ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে সাথী আক্তার (১৯) নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তার স্বামী আব্দুস সালাম রতনকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার (১২ মে) দুপুরে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তাকে আটক করা হয়।
আব্দুস সালাম রতন উপজেলার পাড়িয়া ইউনিয়নের বঙ্গভিটা গ্রামের আবু হকের ছেলে। নিহত সাথী আক্তার বড়বাড়ী ইউনিয়নের বেলবাড়ী গ্রামের হাকিমুল হকের মেয়ে।
নিহতের পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই সাথীকে নিয়মিত নির্যাতন করা হতো। সাথীর মা সাহাবানু বলেন, “সকালে ওদের বাড়ি থেকে ফোন দিয়ে জানায়, সাথী অসুস্থ। হাসপাতালে এসে দেখি আমার মেয়ে মারা গেছে। আমার মেয়েকে ওর স্বামী, শ্বশুর আর শাশুড়ি মিলে হত্যা করেছে।”
সাথীর বাবা হাকিমুল হক জানান, দেড় বছর আগে প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে সাথীর বিয়ে হয় আব্দুস সালামের সঙ্গে। পরে জানা যায়, সালাম মাদকাসক্ত। প্রায়ই সাথীকে মারধর করত। তিন মাস আগে গলায় চেপে ধরায় সাথী নানির বাড়ি চলে আসে। পরে ক্ষমা চেয়ে তাকে আবার শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। “আজ হাসপাতালে এসে দেখি আমার মেয়ে আর নেই। গলায় ছিল অসংখ্য দাগ,” বলেন তিনি।
সাথীর নানি নূরজাহান বলেন, “রাতের বেলা মাদক সেবন করে ওর গলা চেপে ধরত সালাম। এটা আমাকে একাধিকবার বলেছে সাথী। ভাবিনি এমন মৃত্যু হবে।”
স্থানীয়রা জানান, বিয়ের পর যৌতুক না দেওয়ায় শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে কলহ চলছিল। গৃহবধূর বাবা মাদক ছাড়ার শর্তে আর্থিক সহায়তা দিতে চাইলেও পরিস্থিতি বদলায়নি। ঘটনার দিন দুপুরে ইজিবাইকে করে সাথীকে হাসপাতালে নেয় স্বামীসহ পরিবারের সদস্যরা। স্থানীয়রা দাবি করেন, হাসপাতালে নেওয়ার সময় স্বামী ও শ্বশুরকে বলতে শোনা যায়, “গলায় ফাঁস দিয়েছিল।”
এদিকে ঘটনার পর থেকেই শ্বশুর, শাশুড়িসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন।
বালিয়াডাঙ্গী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রতন কুমার বলেন, “স্বামী আব্দুস সালামকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এসএস/টিএ