পহেলগামের হামলাকে কেন্দ্র করে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে শুরু হওয়া উত্তেজনা এখনো অব্যাহত রয়েছে। গত মঙ্গলবার (৬ মে) পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর থেকে দুই দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ, বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাতে জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে পাকিস্তান ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে ভারত। চলমান এই উত্তেজনার প্রেক্ষিতে সীমান্ত অঞ্চলের পাশাপাশি দিল্লিতেও জারি করা হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে ড্রোন হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। এমন দাবি করে ভারত বলছে, সামরিক ঘাঁটি ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। যার মধ্যে ছিল জম্মুর সটওয়ারি বিমানঘাঁটিও। পাকিস্তানের নিক্ষেপ করা অন্তত আটটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করেছে বলে জানায় ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী।
তবে, জম্মু কাশ্মীরে হামলা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। উল্টো অভিযোগ করেন, ভারত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের সুযোগ দিচ্ছে না।
তিনি জানান, পাকিস্তান আঘাত করলে সেটা লুকিয়ে রাখবে না। সেইসঙ্গে আরব দেশগুলো এই সংকট নিরসনে মধ্যস্থতার চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও জানান পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী। এছাড়া ভারতের নিক্ষেপ করা ২৫টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে বলে দাবি পাকিস্তানের। যদিও নয়াদিল্লি এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
এদিকে, সংঘর্ষে ভারতীয় যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার প্রমাণ পাওয়ার দাবি করেছে বিবিসি। জানানো হয়, তারা তিনটি ভিডিও যাচাই করেছে, যেখানে ফরাসি-নির্মিত রাফাল যুদ্ধবিমানের ধ্বংসাবশেষ দেখানো হয়েছে যা ভারতীয় বিমান বাহিনী ব্যবহার করে। বিবিসি ভেরিফাই জানিয়েছে, ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের বাথিন্ডা শহরের কাছে একটি মাঠের ওপর বিধ্বস্ত বিমানের ছবি পাওয়া গেছে। সেখানে সৈন্যদের বিধ্বস্ত বিমান থেকে ধ্বংসাবশেষ সংগ্রহ করতে দেখা যায়।
পরমাণু শক্তিধর দুই প্রতিবেশী দেশের সংঘাত নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও পৃথকভাবে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং সরাসরি সংলাপের আহ্বান জানান। একইঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি নয়াদিল্লি সফরে এসে জানান, সংঘাত যেন আর না বাড়ে, সেই প্রত্যাশাই তেহরানের।
দুই পক্ষের ক্রমশ এই উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যে ভারতের দিল্লিতে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। একইসঙ্গে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, দিল্লি ঐতিহাসিক যুদ্ধ স্মারক ইন্ডিয়া গেট থেকে পর্যটকদের চলে যেতে বলা হয়েছে। পুলিশ ঘোষণা দিয়ে, লোকজনকে এলাকা ছেড়ে যেতে বলেছে।
আরএ/টিএ