রোহিঙ্গা-এফডিএমএন-আরসি সংগঠনের উদ্যোগে ‘দূরদর্শী পরিবর্তন অভিযান’ শীর্ষক ব্যানারে একটি সমাবেশ আয়োজন করে রোহিঙ্গারা, যাতে তারা বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনের জন্য ঐক্যবদ্ধ অবস্থানের আহ্বান জানায়।
গত শুক্রবার (২৩ মে) জুমার নামাজের পর উখিয়ার ৭ নম্বর ক্যাম্পের ‘নৌকার মাঠ’ মসজিদে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সংগঠনের নেতারা—মো. সৈয়দুল্লাহ, মাস্টার কামাল ও মাস্টার ফোরকানসহ আরও কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতা নেতৃত্ব দেন।
উপস্থিত রোহিঙ্গা নেতারা বলেন,আমরা রোহিঙ্গারা আরাকানে বছরের পর বছর নির্যাতিত হয়ে দেশ ছেড়েছি। এখন আমরা সংগঠিত হয়ে নিজ দেশে ফেরত যেতে চাই।
আমরা অধিকার চাই, এক হয়ে কাজ করতে প্রস্তুত, আমরা মায়ানমার যেতে প্রস্তুত। সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতার পাশাপাশি বিশ্ব দরবারের সহযোগিতা কামনা করছি।
এ সভায় রো-এফডিএমএন-আরসি সংগঠনের সদস্য সৈয়দুল্লাহ নামক আরেক রোহিঙ্গা বলেন, ধর্মীয় ও জাতিগত কারণে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর আজকের এই অবস্থা। আমরা বিশ্বকে বলতে চাই, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী অন্য কোনো জাতির জন্য হুমকি নয়।
রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত এবং ঐকমত্যের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে। তাই রোহিঙ্গা সংকটকে বিশ্ব-দরবারে রিপ্রেজেন্ট করার জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে কালেকটিভ লিডারশিপ গড়ে তোলার জোড়াল আহ্বান জানাচ্ছি।
পাশাপাশি রোহিঙ্গা ভাই-বোনদের ভিন্ন মতাদর্শকে এক করে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া অগ্রগামী করতে রো-এফডিএমএন-আরসি পুনরুজ্জীবিত হয়ে আবারো ক্যাম্পে কাজ করা শুরু করতে তাগিদ দেন এই নেতা।
মুসা নামে আরেক রোহিঙ্গা বলেছেন, দূরদর্শী পরিবর্তন অভিযান হলো একটি সংগ্রামী সংগঠন।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে ঐকমত্য তৈরি করতে ক্যাম্পে এ সংগঠন বিচরণ করে যাচ্ছে। নিজ দেশে ফিরে যেতে রোহিঙ্গাদের একটি ছক বা নিদর্শন এটি।
এই অভিযানের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের মধ্য থেকে রোহিঙ্গা রিপ্রেজেন্টেটিভ/লিডারশিপ গড়ে তোলার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে সংগঠনের নেতারা। এই সংগঠন সুসংগঠিত করে রোহিঙ্গা সংকটকে বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে এই প্রত্যাশা।
এ সংগঠনের আরেক নেতা বলেছেন, ৩৩টি রোহিঙ্গা ক্যাম্প হতে প্রতিটি ব্লকের ৩ জন করে প্রতিনিধি নিয়ে কমিটি গড়ে তোলা হবে এই সংগঠনে।
যারা রো-এফডিএমএন-আরসির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রোগ্রাম আয়োজনে সহায়তা করবে তাদেরকে নেতা বানানো হবে এবং সংগঠনে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
রোহিঙ্গাদের এই সংকট নিরসনে রোহিঙ্গাদেরই প্রথমে এগিয়ে আসতে হবে। তাই সকল রোহিঙ্গাদের নিয়ে এ সংগঠনের কার্যক্রম শুরু করেছি।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বে থাকা ১৪-এপিবিএন পুলিশের অধিনায়ক সিরাজ আমীন বলেছেন, সিআইসির কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই তারা এই সমাবেশ করেছেন।
আরএ/এসএন