পরকীয়ার জেরে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় তিন সন্তানের জননী স্ত্রীকে হত্যার দায়ে সফিকুল ইসলাম সফি (৪৬) নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২ জুন) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২ আদালতের বিচারক কামরুজ্জামান এ আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত সফিকুল ইসলাম জেলার বোদা উপজেলার কাজলদিঘী তরঙ্গীপাড়া এলাকার হামেদ আলীর ছেলে।
এদিকে এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা প্রমাণিত না হওয়ায় অপর ১০ আসামীকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বিয়ের পর সফিকুল ইসলাম প্রতিবেশী এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এতে শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। বিষয়টি নিয়ে একাধিক শালিস হলেও মমতাজের ওপর চলতে থাকে নির্যাতন।
কারণে অকারণে তাকে মারধর করতেন স্বামী সফিকুল। ২০১৫ সালের ৮ জুলাই রাতে তাদের মধ্যে আবারও ঝগড়া হয়, এ সময় মমতাজকে হত্যার হুমকিও দেয় তার স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন। ৯ জুলাই ভোরে নিজ ঘরে মমতাজের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় এবং বোদা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। ১৪ জুলাই ১১ জনকে আসামী করে আদালতে হত্যা মামলা করেন নিহত গৃহবধূ মমতাজের বাবা আব্দুল মান্নান। ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণের পর সোমবার আসামিদের উপস্থিতিতে আদালত এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে বাদীপক্ষ।
পঞ্চগড় আদালতের অতিরিক্ত পিপি ইয়াসিনুল হক দুলাল বলেন, ভিকটিমের মরদেহের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার কথা বলা হয়েছে। আমরা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি।
তাই আদালত ১ নম্বর আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। অন্য আসামিদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
আসামি পক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।
এসএম/এসএন