সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ছাত্রলীগ নেতা শাকিল আলম বুলবুলকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে আদালত অবমাননার অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি (নোটিশ) প্রকাশ করা হয়েছে।
আগামী ৩ জুন সকাল ১০টায় অভিযুক্তদের ট্রাইব্যুনালে সশরীরে হাজির হয়ে অভিযোগের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর নির্দেশক্রমে রোববার ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) এ এস এম রুহুল ইমরান স্বাক্ষরিত নোটিশটি আজ ২৬ মে যুগান্তর ও নিউ এজ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ১৯৭৩-এর ১১(৪) ধারা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ কার্যপ্রণালী বিধিমালা-২০১০-এর ৪৫ বিধি অনুসারে অভিযুক্তদের ট্রাইব্যুনালে উপস্থিতির এই নোটিশে বলা হয়েছে, ‘অভিযুক্ত শেখ হাসিনা ও শাকিল আকন্দ বুলবুল ওরফে মো. শাকিল আলমের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি-১) চিফ প্রসিকিউটর আদালত অবমাননার অভিযোগ আনেন এবং অভিযোগের জবাব দাখিলের জন্য তাদের বরাবর নোটিশ প্রেরিত হয়।
যেহেতু নোটিশ সত্ত্বেও তারা ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হননি এবং কোনো জবাব দাখিল করেননি, সেহেতু আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকতর সুযোগ প্রদানের লক্ষ্যে তাদের পুনরায় নোটিশ প্রদান করা যাচ্ছে। আগামী ৩ জুন সকাল ১০টায় ট্রাইব্যুনালে সশরীরে উপস্থিত হয়ে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের জবাব বা বক্তব্য দাখিল করবেন। অন্যথায় উক্ত ধার্য তারিখ অথবা পরবর্তী যেকোনো তারিখ তাদের অনুপস্থিতিতে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারকার্য সম্পন্ন হবে।'
আদালত অবমাননার অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে শেখ হাসিনা ও ছাত্রলীগ নেতা শাকিল আলম বুলবুলকে হাজির হওয়ার জন্য বহুল প্রচারিত দুটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে রবিবার নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
প্রসিকিউশনের আবেদনে বিচারপতি মো. গোলাম মূর্তজা মজুমদারের নেতৃৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই আদেশ দেন। সেই সঙ্গে আগামী ৩ জুন এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
‘আমার বিরুদ্ধে ২২৭টি মামলা হয়েছে, তাই ২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি,’ বলে ‘শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের’ একটি অডিও ভাইরাল হয়।
পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ওই কথোপকথনের ফরেনসিক পরীক্ষা করে সেটি হাসিনার বলে সত্যতা পায়। পরবর্তী সময়ে এই বক্তব্যের বিষয়ে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয় ট্রাইব্যুনালে।
প্রসিকিউশনের করা সে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. গোলাম মূর্তজা মজুমদারের নেতৃৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল অভিযোগটি গ্রহণ করে ১৫ মে’র মধ্যে তাদের জবাব দাখিলের নির্দেশ দেন। কিন্তু ১৫ মে জবাব দাখিল না করায় তাদের ২৫ মে ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।
তবে ২৫ মে তারা হাজির না থাকায় প্রসিকিউশনের আবেদনে শেখ হাসিনাসহ দুজনকে আদালত অবমাননার অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে হাজির হওয়ার জন্য বহুল প্রচারিত দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আরআর/এসএন