সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদাকে জুতাপেটার ঘটনা থেকে দেশের প্রত্যেক আমলাকে শিক্ষা নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। ‘মবতন্ত্র বনাম গণতন্ত্র’ শীর্ষক টকশোতে অংশ নিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ‘আসলে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় মবতন্ত্র আসলে কতটুকু কাম্য সেটা ভাবা উচিৎ। তবে আইনে মানুষের সম্পদ চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের কথা বলা আছে, অপরাধের কথা বলা আছে যে আপনি যদি কারো সম্পত্তি চুরি করেন কী হবে।
কিন্তু পৃথিবীর আইনে কোথাও বলা নাই আপনি যদি কারো স্বপ্ন চুরি করেন, আপনি যদি কারো ভবিষ্যৎ চুরি করেন এবং শুধু ব্যক্তির না যদি জাতির সাপেক্ষে করেন সেটা কি ধরনের অপরাধ এবং সেটার জন্য কী ধরনের শাস্তি হওয়া দরকার।’
‘নুরুল হুদা, হাবিবুল আউয়াল, রকিবউদ্দিন ওয়ান ইলেভেনের কমিশন— এই চারটা নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশে আমাদেরকে কত বছর পিছিয়ে দিয়েছে সেটা বিবেচনা করা উচিৎ। এই মানুষগুলো প্রত্যেকে পাঁচ বছর করে করে এই রাষ্ট্রের স্বপ্নগুলো চুরি করে ফেলেছে। আমার গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা, আমার ভোট দেওয়ার অধিকার, আমার নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা পরিবর্তনের অধিকার— প্রত্যেকটা জিনিসকে আপনি কি ধরনের অপরাধ বলবেন।
এটা কি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধ, এটা তো আইনে কোথাও বলা নাই।’
‘২০ কোটি মানুষের স্বপ্ন চুরি করেছেন। রাষ্ট্র যে আজকে ভেঙেচুরে ২৪-এ আসছে, এই ভাঙার পিছনে শুধু হাসিনা দায়ী ছিল না। শুধু শেখ পরিবার দায়ী ছিল না।
এরকম নুরুল হুদা, মখা আলমগীরের মতো হাজার হাজার ক্রিমিনাল যারা রাষ্ট্রটাকে প্রত্যেকদিন স্বপ্নভঙ্গ করে পিছিয়ে দিয়েছে। এখন এই রাষ্ট্রটাকে পিছিয়ে দেওয়ার ফৌজদারী অপরাধটা কি? ’
তিনি বলেন, ‘যে মানুষগুলো তিনবার চারবার নির্বাচনে ভোট দিতে পারলো না, গণতন্ত্র থেকে বঞ্চিত হয়েছে, নির্বাচনে অনির্বাচিত সরকারকে নির্বাচন দিয়ে সম্মতি আদায় করে দিয়েছে, তার মনের ক্ষোভটা আপনি কিভাবে প্রকাশ করবেন। এই বাস্তবতায় নুরুল হুদা, অথবা হাবিবুল আউয়াল অথবা রকিব উদ্দিনদের যদি পাওয়া যায় এবং এই সব কমিশনের যারা সদস্য আছে, তাদের সবার প্রতি জনগণের ক্ষোভের জায়গাটা বিবেচনায় নিতে হবে।’
‘এখন দায়টা হচ্ছে যেহেতু আমরা বলছি যে, আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ করব। এই নতুন বাংলাদেশে এইরকম নুরুল হুদাদের বাস্তবতা যেন ফেস করতে না হয়।
দেশের প্রত্যেক আমলাকে কালকের জুতাপেটা থেকে শিক্ষা নিতে হবে। সেটা সামরিক আমলা হোক, বেসামরিক আমলা হোক, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী চুপ্পু থেকে শুরু করে যারা যারা আছে সবাইকে এই জুতাপেটা থেকে শিক্ষা নিতে হবে। যে হকের পথে থাকবেন, ইনসাফের পথে থাকবেন, ন্যায্যতার পথে থাকবেন, আইন সংবিধান শপথ জনগণের বিপক্ষে যাবেন না, তারা বেইজ্জতি হবেন না।’
এসএম/টিকে