প্রেম, সুর আর আত্মত্যাগের এক অপরূপ উপাখ্যান ‘হাম দিল দে চুকে সনম’ আজ পূর্ণ করল ২৬ বছর। বলিউডের অন্যতম কাব্যিক প্রেমের ছবি হিসেবে বিবেচিত এই সিনেমাটি প্রথম মুক্তি পায় ১৯৯৯ সালে। সময়ের ব্যবধানে পাল্টে গেছে অনেক কিছু, কিন্তু এই সিনেমার আবেদন আজও অটুট।
সঞ্জয় লীলা বানসালি তাঁর চলচ্চিত্র জীবন শুরু করেছিলেন স্বতন্ত্র এক ভিজ্যুয়াল ঘরানার মাধ্যমে। আর এই সিনেমাটিই ছিল সেই স্বকীয় রূপের সূচনা। রঙের ব্যবহার, আবেগময় সংগীত আর হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া সংলাপে নির্মিত এই ছবিটি একদিকে যেমন শিল্পমানের দিক থেকে প্রশংসিত, অন্যদিকে দর্শকদের হৃদয়ে স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে।
এই ছবির সংগীত পরিচালনা করেন ইসমাইল দরবার, গান লিখেছেন মাহবুব। ‘তড়প তড়প কে’ কিংবা ‘চাঁদ ছুপা বাদল মে’-র মতো গানগুলো আজও মানুষের চোখ ভেজায়, মন ছুঁয়ে যায় গভীরভাবে। গানগুলো শুধু সিনেমার অনুষঙ্গ নয়, বরং প্রতিটি আবেগের শক্তিশালী অনুবাদক।
এই সিনেমায় আয়েশা রায় বচ্চন, সালমান খান এবং অজয় দেবগনের অভিনয় এখনো প্রশংসিত হয়। নন্দিনী, সমীর এবং বনরাজ—এই তিন চরিত্রের আবেগী বন্ধন যেন বাস্তব জীবনের প্রতিচ্ছবি। তাঁদের অভিনয় দর্শকদের কাঁদিয়েছে, ভালোবাসিয়েছে, আবার নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে।
‘হাম দিল দে চুকে সনম’ কেবল একটি প্রেমের ত্রিভুজের গল্প নয়, এটি প্রেম ও ত্যাগের এক অন্তর্নিহিত যুদ্ধের কাহিনি। ছবির প্রতিটি সংলাপ, প্রতিটি দৃশ্য আজও ভক্তদের মনে গেঁথে আছে। যেমন, “যখন কোনো সম্পর্ক ভেঙে যায়, তখন শুধু সম্পর্ক নয় ভেঙে যায়...”—এই সংলাপের গভীরতা আজও ভাবায়।
এই সিনেমা জিতেছে একাধিক জাতীয় পুরস্কার ও ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড। শুধু বাণিজ্যিক সফলতা নয়, এটি বলিউডের ইতিহাসে একটি পরিপূর্ণ শিল্পকর্ম হিসেবেও স্মরণীয়।
ভুজের মরুভূমি থেকে ইতালির রোমান্টিক প্রেক্ষাপট—প্রতিটি দৃশ্য ছিল চোখ ধাঁধানো। সিনেমাটোগ্রাফার অনিল মেহতা আর বানসালির যুগলবন্দিতে তৈরি হয়েছিল এক অনবদ্য চিত্রভাষা।
এই ছবিটি শুধু একটি সময়কে প্রতিনিধিত্ব করে না, এটি একটি আবেগের অধ্যায় হয়ে রয়ে গেছে বহু দর্শকের মনে। তাই ২৬ বছর পার হলেও ‘হাম দিল দে চুকে সনম’ আজও অমলিন, চিরসবুজ।
পিএ/টিএ