ইরানে ইসরাইলের হামলার ফলে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা বাড়ায় বিশ্ববাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে স্বর্ণের দাম। যা গত এক মাসেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার (১৩ জুন) স্পট মার্কেটে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্সে ১ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪২৮ দশমিক ২৮ ডলারে। যা ৭ মের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। আর ফিউচার মার্কেটে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্সে ১ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ৩ হাজার ৪৪৯ দশমিক ৬০ ডলারে বেচাকেনা হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানে ইসরাইলের সামরিক হামলার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করায় বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা আরও বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ থেকে সরে গিয়ে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত স্বর্ণে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন।
এর ফলে শুক্রবার স্বর্ণের দাম এক মাসেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা বজায় থাকলে ও স্বর্ণের ঊর্ধ্বমুখী গতি অব্যাহত থাকলে মূল্যবান এই ধাতুর দাম নতুন রেকর্ড গড়তে পারে বলেও ধারণা করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
কেসিএম ট্রেডের প্রধান বাজার বিশ্লেষক টিম ওয়াটারার বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে সাম্প্রতিক এই শত্রুতা আপাতত বাণিজ্য আলোচনা থেকে মনোযোগ সরিয়ে নিয়েছে, যার প্রতিক্রিয়ায় বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ আশ্রয়স্থল সম্পদের দিকে ঝুঁকছেন।
তিনি আরও বলেন, ’বিমান হামলার খবরে স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ৪০০ ডলারের স্তর অতিক্রম করেছে। যদি এই ঊর্ধ্বমুখী গতি অব্যাহত থাকে, তবে স্বর্ণের দাম আরও বাড়তে পারে।
এর আগে শুক্রবার সকালে ইরানের রাজধানী তেহরানের উত্তর-পূর্ব দিকে বিশাল বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। ইসরাইলি সেনাবাহিনী নিশ্চিত করেছে যে, তারা ‘নেশন অফ লায়ন্স’ নামে একটি পূর্বপরিকল্পিত সামরিক অভিযানে ইরানে আঘাত হেনেছে। টাইমস অফ ইসরাইলের বরাতে জানা গেছে, এই হামলায় ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলো সরাসরি লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
ইসরাইলি সামরিক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘এই হামলাটি উচ্চমানের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়েছে এবং এর মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করা। দুই ডজনেরও বেশি জেট বিমানের সমন্বয়ে পরিচালিত এই অভিযান ছিল নিখুঁতভাবে পরিকল্পিত এবং সুনির্দিষ্ট।’
অন্যদিকে, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে ঘোষণা করেছেন, ‘এই হামলার মূল লক্ষ্য হচ্ছে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও সামরিক সক্ষমতাকে নিষ্ক্রিয় করা। যতক্ষণ প্রয়োজন ততক্ষণ এই অভিযান অব্যাহত থাকবে, যতক্ষণ না আমরা মিশনটি সম্পন্ন করি।’
আরআর/এসএন