প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ করা, না করা নিয়ে দেশে যে সংশয়-অস্থিরতা বিরাজ করছে তা কেটে যাবে। পুরাটাই দূর হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস আমাদের বলেছেন, তিনি যেনতেন নির্বাচন নয়, অর্থবহ স্বচ্ছ-নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন দিতে চান।
বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে শনিবার (২৪ মে) রাতে বৈঠক করার পর গণমাধ্যমকে এ কথা বলেন তিনি।
জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, সংস্কারের পরে সবাই নির্বাচন চায়, আমরাও সংস্কারের পরে নির্বাচন চাই।
বিএনপি এর আগে বলেছে, তারা ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী লীগের বিচার করবে এবং সংস্কার সম্পন্ন করবে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপি কখনো কখনো এ কথা বললেও তারা কিন্তু এখনো বারবার বলছেন, তারা সংস্কারে বিরোধী নন। তবে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ তারা চান। সেটা তো আমরাও চাই। কিন্তু আমরা কোনো সময় বেঁধে দিইনি। আমরা সুবিধাজনক দুইটা সময় আপনাদের মাধ্যমে জাতিকে জানিয়েছি। সংস্কার যদি শেষ হয়ে যায় তাহলে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। আর যদি এর ভেতরে সংস্কার শেষ না হয়, আরেকটু সময় লাগে তাহলে রোজার পরপরই হতে হবে। তারপর যদি এটাকে টেনে লম্বা করা হয় তাহলে সময় লাগবে। আবহাওয়া এটা পারমিট করবে না, তখন কোনো সুষ্ঠু নির্বাচনও সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তিনি (ইউনূস) গভীর মনোযোগ সহকারে আমাদের এই দুটি দাবির বিষয়ে শুনেছেন। আমাদের আস্থা হয়েছে, তিনি বিষয়টাকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছেন।
সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা বা সংশয় জামায়াতে রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা যখন ওইরকম প্রয়োজন বোধ করবো আপনাদেরকে জানাবো।
আজকে প্রধান উপদেষ্টা আপনাদেরকে ডেকেছেন, আপনারা নিজেরা আসেন নাই। প্রধান উপদেষ্টা আপনাদেরকে ডেকে আপনাদের কাছে কী বিষয়ে জানতে চেয়েছেন? বিএনপি বা আপনারা নিজেদের কথা বলেছেন, কিন্তু সরকার বা প্রধান উপদেষ্টা ডেকে কী বলতে চাইলেন?
জানতে চাইলে জামায়াতে ইসলামী আমির বলেন, এটা আমাদের বা বিএনপির মতো ব্যাপার না। একটু পার্থক্য আছে। আমরা কিন্তু নিজেই আগে চেয়েছি। আমাদের চাওয়ার প্রেক্ষিতেই সময়টা ফিক্সডআপ হয়েছে, সেটা আপনারা গণমাধ্যমে জানতে পেরেছেন। উনার দাওয়াত আমরা পেয়েছি, এটা অস্বীকার করব না। কিন্তু এর আগে আমরাই চেয়েছি এবং আমাদের চাওয়া প্রেক্ষিতেই কিন্তু আজকের সন্ধ্যা ছয়টায় সময় নির্ধারণ হয়েছিল সাক্ষাতের। আমাদের অন্য একটি দলীয় কর্মসূচি থাকার কারণে সময়টা দুই ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়া হোক এরকম অনুরোধ আমরা জানিয়েছিলাম। আমাদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সময় পিছিয়ে দিয়ে রাত আটটা করা হয়।
ড. ইউনুস ডেকে আপনাদের কী ম্যাসেজ দিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি আমাদেরকে ডেকে বলেছেন, দেশ আমাদের সবার। আমি অর্থবহ স্বচ্ছ-নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন দিতে চাই। আমি যেনতেন কোনো নির্বাচন দিতে চাই না।
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, তিনি আমাদের কথা মনোযোগ সহকারে শুনেছেন এবং তিনি বলেছেন, আপনাদের পরামর্শগুলো আমি প্রয়োজন মনে করি। অবশ্যই আপনাদের কথাগুলোকে আমি বিবেচনায় নেবো এবং অন্যদের কথাও আমি শুনবো। আগামীকাল তিনি আরও অনেক দলকে দাওয়াত দিচ্ছেন এবং তাদের কথাও তিনি শুনবেন। সবার কথা শোনার পর তিনি নিজের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে একটা ম্যাচিউরড করবেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
আরআর