পাঁচ দফা দাবিতে ঢামেক শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি

ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) আবাসিক ভবন ও একাডেমিক স্থাপনার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা নিরসনে দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হলে কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

তারা জানান, সাত মাস আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা ভবনে এখনও তারা জীবন ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন, আর কর্তৃপক্ষ উদাসীন। পাঁচ দফা দাবি আদায়ে চলমান এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপি দিয়েছেন এবং বিকল্প ব্যবস্থা না নিলে আরও কঠোর কর্মসূচিরও ঘোষণা দেন।

শনিবার (২১ জুন) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত কলেজ ক্যাম্পাসের মিলন চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীদের একাংশ।

হাতে হ্যান্ডমাইক ও ব্যানার নিয়ে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ শুরু করলেও পরবর্তীতে তারা কলেজ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন অংশে মিছিল করেন এবং ‘প্রহসন মানি না, মানবো না’, ‘দাবি আমাদের- মানতেই হবে’ স্লোগান দিতে থাকেন।

শিক্ষার্থীদের দাবি, শহীদ ডা. ফজলে রাব্বি ছাত্রাবাসসহ একাধিক ভবন দীর্ঘদিন ধরে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। গণপূর্ত বিভাগের পক্ষ থেকে সাত মাস আগে ডা. ফজলে রাব্বি ছাত্রাবাসকে সরকারিভাবে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ভবনের ছাদ ও দেয়াল থেকে প্রতিনিয়ত পলেস্তারা খসে পড়ছে, অনেক জায়গায় রড বেরিয়ে এসেছে। এতে যে কোনো সময় প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। ভবন ধসে কেউ নিহত হলে তার দায় কে নেবে?

তারা বলেন, এই ভবনগুলোতে বসবাসের অভিজ্ঞতা মানেই প্রতিদিন একটা অদৃশ্য মৃত্যু-ভয়ের সঙ্গে বসবাস করা। রানা প্লাজা বা জগন্নাথ হল ট্র্যাজেডির মতো ভয়াবহ ঘটনা এড়াতে এখনই দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, তারা একদিনের ক্ষোভে নয়, ধারাবাহিক উদ্বেগ ও সচেতনতার ভিত্তিতে এই আন্দোলনে নেমেছেন। এর আগেও বিভিন্নভাবে প্রতিবাদ করা হয়েছে। কে-৮২ ব্যাচ তাদের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম বয়কট করেছে, বিভিন্ন ব্যাচ ক্লাস ও ওয়ার্ড বর্জন করেছে এবং এমনকি প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগানোর মতো চূড়ান্ত প্রতিবাদও হয়েছে।

এক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী বলেন, আমরা চিকিৎসা শেখার জায়গায় এসেছি, ভবন ধসে মরার জন্য না। অথচ প্রশাসন নির্লিপ্ত। কোনো ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নেই।

পাঁচ দফা দাবি-
শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপিতে উত্থাপিত পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে
১. নতুন ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস নির্মাণের জন্য দ্রুত বাজেট পাস।
২. আবাসন ব্যবস্থা নির্মাণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
৩. নতুন একাডেমিক ভবনের জন্য আলাদা বাজেট পাস করা।
৪. আবাসন ও একাডেমিক ভবনের বাজেট পৃথকভাবে অনুমোদন ও দ্রুত দৃশ্যমান বাস্তবায়ন।
৫. সব প্রকল্প ও কার্যক্রমের অগ্রগতি শিক্ষার্থীদের সামনে স্বচ্ছভাবে উপস্থাপনের জন্য শিক্ষার্থী প্রতিনিধি নিয়োগ।

এর আগে শিক্ষার্থীদের পক্ষে এইকটি স্মারকলিপিটি কলেজ প্রশাসনের কাছে পৌঁছে দেন শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তৌহিদুল আবেদীন তানভীর (কে-৭৮ ব্যাচ), সাদিয়া ইসলাম মৌলি (কে-৭৮), আবদুল্লাহ আল নোমান (কে-৭৯), আলফাজ হোসাইন শিহাব (কে-৭৯), ও সিয়াম মোর্শেদসহ (কে-৮০) আরও অনেকে।

এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
নতুন করে ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা Jun 21, 2025
img
টাইগার নয়, এবার ভারতীয় সৈনিক হিসেবে পর্দায় ফিরছেন সালমান Jun 21, 2025
img
ভুয়া ভিসা নিয়ে যেভাবে ঢাকা থেকে ইমিগ্রেশন পার হলেন একসঙ্গে ৩০ জন Jun 21, 2025
img
ওএসডি হলেন শরীয়তপুরের সেই ডিসি Jun 21, 2025
img
ভারতের দালালদের বাংলাদেশ থেকে উৎখাত করা হবে: মুফতি ফয়জুল করীম Jun 21, 2025
img
প্রীতমের সুর ও অরিজিতের কণ্ঠে প্রেমের চিঠি ‘অউর মহব্বত কিতনি কারু’ Jun 21, 2025
যে কারণে সৌদি যেতে চান না মেঘনা আলম Jun 21, 2025
ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে এনসিপির তিন নেতার পদত্যাগ Jun 21, 2025
লন্ডন বৈঠকের ফলে সব রাজনৈতিক হিসাব লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে: গোলাম মাওলা রনি Jun 21, 2025
সরকারকে বলব: জাতিকে একটি অবাক সুষ্ঠু নির্বাচন দিন– রাশেদ খান Jun 21, 2025
img
জাপানে প্রদর্শিত হবে বাংলাদেশের বিখ্যাত পুতুলনাচ Jun 21, 2025
img
বোতলে ভাসানো চিঠির জবাব মিলল ৩১ বছর পর Jun 21, 2025
img
ম্যাচ শেষে স্পিনারদের প্রশংসায় অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর মন্তব্য Jun 21, 2025
img
ড. ইউনূসের ওপর ফিনল্যান্ড সরকারের নিষেধাজ্ঞার দাবি ভুয়া Jun 21, 2025
img
ফ্যাসিস্ট সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাটাকে সমূলে ধ্বংস করে গেছে :শফিকুল হক মিলন Jun 21, 2025
img
মাঝ আকাশে ফের বিপাকে যাত্রীবাহী বিমান, অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন ১৬৮ জন Jun 21, 2025
img
সংস্কারের আগে নির্বাচন দিলে আবারও ফ্যাসিবাদ ফিরে আসবে: ড. এ এইচ এম হামিদুর রহমান Jun 21, 2025
img
মালিক ছবির নতুন গানে উত্তাপ ছড়ালেন হুমা কুরেশি Jun 21, 2025
img
ব্রাজিলে হট এয়ার বেলুন দুর্ঘটনায় ৮ জনের মৃত্যু Jun 21, 2025
img
৬২ ঘণ্টা পর ইরানে ফিরছে ইন্টারনেট Jun 21, 2025