ডিআর কঙ্গোতে বন্যায় প্রাণ গেল শতাধিক মানুষের

মুষলধারে বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় কঙ্গোর দক্ষিণ কিভু প্রদেশের একাধিক গ্রাম ভেসে গেছে। এতে এখন পর্যন্ত ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার ভোরের মধ্যে প্রবল বর্ষণে দক্ষিণ কিভুর কাসাবা নদী উপচে পড়ে এবং আশপাশের এলাকা তলিয়ে যায়। নদীর উজান থেকে নেমে আসা পানির তোড়ে বিশাল পাথর, গাছপালা ও কাদামাটিসহ ঘরবাড়ি ভেঙে চুরমার হয়ে যায় বলে জানান আঞ্চলিক কর্মকর্তা বার্নার্ড আকিলি।

তিনি বলেন, ‘বন্যায় প্রাণ হারানোদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ও বৃদ্ধ। আহত হয়েছেন অন্তত ২৮ জন আর ধ্বংস হয়েছে প্রায় ১৫০টি ঘরবাড়ি।’ স্থানীয় প্রশাসক স্যামি কালোনজি জানান, এ পর্যন্ত কমপক্ষে ১০৪ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ‘অত্যন্ত ভয়াবহ’।

দক্ষিণ কিভুর স্বাস্থ্যমন্ত্রী থিওফিল ওয়ালুলিকা মুজালিও জানান, টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং পর্যাপ্ত সেবা না থাকায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। তিনি জানান, ‘এখন পর্যন্ত একমাত্র উদ্ধারকারী সংস্থা হিসেবে রেড ক্রস কাজ করছে। স্থানীয় প্রশাসনের সদস্যরাও ঘটনাস্থলে উপস্থিত আছেন।’

স্থানীয় এক বাসিন্দা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, গত শনিবার পর্যন্ত প্রায় ১১৯টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর এই অঞ্চলে বিশেষ করে গ্রেট লেকস এলাকার পার্বত্য অঞ্চলগুলোতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রায়ই ঘটে।

সেখানে বন উজাড়ের কারণে ভূমি দুর্বল হয়ে পড়েছে। ২০২৩ সালে একই দক্ষিণ কিভু প্রদেশে লেক কিভুর তীরবর্তী এলাকায় বন্যায় ৪০০ জনের প্রাণহানি ঘটে। গত মাসেও রাজধানী কিনশাসায় বন্যায় মারা যান ৩৩ জন।

এদিকে পূর্বাঞ্চলে বিদ্রোহীদের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সংঘাত চলমান রয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে রুয়ান্ডা-সমর্থিত এম২৩ বিদ্রোহীরা উত্তর কিভু প্রদেশের রাজধানী গোমা দখল করলে সহিংসতা চরমে ওঠে।

সে অভিযানে প্রায় ৩ হাজার মানুষ নিহত এবং ২ হাজার ৮৮০ জন আহত হন। বর্তমানে সাত মিলিয়নেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত অবস্থায় রয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী অন্যতম বৃহৎ মানবিক সংকট হিসেবে বিবেচিত।

আরএম/এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সংস্কার জরুরি: জামায়াত Jul 04, 2025
img
আ. লীগ বিলুপ্ত হয়ে যাবে, দলটির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা অসম্ভব : রেজা কিবরিয়া Jul 04, 2025
img
জীবনের জটিল গল্প নিয়ে শানায়ার প্রথম সিনেমা Jul 04, 2025
img
পুঁজিবাজারের মাঠ প্রস্তুত, বিনিয়োগে ভালো ফলের সুযোগ রয়েছে : বিএসইসি কমিশনার Jul 04, 2025
img
পিএসসি’র সংস্কার চেয়ে শাহবাগ ‘ব্লকেড’ Jul 04, 2025
img
অনুশীলনে নেই লিটন, ফিরেছেন রিশাদ দ্বিতীয় ওয়ানডেতে Jul 04, 2025
img
শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়বেন বাণিজ্য সচিব Jul 04, 2025
img
ব্যাংকক থেকে মিষ্টি খুনসুটি শেয়ার করলেন অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলা Jul 04, 2025
img
৬২ রান করেও তামিম বললেন, নিজের সেরাটা দিতে পারিনি Jul 04, 2025
দীপিকার অর্জনে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি বৈশ্বিক স্বীকৃতি Jul 04, 2025
হোটেলে হাঁটছিলাম, কেউ আমার দিকে ঘুরেও তাকাল না: অভিষেক Jul 04, 2025
চলতে পারে বরফে, উড়তে নয়—দেশে প্রথম হোমমেড ‘এয়ার স্লেজ’! Jul 04, 2025
“জুলাই শুধু এক দলের নয়!"যে কারণে সরে গেলেন উমামা ফাতেমা! Jul 04, 2025
৫৪ বছরে বহু ও ১৭ বছরও বহু রাজনীতি দেখেছেন কিন্তু মুক্তি দিয়েছে ছাত্র জনতা Jul 04, 2025
img
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশে পরিবর্তন, তদন্ত ছাড়া আর শাস্তি নয় Jul 04, 2025
img
ব্রাজিলে ২০২৭ বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে দেখতে চান আফিদা Jul 04, 2025
img
শুটিংয়ের ফাঁকে রাজ-শুভশ্রীর লাক্সারি ট্রিপ Jul 04, 2025
img
টিভি ও সংবাদপত্রের কিছু কর্তা সরাসরি সহিংসতা উসকে দিয়েছিলেন: উপ-প্রেস সচিব Jul 04, 2025
img
সহ-অভিনেতাদের বলা হতো আমাকে এড়িয়ে চলতে: ফাতিমা সানা শেখ Jul 04, 2025
img
শুরুটা ভালো হলেও ব্যাটিং ধসে লঙ্কানদের বিপক্ষে পরাজয় বাংলাদেশের Jul 04, 2025