সিলেটে ব্যতিক্রমী মাংসের হাট, কমমূল্যে মাংস কিনতে উপচে পড়া ভিড়

সিলেট নগরীতে চলছে ব্যতিক্রমী এক কোরবানির মাংস বেচাকেনার হাট।  প্রতিবছরের মতো এবারও ঈদের দিন ও তার পরদিন নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বসেছে এই অস্থায়ী বাজার। এই হাটে মূলত নিম্ন আয়ের মানুষ ও কিছু বিশেষ ব্যবসায়ী অংশ নিচ্ছেন। তারা বাসাবাড়ি ঘুরে কোরবানির মাংস সংগ্রহ করে রাস্তার পাশে পসরা সাজিয়ে বিক্রি করছেন। এই পদ্ধতিতে তারা কিছুটা আয়ও করতে পারছেন।

তুলনামূলক কম দামে কোরবানির মাংস কিনতে ছুটে আসছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।

ঈদের দিন সকাল থেকেই গ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমজীবী মানুষ শহরে চলে আসেন। তারা দিনভর বাসাবাড়ি ঘুরে মাংস সংগ্রহ করেন এবং বিকেলে তা বিক্রি করেন শহরের ব্যস্ত এলাকাগুলোতে।

চৌহাট্টা, আম্বরখানা, উপশহর, লামাবাজার, বালুচর, শাহী ঈদগাহ, রিকাবীবাজার, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রোড, সুবিদবাজার, এয়ারপোর্ট রোড, কদমতলী, তালতলা ও বন্দরবাজার এলাকায় দেখা গেছে মাংস বিক্রির ধুম।

গরুর মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৬৫০ টাকায় এবং খাসির মাংস ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকায়। কোথাও কোথাও আরও কম দামে বিক্রির ঘটনাও দেখা গেছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার সুলতান মিয়া বলেন, “মাসখানেক আগে থেকেই বিভিন্ন বাসায় গিয়ে অনুরোধ করেছিলাম আমার জন্য একটু মাংস রাখতে। আজ সকাল থেকে সেগুলো সংগ্রহ করে বিক্রি করে প্রায় পাঁচ হাজার টাকা আয় করেছি। রাতেই বাড়ি ফিরবো।”

কিশোরগঞ্জের মতলিব নামের এক যুবক জানান, “সাড়ে ৪০০ টাকা কেজি দরে দুই কেজি মাংস কিনেছি। কাজ করি এখানে, কিন্তু কোরবানি দিতে পারিনি। এই মাংস নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি।”
অনেকেই জানান, তারা নিজের প্রয়োজনের সামান্য অংশ রেখে বাকিটা বিক্রি করে দিচ্ছেন। কারণ এত মাংস সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই। বিক্রি করে নগদ টাকা পেয়ে উপকৃত হচ্ছেন তারা।
এই হাটে যারা আসছেন, তাদের অনেকেই স্বল্প আয়ের মানুষ। লোকলজ্জার কারণে বাড়ি বাড়ি মাংস নিতে না পারলেও কম দামে কিনে ঘরে মাংস নিতে পারছেন তারা।

ঈদের দিন আসরের নামাজের পর থেকেই শুরু হয় এই ব্যতিক্রমী হাট, যা চলবে রবিবার রাত পর্যন্ত। অনেকেই কসাই সংকট ও সময়ের অভাবে ঈদের প্রথম দিন কোরবানি করতে পারেননি। তারাও রবিবার কোরবানি করে মাংস সংগ্রহ করে বিক্রি করছেন।

এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগে যেমন কিছু মানুষ উপকৃত হচ্ছেন, তেমনি শহরের দরিদ্র ও নিম্নবিত্ত মানুষদের জন্য এটি হয়ে উঠেছে আশীর্বাদস্বরূপ।

কেএন/টিকে


Share this news on:

সর্বশেষ

img
পরীমণি ফিরলেন পর্দায়, আটকে থাকা ছবির শুটিং শুরু Dec 28, 2025
img
বাবর ও আফ্রিদিকে বাদ দিয়ে দল ঘোষণা পাকিস্তানের, ফিরলেন শাদাব খান Dec 28, 2025
img
বিপিএল চলাকালেই বাংলাদেশ ছাড়ছেন পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা Dec 28, 2025
img
ইউক্রেনকে ১.৮ বিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক সহায়তার ঘোষণা কানাডার Dec 28, 2025
img
ইতিহাসের সর্বোচ্চ বাজেট জাপানে, প্রতিরক্ষায় রেকর্ড ৯ ট্রিলিয়ন ইয়েন বরাদ্দ Dec 28, 2025
img
জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতা কেন, ব্যাখ্যা দিলেন এনসিপির আখতার হোসেন Dec 28, 2025
একটি অবহেলিত আমল | ইসলামিক জ্ঞান Dec 28, 2025
img
শীতে কাঁপছে নীলফামারী, তাপমাত্রা নেমেছে ১২ ডিগ্রিতে Dec 28, 2025
img
পুরোনো জিমেইল পরিবর্তনের সুযোগ দিচ্ছে গুগল Dec 28, 2025
img
এক হাতে ক্যাচ ধরে রাতারাতি কোটিপতি দর্শক Dec 28, 2025
img
রিটার্ন জমার সময় আরও এক মাস বাড়াল এনবিআর Dec 28, 2025
img
মুন্সীগঞ্জে আগুনে ৭ দোকান পুড়ে ছাই Dec 28, 2025
img
টেন্ডুলকার, সাঙ্গাকারা ও লারাদের এলিট ক্লাবে জো রুট Dec 28, 2025
img
পঞ্চগড়ে জেঁকে বসেছে শীত, দেখা নেই সূর্যের Dec 28, 2025
img
হাদির স্মরণে রুয়েটে আবাসিক হলের নামকরণের দাবি Dec 28, 2025
img
৪৯ রানে গুটিয়ে লজ্জার রেকর্ড গড়ল ডেভিড মিলারের দল Dec 28, 2025
img
জুলাই যোদ্ধাদের নিয়ে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন ডা. খালিদুজ্জামান Dec 28, 2025
img
এবার দলকে চ্যাম্পিয়ন করতে চাইঃ ইফতিখার Dec 28, 2025
img
২৬ তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন জুবায়ের রহমান চৌধুরী Dec 28, 2025
img
এবারের ভোটের মাধ্যমে বাংলাদেশ নতুনভাবে তৈরি হবে: উপদেষ্টা আদিলুর Dec 28, 2025