‘‘আমার কাছে প্রতিদিনই মাদার্স ডে। মা হওয়ার আনন্দ শুধু একদিনের উদযাপনে সীমাবদ্ধ নয়,’’— এমনটাই জানালেন প্রথমবারের মাতৃত্বের স্বাদ পাওয়া অভিনেত্রী শ্রীময়ী । মাতৃত্ব নিয়ে নিজের গভীর অনুভব শেয়ার করে তিনি বলেন, “যেদিন প্রথম গর্ভে সন্তানের অস্তিত্ব টের পেয়েছিলাম, সেদিন থেকেই এক অদ্ভুত আবেগে ডুবে গিয়েছিলাম। এই অনুভূতি প্রতিটি মায়ের মধ্যেই জন্মায়, যেটা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।”
তিনি জানান, “সন্তান জন্মের পর সেই প্রথম নাড়ির টান যখন কেটে ফেলা হয়, সেই মুহূর্তটা সত্যিই অন্যরকম। তাই মাদার্স ডে মানে আমার কাছে শুধুই একটি দিন নয়, বরং প্রতিটি মুহূর্ত, যেখানে মা-সন্তানের সম্পর্কটা হৃদয়ের গভীরে গাঁথা থাকে।”
নতুন মাকে প্রতিদিন এখনও খাইয়ে দেন তার মা। এ প্রসঙ্গে হালকা মজা করে স্বামী কাঞ্চন বলেন, “তোমার মা এখনো তোমাকেও বাচ্চা মনে করে!” শ্রীময়ী আরও বলেন, “আমি এত কম বয়সে মা হয়েছি, কাজেও ফিরেছি অল্প সময়ের মধ্যেই। এ সবই সম্ভব হয়েছে আমার মায়ের কারণে। কৃষভি আজ আমার পাশে, কারণ তার দিদা সবসময় তাকে আগলে রেখেছেন।”
নিজের সন্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “আমি চাই, কৃষভি যেন আমার সঙ্গে সবকিছু খোলামেলা আলোচনা করতে পারে। যাতে জীবনের কোনো কঠিন সময়ে কোনো তৃতীয় ব্যক্তির ওপর নির্ভর করতে না হয়।”
তিনি আরও যোগ করেন, “গৃহিণী মায়েরা যেভাবে ২৪ ঘণ্টা সংসার সামলান, তাদের জন্য তো কোনো পুরস্কার নেই। অথচ তারা অন্যের বাড়িকে নিজের করে জীবন কাটিয়ে দেন। কিন্তু সেই অবদান আমরা কতটা স্বীকৃতি দিই?”
তিনি বলেন, “সন্তানদের প্রতি আমার একটাই বার্তা— কোনো দিন যেন গর্ভধারিণী মাকে বোঝা মনে না করে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে ফেলে, আর পরদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় বড় পোস্ট দেয় মাদার্স ডে নিয়ে। মা-রা অল্পতেই খুশি হন। একটু সময় কাটান, একটা সিনেমা দেখান, খোঁজ নিন— মা তুমি কেমন আছো?”
এ প্রসঙ্গে জনপ্রিয় চলচ্চিত্র ‘আমার বস’-এর কথা টেনে তিনি বলেন, “সেদিন শিবপ্রসাদের ওই সিনেমাটি দেখতে গিয়ে মনে হলো— সম্পর্কগুলো ধরে রাখতে শিখতে হবে। সন্তানের জন্য জীবন বদলে যায়, সেই বাস্তবতা আমাদের বুঝতে হবে।”
পরিশেষে তিনি বলেন, “আমি চাই কৃষভি প্রতিবাদী হোক, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলুক। আর আমরা মা-বাবারাও যেন সন্তানদের সামনে ভালো দৃষ্টান্ত রাখতে পারি। শুধু নিজের সন্তান নয়, সমাজের সব সন্তানকে মানুষ করার চেষ্টায় থাকি।”
চোখে কনজাংটিভাইটিস হলেও মাদার্স ডে উদযাপন বন্ধ হয়নি। সিনেমা দেখতে না পারলেও মাকে ও পরিবারকে পাঠিয়ে নিজে পরে রেস্তরাঁয় যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা তার। কারণ, “এই দিনটা শুধু উৎসব নয়, অনুভবের, ভালোবাসার। আর সেটাই মা হওয়ার আসল সৌন্দর্য।”
আরএ/এসএন