মালয়ালম সিনেমায় বহু প্রতীক্ষিত একটি সামাজিক কোর্টরুম ড্রামা ঘিরে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। 'জনকী ভার্সেস স্টেট অব কেরালা' নামের এই ছবিটি ভারতের সেন্সর বোর্ডের কাছে যখন সার্টিফিকেশনের জন্য জমা পড়ে, তখন এক বিস্ময়কর সিদ্ধান্তে তা আটকে দেওয়া হয়। বোর্ড জানিয়ে দেয়—ছবির নামেই সমস্যা।
সেন্সর বোর্ডের বক্তব্য, 'জনকী' নামটি হিন্দু ধর্মে সীতার সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত এবং এই নাম ব্যবহার ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করতে পারে। ফলে তারা ছবিটির টাইটেল পরিবর্তনের শর্তে অনুমতি দিতে চায়। কিন্তু নির্মাতারা এই শর্ত মানতে একেবারেই নারাজ। তাঁদের মতে, এটি স্পষ্টভাবে সৃজনশীল স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ। তাঁরা বলেন, বাস্তব থেকে অনুপ্রাণিত গল্প বলার ক্ষেত্রে একটি নাম যদি প্রাসঙ্গিক হয়, তবে সেটিকে পরিবর্তন করা মানেই কণ্ঠরোধ করা।
এই ছবিতে প্রবীণ আইনজীবীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন সুপারস্টার সুরেশ গোপী। তাঁর লড়াই এক তরুণী ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে, যার নাম জনকী। প্রতিচ্ছবি বাস্তবের আদালতের, যেখানে একদিকে ব্যবস্থার জটিলতা আর অন্যদিকে একজন নিপীড়িত নারীর ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষা। সঙ্গে রয়েছেন অনুপমা পরমেশ্বরণ।
ছবিটি নির্মাণের শুরু থেকেই দর্শকমহলে একটি দারুণ আবেগঘন প্রেক্ষাপট তৈরি করেছিল। প্রাথমিক প্রচারে সামাজিক অবিচার নিয়ে এক সাহসী বক্তব্য বলেই ছবিটি পরিচিতি পায়। কিন্তু এখন সেন্সর বোর্ডের নিষেধাজ্ঞা সেই আবেগের সামনে কঠিন এক প্রশ্নচিহ্ন এঁকে দিয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে সরব হয়েছে কেরালার চলচ্চিত্র সমাজ। FEFKA-র সেক্রেটারি বি উন্নিকৃষ্ণন এক বক্তব্যে বলেন, “এই দেশে হাজার হাজার জনকী নামের মানুষ রয়েছেন। তাঁদের নামও কি ব্যান করা হবে? এটা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।” এমনকি তিনি বলেন, প্রয়োজনে ইন্ডাস্ট্রি-জুড়ে প্রতিবাদ সংগঠিত হবে।
সোশ্যাল মিডিয়াতেও শিল্প স্বাধীনতা বনাম সংস্কৃতিগত সেন্সরশিপের প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। এর আগেও বহু সিনেমা ধর্মীয় অনুভূতির দোহাই দিয়ে কাটছাঁটের শিকার হয়েছে। এবার 'জনকী ভার্সেস স্টেট অব কেরালা' সেই তালিকায় নতুন সংযোজন।
এসএন