ইনস্টাগ্রামে ভুয়া অনুসারীদের (ফেক ফলোয়ার) মাধ্যমে বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইউরো আয় করেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪১ কোটি টাকার বেশি। রিয়াল মাদ্রিদের আরেক খেলোয়াড় ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের এই পদ্ধতিতে বছরে আয় প্রায় ১২ লাখ ইউরো।
শুধু এ দুজনই নন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া অনুসারীদের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি আয় করা শীর্ষ ১০ লা লিগা খেলোয়াড়ের ৬ জনই রিয়াল মাদ্রিদের। বার্সেলোনার আছেন তিনজন। আতলেতিকোর একজন। ক্রীড়াবিষয়ক প্লাটফর্ম অডসপিডিয়ার এক বিশ্লেষণে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
অডসপিডিয়ার বিশ্লেষণ থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মুন্দো দেপোর্তিবো। বার্সেলোনাভিত্তিক ক্রীড়া সংবাদমাধ্যমটি লিখেছে, বর্তমানে লা লিগায় খেলছেন, এমন কোন ফুটবলাররা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সবচেয়ে বেশি প্রভাবশালী ও উপার্জনকারী—তা বোঝার চেষ্টা হয়েছে বিশ্লেষণে।
এতে দেখা হয়েছে ইনস্টাগ্রাম থেকে কার আয়ের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি, কার অনুসারীদের মধ্যে কতজন ভুয়া (ফেক) এবং এই ভুয়া অনুসারীদের মাধ্যমে তাঁরা কতটা আয় করতে পারতেন বা পারছেন।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া অনুসারীদের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি অর্থ আয় করা শীর্ষ ১০ খেলোয়াড়ের তালিকায় এমবাপ্পের নাম শীর্ষে। ২৫ বছর বয়সী এই ফরাসি ফরোয়ার্ড যদি প্রতিটি ম্যাচে একটি করে পোস্ট দেন, তাহলে প্রতি মৌসুমে আনুমানিক ২৮,৩২,২৫১ ইউরো আয় করতে পারেন।
বর্তমানে এমবাপ্পের ইনস্টাগ্রাম অনুসারী ১২ কোটি ৪০ লাখের বেশি। এই বিশালসংখ্যক অনুসারীর মধ্যে ২ কোটি ৬০ লাখই ভুয়া, যা মোট অনুসারীর ২১ দশমিক ২৩ শতাংশ। শুধু এই ভুয়া অনুসারীদের মাধ্যমেই প্রতি পোস্টে প্রায় ৭৫ হাজার ইউরো আয়ের সম্ভাবনা রাখেন এমবাপ্পে। যা সব মিলিয়ে বছরে ৩০ লাখ ইউরোর কাছাকাছি পৌঁছে যায় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। ইনস্টাগ্রাম থেকে এমবাপ্পের বার্ষিক আয় ৪৮ কোটি ৪০ লাখ ইউরো।
এমবাপ্পের পরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয় ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের। ব্রাজিলের এই ফরোয়ার্ডের ইনস্টাগ্রাম অনুসারী ৫ কোটি ৩০ লাখ। যার মধ্যে ২০ দশমিক ৭১ শতাংশ বা ১ কোটি ১১ লাখ ভুয়া। এই ভুয়া অ্যাকাউন্টগুলোর মাধ্যমে বছরে ভিনিসিয়ুস আয় করতে পারেন ১১ লাখ ৮২ হাজার ইউরোর বেশি। তৃতীয় স্থানেও রিয়াল মাদ্রিদের একজন—জুড বেলিংহাম। ইংল্যান্ডের এই মিডফিল্ডারের বছরে আয় ১০ লাখ ইউরোর কিছুটা কম।
বার্সেলোনার ‘নতুন মেসি’ লামিনে ইয়ামালের আয়ও কম নয়। ১৮ বছর বয়সী এই তারকার ইনস্টাগ্রাম অনুসারী ৩ কোটি ২৯ লাখ। যার মধ্যে ৭৯ লাখ বা ২৫ দশমিক ৭২ শতাংশই ভুয়া। প্রতি ম্যাচের পর একটি করে পোস্ট দিলে ইয়ামালের আয় দাঁড়ায় সাড়ে আট লাখ ইউরোর বেশি। তালিকায় এর পরের তিনটি জায়গায় আছেন যথাক্রমে রদ্রিগো, ফেদেরিকো ভালভের্দে ও এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা।
ভুয়া অনুসারী কী, কেন
ভুয়া অনুসারী বলতে সাধারণত তিন ধরনের অ্যাকাউন্ট বোঝানো হয়। বট বা স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি, বাস্তব মানুষের অ্যাকাউন্ট কিন্তু নিসষ্ক্রিয় এবং ক্রয় করা অ্যাকাউন্ট। বিভিন্ন বিশেষায়িত টুলস ও অ্যালগারিদমের মাধ্যমে (পেইড ভারসন) ভুয়া অনুসারী চিহ্নিত করা যায়।
তারকাদের ক্ষেত্রে অনুসারীর অভাব হয় না বলে ভুয়া অনুসারী বৃদ্ধিতে তাঁদের ভূমিকা থাকার কথা নয়। তবে ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়ানোর জন্য কারও কারও প্রচারণা দল বা ব্যবস্থাপক কৃত্রিমভাবে অনুসারী বাড়ানোর কাজ করে থাকতে পারেন।
এফপি/এসএন