সমাজের সব অংশের নারীদের প্রতিনিধিত্ব ও অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত হয়নি : এনসিপি

নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তাদের অবস্থান জানিয়ে বলেছে, কমিশনের সদস্যদের মধ্যে সমাজের সব স্তরের নারীদের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়নি। পাশাপাশি, সংস্কারের কিছু প্রস্তাব নিয়ে ধর্মীয় ও সামাজিক গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

সোমবার (৫ মে) রাতে দলের যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাতের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে দলটি তাদের অবস্থান তুলে ধরেন।

বিবৃতি লেখেন, গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্যোগে মোট ১১টি সংস্কার কমিশন কাজ শুরু করে। ২০২৪ সালের ১৮ নভেম্বর গঠিত হয় ‘নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন’, যা ২০২৫ সালের ১৯ এপ্রিল প্রস্তাবনা পেশ করে।

এর পাশাপাশি সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার জন্য গঠিত হয়েছে ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’, যার আওতাভুক্ত ছয়টি সংস্কার কমিশন ইতোমধ্যে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন ঐক্যমত্য কমিশনের আওতায় ছিল না। ফলে এই বিষয়ে সকল রাজনৈতিক দলগুলো পূর্ব আলোচনা বা মতামত প্রদানের সুযোগ পায়নি। আমরা লক্ষ্য করছি যে, এই কমিশনের প্রস্তাবনাকে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে বিভিন্ন মাত্রার আলোচনা ও মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে।

‘নারী সংস্কার কমিশনের সদস্যদের মধ্যে সমাজের সব অংশের নারীদের প্রতিনিধিত্ব ও অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত হয়েছে বলে এনসিপি মনে করে না। সব সম্প্রদায়ের ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অখণ্ডতাকে (integrity) সম্মান জানিয়ে এবং সব নাগরিকের বিশ্বাস ও সামাজিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে নীতি প্রণয়ন করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। নারী কমিশনের কিছু সুপারিশ বাংলাদেশের সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের সঙ্গে রাষ্ট্রের দ্বান্দ্বিক অবস্থান তৈরি করে সমাজ বনাম রাষ্ট্র এবং ধর্ম বনাম নারী মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, যে-সব বিষয়ে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে, সেগুলোতে সব প্রতিনিধিত্বশীল অংশীজনদের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত রাখা প্রয়োজন।’

আরও লেখেন, প্রস্তাবনার সমালোচনা করতে গিয়ে বিভিন্ন সমাবেশ থেকে নারীদের প্রতি প্রকাশ্যে যে শ্লেষাত্মক ও অমর্যাদাকর বক্তব্য দেওয়া হয়েছে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় এনসিপি। বাংলাদেশের প্রতিটি সংগ্রামে তো বটেই বিশেষত জুলাই আগস্টের ছাত্র- জনতার অভ্যুত্থানে সকল শ্রেণি, পেশা, ধর্ম, বর্ণের নারীরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। নারীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ, নেতৃত্ব ও আত্মত্যাগের ফলে পনেরো বছরের জেঁকে বসা ফ্যাসিবাদ থেকে জাতির মুক্তি ঘটেছে। এই ইতিহাসকে আমরা ভুলবো না।

‘এনসিপি নারীদের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার ও সামাজিক সংগ্রামকে গভীরভাবে উপলব্ধি করে এবং নারীর মর্যাদা ও অধিকার বাস্তবায়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। জাতীয় নাগরিক পার্টি নারীদের সঙ্গে নিয়ে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঐক্যবদ্ধ।’

আরএ/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
নায়কের থেকে বেশি কাজ, তবু কম পারিশ্রমিক: প্রযোজক হয়েই প্রশ্ন তুললেন কৌশানী May 06, 2025
img
‘বিনোদিনী’ হয়ে বাজিমাত, দাদাসাহেব ফালকে ফেস্টিভ্যালে সেরা রুক্মিণী May 06, 2025
img
‘লাইক-কাণ্ডে’ কোহলির সাফাই, রাহুল বৈদ্যর খোঁচা: আমাকেও তো ব্লক করেছে! May 06, 2025
সিএনজি ও মোটরসাইকেলের জন্য খুলে গেলো এক্সপ্রেসওয়ে! May 06, 2025
img
‘এটা আমার এলাকা’ বলেই ভাঙচুর শুরু করেন কলেজ ছাত্রদল সভাপতি May 06, 2025
img
কক্সবাজারে চাঁদাবাজির অভিযোগে বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার May 06, 2025
img
সাংবাদিকদের নামে ঢালাও হত্যা মামলায় অন্তর্বর্তী সরকার বিব্রত: মাহফুজ May 06, 2025
img
কিয়েভে রাতভর রুশ ড্রোন হামলা, যুদ্ধবিরতির ডাক জেলেনস্কির May 06, 2025
img
ডিবিতে মেঝেতে রাখা হয়েছিল মাহমুদুর রহমানকে! May 06, 2025
img
মেট গালায় ফের একসঙ্গে শাহরুখ-প্রিয়াঙ্কা! পুরনো প্রেম ফিরছে কী? May 06, 2025