রক্ত দেয়ার ক্ষেত্রে প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা ও বাস্তবতা

রক্ত শরীরের লাইফলাইন। মানুষের শরীরে এই অত্যাবশ্যকীয় উপাদান সহজে প্রবেশযোগ্য। অর্থাৎ রক্তের গ্রুপের সঙ্গে মিলে গেলে যে কোনো সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষ অন্যকে রক্ত দিতে পারে। প্রতিদিনই দেশের হাসপাতালগুলোয় রক্ত গ্রহণ ও প্রদান একটি বড় কর্মযজ্ঞ। বিশেষ করে অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে রোগীকে রক্ত দেয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। অনেক সময় প্রয়োজনীয় রক্ত যোগাড় করতে রোগীর আত্মীয় স্বজনকে হিমশিম খেতে হয়। এই যে সঙ্কটজনক একটা পরিস্থিতি এর জন্য একদিকে যেমন নিরাপদ রক্ত যথা সময়ে না পাওয়া; অন্যদিকে সুস্থ মানুষের রক্তদানে অনীহাই বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। মূলত রক্তদান বিষয়ে কিছু ভুল ধারণার কারণেই এই সঙ্কট প্রকট হয়ে থাকে।

দেশে বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নস্থানে অসংখ্য রোগী হাসপাতালে ভর্তি। যাদের প্রায় সবারই রক্ত গ্রহণ অপরিহার্য। অনেকে ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে রক্তের জন্য আবেদন-নিবেদন করেও রক্ত পাচ্ছেন না। এতে সঙ্কটাপন্ন হচ্ছে জীবন। কোথাও কোথাও সময়মত রক্তের বন্দোবস্ত করতে না পারায় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে।

প্রিয় পাঠক চলুন দেখা যাক, আমাদের সমাজে রক্তদানের ক্ষেত্রে যেসব প্রচলিত ভুল ধারণা রয়েছে সেগুলো জেনে নেই। সেইসঙ্গে জেনে নেই প্রকৃত তথ্য। সম্প্রতি সাউথ টেক্সাস ব্লাড অ্যান্ড টিস্যু সেন্টার এমন কিছু মিথ বা প্রচলিত ধারণার উল্লেখ করেছে যার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। যেমন-

মিথ: আমি বছরে মাত্র একবারই রক্ত দিতে পারি

বাস্তবতা:আপনি প্রতি ৮ সপ্তাহ পরপর রক্ত দান করতে পারেন। এমনকী রক্তের প্লাটিলেট বছরে ২৪ বারেরও বেশি দান করা যায়।

মিথ: আমাকেই কেন দিতে হবে? রক্ত দেবার জন্য তো আরো কত লোক আছে। কেউ না কেউ ঠিকই দিবে।

বাস্তবতা:২০১৮ সালে সাউথ টেক্সাসে বিগত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম লোক রক্ত দান করেছে। অথচ জনসংখ্যা বাড়ার কারণে রক্তের চাহিদা কিন্তু বেড়েছেই।

মিথ: ‘নিয়মিত’ রক্ত দাতারা ঠিকই রক্তের সরবরাহ ঠিক রাখবে

বাস্তবতা: অথচ ২০১৮ সালে নিয়মিত রক্ত দাতাদের মধ্যে ৬৮ শতাংশই মাত্র একবার রক্ত দিয়েছে। এবং আমাদের গ্রীষ্মের ছুটি, নির্ধারিত ছুটির সময়ে রক্ত যোগাড় করতে তীব্রভাবে বেগ পেতে হয়েছে।

মিথ: আমার এ অতিরিক্ত রক্তদান কোনো প্রভাব ফেলে না

বাস্তবতা: ২০১৮ সালে যদি এককালীন রক্তদাতারা আরো একবার রক্ত দিতেন তবে সংগ্রহ গিয়ে দাঁড়াতো ১ লাখ ৩০ হাজার ইউনিটের কাছাকাছি। যা স্থানীয় চাহিদা পূরণের জন্য কেবল যথেষ্টই নয়, আরো অতিরিক্ত থাকতো। আর যদি প্রত্যেক দাতা (নিয়মিত, অনিয়মিত) আরো একবার করে দিত তবে সংগ্রহ হত ১ লাখ ৭০ হাজার ইউনিটেরও বেশি। যা হতে পারতো গত ১ দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।

 

টাইমস/এমএস/এসআই

Share this news on:

সর্বশেষ

img
শুক্রবার জিয়ার সমাধি-জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাবেন তারেক রহমান Dec 25, 2025
img
গানম্যান দিয়ে রাজিনীতিবিদদের নিরাপত্তা সম্ভব নয়: আখতার হোসেন Dec 25, 2025
img
দেখে নিন বিপিএলের দলগুলোর অধিনায়কের নাম Dec 25, 2025
img
তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন গণতন্ত্রে আস্থা ও বিশ্বাসকে আরো সুদৃঢ় করবে : মাহফুজ আলম Dec 25, 2025
img
তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে জিএম কাদেরের শুভেচ্ছা Dec 25, 2025
img
তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন বহুদলীয় গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবে : হাসনাত Dec 25, 2025
img
অভিনেতা দেবের জন্মদিন আজ Dec 25, 2025
img
তারেক রহমানের আগমন ঘিরে স্মৃতিসৌধে বাড়তি প্রস্তুতি Dec 25, 2025
img
৯ জানুয়ারি ঢাকায় ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশ Dec 25, 2025
img
নরসিংদীতে কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রেপ্তার Dec 25, 2025
img
কপিল শর্মার অনুষ্ঠানে কেন অনুপস্থিত স্মৃতি? Dec 25, 2025
img
গুজরাটের সুরাটে ১০ তলা থেকে পড়ে গিয়েও বেঁচে গেলেন এক ব্যাক্তি! Dec 25, 2025
তারেক রহমানকে নিয়ে যে বার্তা দিলেন মিজানুর রহমান ও জামায়াত আমীর Dec 25, 2025
img
সালথায় আ.লীগ ছাড়লেন ২ নেতা Dec 25, 2025
img
শীত নিয়ে ঢাকাসহ সারাদেশের জন্য দুঃসংবাদ আবহাওয়া অফিসের Dec 25, 2025
img
দিনাজপুরে নতুন ভোটার ১ লাখ ৫৫ হাজার ১৮ জন Dec 25, 2025
img
কুমার শানুর ৫০ কোটি টাকার মানহানির মামলায় মুখ খুললেন রীতা Dec 25, 2025
img
মেসির মতো বিশ্বকাপ জিতুক রোনালদো : ফ্রাঙ্ক লেবোফ Dec 25, 2025
img
রজনীকান্তের জেলার ২-তে দেখা দেবেন শাহরুখ খান Dec 25, 2025
মেহরিন হয়ে গেল কেয়ার নতুন পরিচয়! Dec 25, 2025