মহামারির পর বলিউডে তারকাদের জনপ্রিয়তা আর আগের মতো নেই, বদলে গেছে তারকাখ্যাতির সংজ্ঞা। এখন আর শুধু নাম নয়, গল্প, কৌশল আর সাহসিকতাই ঠিক করে কে এগিয়ে থাকবে। এই নতুন নিয়মে এগিয়ে যাচ্ছেন শাহরুখ খান, হৃত্বিক রোশন ও রণবীর কাপুর। অন্যদিকে সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে হিমশিম খাচ্ছেন আমির খান ও সালমান খান।
শাহরুখ খান পরপর তিনটি ব্লকবাস্টার ছবির মাধ্যমে নিজের রাজত্বে ফিরেছেন। পাঠান, জওয়ান আর ডাংকি প্রমাণ করেছে যে তিনি এখনো একই সঙ্গে সাধারণ দর্শক ও বুদ্ধিজীবী মহলে জনপ্রিয়। সামনে আরও বড় চমক আনছেন তিনি, যেখানে থাকছে সুহানাকে নিয়ে ডার্ক অ্যাকশন থ্রিলার 'কিং' এবং বহুল প্রত্যাশিত 'পাঠান ২'।
হৃত্বিক রোশন কিছুটা মিশ্র সাফল্য পেলেও ওয়ার টু ও কৃষ ফোরের মতো বড় বাজির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কেজিএফ নির্মাতাদের সঙ্গে নতুন প্রজেক্ট এবং অয়ন মুখার্জির সঙ্গে কাজের মাধ্যমে তিনি নতুন করে নিজের অবস্থান তৈরি করছেন।
রণবীর কাপুর 'অ্যানিমাল' ছবির মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন যে তিনি শুধু অভিনয় নয়, ভরসাযোগ্য বাণিজ্যিক তারকাও। তার হাতে এখন রামায়ণ, অ্যানিমাল পার্ক এবং সম্ভবত ধুম ফোর—যা তাকে বলিউডের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অভিনেতাদের একজন করে তুলেছে।
অন্যদিকে আমির খান এবং সালমান খান এখন নতুন চাপে। একসময় যাঁরা মানেই ছিল উন্মাদনা, আজ তাঁদের দরকার নিজের ক্যারিয়ারকে নতুনভাবে ভাবা। আমিরের আসন্ন ছবি 'সিতারে জমিন পার' ঘিরে তেমন আলোড়ন নেই, কারণ দর্শক এখন শুধু বার্তা নয়, বিনোদনও চান। আর সালমান খানের 'সিকান্দার' নিয়ে যতই আলোচনা হোক, বাস্তবে তার সাফল্য নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। টাইগার থ্রিও পাঠানের মতো ছাপ ফেলতে পারেনি।
এই পরিস্থিতিতে স্পষ্ট হয়ে গেছে, এখন আর শুধু জনপ্রিয়তা দিয়ে চলবে না। দরকার নতুন চিন্তা, সাহসী পরিচালক এবং গল্পভিত্তিক চরিত্র। শাহরুখ যেভাবে নিজের পরবর্তী ছবির হাইপ ধাপে ধাপে তৈরি করছেন, আমির ও সালমানকেও তেমন পরিকল্পনা নিতে হবে।
সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে গেলে স্টারদেরও নিজেদের ভেঙে নতুনভাবে গড়তে হবে। এখন আর “ভক্তির যুগ” নেই, এখন বুদ্ধিমত্তা আর বিনোদনের যুগ। সম্মান তাঁদের এখনও আছে, কিন্তু সেই সম্মান ধরে রাখতে হলে দরকার ভিশন, আর এমন পরিচালকদের সাহচর্য যারা চ্যালেঞ্জ দিতে পারেন, চাটুকারিতা নয়। বলিউডের সিংহাসন এখনও তাঁদের নাগালে, কিন্তু সময় হারানোর সুযোগ নেই।
এমআর/টিএ