বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে সমুদ্র যখন উত্তাল, চারদিকে ঝড়-বৃষ্টির রুদ্ররূপ, তখনও কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে চলছে উৎসবের আমেজ। প্রকৃতির সতর্কবার্তা যেন উপেক্ষার পাত্র হয়ে উঠেছে পর্যটকের কাছে। ঢেউয়ের তালে তালে গা ভাসিয়ে দিচ্ছেন তারা। এ অবস্থায় পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সৈকতে মাইকিং করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ ও মহিপুর থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল থেকে নিম্নচাপের মধ্যেই সৈকতে ছিল পর্যটকদের উপস্থিতি। মাইকিং করে ট্যুরিস্ট পুলিশ একাধিকবার অনুরোধ জানালেও অধিকাংশ পর্যটকই তাতে কর্ণপাত করছেন না। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবর্তা আর পুলিশের আহ্বান যেন বাতাসে উড়িয়ে দিচ্ছেন তারা।
ফরিদপুর থেকে কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা পর্যটক সুমনা দত্ত তার পরিবারের একাধিক সদস্যদের নিয়ে জোয়ার চলাকালীন সৈকতে নামার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়, কিন্তু কিছুক্ষণ পরে একটু অন্যদিকে গিয়ে আবারও সমুদ্রে নামার চেষ্টা করেন। এরপর পুলিশ বার বার মাইকিং করে উঠিয়ে নিয়ে আসে।
ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা পর্যটক ইলিয়াস রহমান বলেন, কুয়াকাটায় মানুষ বেড়াতে আসে উত্তাল সমুদ্র দেখতে, কিন্তু পুলিশ আমাদের সমুদ্রে নামতে দিচ্ছে না। যদিও তারা আমাদের নিরাপত্তাজনিত কারণেই নামতে দিচ্ছে না, কিন্তু আমরা তরুণ প্রজন্ম আমাদের কিছু হবে না। আমরা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে একটু দূরে গিয়ে নামবো বলেই তারা সমুদ্রের দিকে চলে যায়।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিওনের পরিদর্শক সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সাগরের প্রতি ভালোবাসা অবশ্যই প্রশংসনীয়, কিন্তু জীবনের চেয়ে বড় কিছু নয়। তাই কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি। জোয়ারের পানির তিব্রতা অতিরিক্ত থাকায় আমরা পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে দিচ্ছি না।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অফিসের সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গপসাগর এবং তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে আরও ঘনীভূত হতে পারে। এর প্রভাবে আগামী ৪৮ ঘণ্টা খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট, ঢাকা, ময়মনসিংহ, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের অনেক যায়গায় ভারী ও অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
এসএন