কমিশন দ্রুত অনুমোদন দিচ্ছে। কমিশন ও সচিবালয়– আমরা সবাই মিলে মানুষকে দ্রুত সেবা দিতে চাই। আমাদের এনআইডি অনুবিভাগে প্রচুর আবেদন ঝুলে আছে। এগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি করতে পারি, সেজন্য দায়িত্ব বণ্টন করে দিয়েছি। ইসি সচিবালয়ের অফিসারদের মধ্যেও একটু ক্ষমতা পরিবর্তন করছি, যাতে এনআইডি সেবা সহজ হয়। আমাদের আঞ্চলিক পর্যায়ে ক্যাটাগরি করার ক্ষমতা দেওয়া আছে। আমরা মনিটরিং করছি। অনেকেই হয়ত ক্যাটাগরি ঠিক মতো করছে আবার কেউ করছে না।
তিনি আরও বলেন, ডবল এনআইডি আছে ৫০০ প্লাস। এনআইডি সংশোধন আবেদন নিয়ে আগামী সপ্তাহে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখতে পাবেন। ১৩ কোটির বেশি তথ্য একটা একটা করে খোঁজা সম্ভব নয়। কেউ যদি তথ্য দেয় আর আমরা যদি দেখতে পাই, তাহলে ব্যবস্থা নিই।
এক প্রশ্নের জবাবে এনআইডি মহাপরিচালক বলেন, প্রাথমিক যে সিদ্ধান্ত হয়েছে মিডিয়ার লোকদের এনআইডি নিয়ে সেমিনারে রাখব। যে কর্মকর্তা সহজীকরণের চিন্তাভাবনা করেন তাদের রাখবে। এর বাইরে আমরা সুধীজনকে রাখব। এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। এ মাসের মধ্যে হবে। রাজনৈতিক দলকে দরকার হবে কি না বুঝতে পারছি না। যদি মনে হয় ভালো হয় তাহলে রাখব।
ভোটার করার বিষয়ে হুমায়ুন কবীর বলেন, আমরা জাস্ট কয়েকদিন আগেই নিবন্ধনের কাজ শেষ করলাম। ওই ৫৬টা বিশেষ উপজেলায় এবং যেকোনো জায়গায় আমাদের যে টেকনিক আছে, সেগুলো অব্যাহত থাকবে। কাজেই তাদের ভোটার তালিকায় ঢুকে যাওয়া সহজ হবে না। ভোটার হতে কেউ এলে আমরা যত রকমভাবে সম্ভব চেক করে নেব।
প্রবাসীদের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রবাসী ভোটার আমরা অস্ট্রেলিয়াতে চালু করেছি। সেখানে নিয়মিত ভোটার হচ্ছে। এখন আটটি দেশে চলছে। আগামী সপ্তাহ নাগাদ কানাডাতে শুরু হবে। তখন ৯টা দেশ হবে। অন্যান্য দেশে চালু করার জন্য যে সমস্যা হচ্ছে– দূতাবাসে জায়গার অভাব। অর্থ মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মিটিং করেছি। আগামী সপ্তাহে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করব। প্রবলেম চিহ্নিত ও সমাধান করে যেন ৪০ দেশে কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। আমরা গত কয়েক মাসে সাত-আটটা দেশে করতে পারলে ভালো হতো। এ মাসের শেষ নাগাদ আরেকটু অগ্রগতি হবে বলে আশা করি। আমেরিকায় এখনো ক্লিয়ারেন্স পাইনি। পেলে কাজটা শুরু করতে পারব।
আরএ/টিএ