কুয়েটে শিক্ষক লাঞ্ছনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে আল্টিমেটাম

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার ঘটনায় জড়িতদের বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে সাত দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি। সোমবার (৫ মে) দুপুরে কুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান সমিতির নেতারা।প্রেস ব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মো. ফারুক হোসেন।

তিনি বলেন, গত ২৩ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষা উপদেষ্টা এবং ইউজিসি প্রতিনিধি দল যে পক্ষপাতিত্বমূলক ভূমিকা পালন করেছেন তাতে শিক্ষকবৃন্দ উপেক্ষিত হয়েছে। শিক্ষকবৃন্দ এতে মর্মাহত হয়েছে এবং নিন্দা জানাচ্ছে।
 
গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় শিক্ষকবৃন্দকে লাঞ্ছিত করায় জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করে আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করে শিক্ষকদের ক্লাসে ফেরার পরিবেশ তৈরি ও একাডেমিক কার্যক্রম চালু করার জোর দাবি জানাচ্ছি।

অন্যথায় শিক্ষকবৃন্দ প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবে। শিক্ষকদের সাইবার বুলিং, অবমাননা বা গুজবের সাথে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের ৫ দফার সাথে একাত্মতা পোষণ করে দ্রুততম সময়ে তা বাস্তবায়নের দাবি জানান তিনি।

ড. মো. ফারুক হোসেন বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুয়েট বিরোধী অপপ্রচারে লিপ্তদের শণাক্তপূর্বক সেগুলো বন্ধ এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এই পরিবেশ নিশ্চিত করা না হলে শিক্ষকবৃন্দ সকল প্রকার প্রশাসনিক কাজ থেকে বিরত থাকবে।এদিকে বিকেল ৩টায় শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে উপাচার্যের মাধ্যমে শিক্ষকদের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সংঘটিত হামলার ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত উপাচার্য স্যারকে জানিয়েছি। আমরা ৫ দফা দাবি উত্থাপন করেছি। দ্রুত ক্লাসে ফিরতে পারি সেই পরিবেশ সৃষ্টির বিষয়ে বলা হয়েছে। শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে লিখিত দিয়েছি। তারা ক্ষমা না করা পর্যন্ত আমরা প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবো।

এর আগে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. হযরত আলী। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শুরু হয়ে কুয়েট অডিটোরিয়ামে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলে সভা।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে সংঘর্ষের ঘটনায় ২৫ ফেব্রুয়ারি কুয়েট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে কুয়েটে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। এরপর শিক্ষার্থীদের এক দফা আন্দোলন ও আমরণ অনশনের প্রেক্ষিতে ২৫ এপ্রিল উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে অপসারণ করে সরকার। ১ মে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর আগে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৪ মে থেকে ক্লাস শুরুর কথা থাকলেও একাডেমিক কার্যক্রমে ফেরেননি শিক্ষকরা। ছাত্রদের হাতে শিক্ষক লাঞ্ছিতের বিচার না পাওয়া পর্যন্ত ক্লাসে ফিরবেন না তারা।

এমআর/টিএ


Share this news on:

সর্বশেষ

img
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তৌহিদ হোসেনের ফোনালাপ May 06, 2025
img
ইয়েমেনে হামলা চালাচ্ছে নেতানিয়াহু'র দেশ May 06, 2025
img
জামিনে মুক্তি পেয়ে ৬ বিএনপি নেতাকর্মীকে কোপালেন যুবলীগ নেতা May 06, 2025
img
নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পেলেন রাবাদা May 06, 2025
img
ঢাকার ৩৩টি খাল দখল-দূষণ মুক্ত রাখতে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ May 06, 2025
img
জামায়াত কর্মী সেজে পালাতে গিয়ে ধরা পড়লো কৃষকলীগ নেতা May 06, 2025
img
বান্দরবানে জুম ক্ষেতে মিলল খেয়াং নারীর মরদেহ May 06, 2025
সাকিব-মাহমুদউল্লাহকে ছাড়িয়ে পিএসএলে যে রেকর্ড গড়লেন রিশাদ May 05, 2025
img
সামরিক মহড়ার আগেই ডুবে গেল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জাহাজ May 05, 2025
অভিনেত্রী নাবিলার সাথে এক্সক্লুসিভ ইন্টারভিউ May 05, 2025