পশ্চিম তীরে বিদেশি কূটনীতিকদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলের গুলি

ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে বিদেশি কূটনীতিকদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আরব ও এশীয় দেশগুলোর ওই কূটনীতিকরা জেনিন শরণার্থী শিবিরে মানবিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে গেলে ইসরায়েলি সেনাদের গুলির মুখে পড়েন।

এ ঘটনায় কেউ আহত না হলেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া। বুধবার (২১ মে) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও একাধিক দেশ নিশ্চিত করেছে, এই ঘটনা বুধবার ঘটেছে যখন কূটনীতিকদের একটি দল জেনিনে ইসরায়েলি বাহিনীর টানা চার মাসের সামরিক অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখছিলেন। অভিযানে বহু মানুষ নিহত ও বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, কূটনীতিকরা পূর্বনির্ধারিত রুট থেকে সরে গিয়ে একটি ‘নিষিদ্ধ এলাকায়’ প্রবেশ করেছিলেন, যার জেরেই তাদের সতর্ক করতে গুলি চালানো হয়। তবে, তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, এটি ‘সতর্কতামূলক গুলি’ ছিল এবং কেউ আহত হয়নি।

পশ্চিম তীরের জন্য নিযুক্ত ইসরায়েলি সামরিক প্রশাসনের প্রধান জানিয়েছেন, তারা ঘটনাটি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলবেন এবং ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত সম্পর্কে কূটনীতিকদের অবহিত করবেন।

আল জাজিরার সাংবাদিক হামদাহ সালহুত বলেন: “এই ঘটনা দেখায়—পশ্চিম তীরে বাস্তব অবস্থা কতটা ভয়াবহ। সেখানে কেউই নিরাপদ নয়, এমনকি কূটনীতিকরাও নয়।”

তিনি আরও বলেন, “উত্তর পশ্চিম তীরের জেনিন, তুলকারেমসহ আশপাশের এলাকাগুলো সম্পূর্ণ ঘেরাও করে সামরিক অভিযান চালানো হচ্ছে, যাতে দশ-হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।”

এদিকে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, কূটনীতিকরা যখন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখনই আকস্মিকভাবে গুলির শব্দ শোনা যায় এবং সবাই আতঙ্কে আশ্রয় নিতে ছুটে যান।

আল জাজিরার ফ্যাক্টচেক ইউনিট “সানাদ” যাচাই করে নিশ্চিত করেছে ঘটনাস্থলের পাশে দু’জন ইসরায়েলি সেনা দাঁড়িয়ে ছিলেন এবং তাদের অস্ত্র কূটনীতিকদের দিকে তাক করা ছিল।

প্রায় ২০ জন কূটনীতিক তখন জেনিনের পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফিং করছিলেন বলে এপিকে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ত্রাণকর্মী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গুলির উৎস নিশ্চিত হওয়া যায়নি, তবে কেউ আহত হননি।

ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে “ভয়াবহ অপরাধ” বলে অভিহিত করেছে এবং বলেছে, “ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে এমন একটি কূটনৈতিক দলের ওপর সরাসরি গুলি চালিয়েছে যারা অনুমোদন পেয়েই সেখানে গিয়েছিলেন।”

টিকে/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
১ মাসে যতজনের সঙ্গে কথা বলেছি, সবাই বলেছে-জামায়াতকে ভোট দেবে : মুনতাসির Nov 20, 2025
img
আওয়ামী লীগের কোনো নেতা স্বতন্ত্র হলেও নির্বাচনে আসতে দেওয়া হবে না : রাশেদ খান Nov 20, 2025
img
তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন প্রক্রিয়া পরবর্তী সংসদে নির্ধারণ : অ্যাটর্নি জেনারেল Nov 20, 2025
img
‘আজ জন্মদিন তোমার’ গাওয়ার কথা ছিল হাসানের Nov 20, 2025
img
রেকর্ড গড়ে দশমবারের মতো বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর শপথ নিলেন নীতিশ কুমার Nov 20, 2025
img
মহাসড়ক অবরোধ করে রাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, যান চলাচল বন্ধ Nov 20, 2025
img
সৌদি যুবরাজের অনুরোধে এবার সুদানের সংঘাত থামাতে কাজ করবেন ট্রাম্প Nov 20, 2025
img
দীর্ঘ ১৩ বছর পর সিরিয়ায় রাষ্ট্রদূত পাঠালো তুরস্ক Nov 20, 2025
img
শনিবার ঢাকায় আসছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী Nov 20, 2025
img
তারেক রহমানকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে মামলার আবেদন খারিজ Nov 20, 2025
img
সরকার নিরপেক্ষতার পরীক্ষায় পাশ করতে পারেনি : সাইফুল হক Nov 20, 2025
img
মুশফিক ও লিটনের জোড়া সেঞ্চুরি, নাম লেখালো ইতিহাসের পাতায় Nov 20, 2025
img
মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন অধ্যাদেশের গেজেট প্রকাশ Nov 20, 2025
img

আমীর খসরু

তত্ত্বাবধায়ক সরকার আগামী নির্বাচনগুলোকে সুসংহত ও গ্রহণযোগ্য করবে Nov 20, 2025
img
শেখ হাসিনার রায় ঘিরে ৩ বিচারক ও প্রসিকিউটরদের হত্যার হুমকি, গ্রেফতার ১ Nov 20, 2025
img
সাগরে লঘুচাপের আভাস, কমবে তাপমাত্রা Nov 20, 2025
img
চতুর্দশ সংসদ নির্বাচন থেকে তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা কার্যকর হবে : শিশির মনির Nov 20, 2025
img
ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সতর্ক থাকার আহ্বান ডিএমপি কমিশনারের Nov 20, 2025
img
রাজসাক্ষী আবজালুলের জেরা ঘিরে ট্রাইব্যুনালে হট্টগোল Nov 20, 2025
img
এই রায়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ প্রশস্ত হবে : বদিউল আলম মজুমদার Nov 20, 2025