ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ দিয়ে সবকিছু নতুন করে শুরুর প্রত্যয় শোনা যাচ্ছিল ম্যানচেস্টার সিটির কোচ-খেলোয়াড়দের মুখে। ২০২৪-২৫ মৌসুমটা তাদের কেটেছে ভুলে যাওয়ার মতো। শিরোপাহীন তো ছিল-ই, পাশাপাশি টানা হার ও গোল হজমেও পেপ গার্দিওলার দলকে বিব্রতকর অবস্থা সামলাতে হয়েছে। এবার ক্লাব বিশ্বকাপের নকআউটে ওঠার পথে তারা ৫-২ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে জুভেন্তাসকে। একইসঙ্গে আর্লিং হালান্ড ভেঙেছেন মেসি-রোনালদোদের একটি রেকর্ড।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) দিবাগত রাতে ‘জি’ গ্রুপের শীর্ষ দুই দল মুখোমুখি হয় ফ্লোরিডার ক্যাম্পিং ওয়ার্ল্ড স্টেডিয়ামে। এর আগে দুই দলই নিজেদের আগের দুটি ম্যাচ জিতেছিল। ফলে সিটি-জুভেন্তাসের ম্যাচটি ছিল দুই পরাশক্তির শীর্ষে ওঠে নকআউটে যাওয়ার লড়াই। যেখানে ইতালিয়ান ক্লাবকে রীতিমতো বিধ্বস্ত করেছে হালান্ড-ফোডেন-স্যাভিনহোরা। সিটির পক্ষে একটি করে গোল করেছেন জেরেমি ডোকু, হালান্ড, ফিল ফোডেন ও স্যাভিনহো। আরেকটি গোল হয় আত্মঘাতী। বিপরীতে টেউন কুপমেইনার্স ও দুসান ভ্লাহোভিচের গোলে ব্যবধান কমায় জুভরা।
এত বড় ব্যবধানে হার ‘তুরিনের বুড়ি’দের জন্য বেশ বিব্রতকরই বটে। আন্তর্জাতিক কোনো প্রতিযোগিতায় ৬৬ বছর পর জুভেন্তাস ৫ অথবা এর বেশি গোল হজম করল। এর আগে সর্বশেষ তারা ১৯৫৮-৫৯ সালে ৭-০ গোলে হেরেছিল অস্ট্রিয়ান ক্লাব ভিনারের বিপক্ষে। স্বাভাবিকভাবেই এই জয়ে বেশ খুশি সিটি কোচ গার্দিওলা, ‘আমরা যেভাবে ম্যাচ শেষ করেছি তা পছন্দ হয়েছে। দীর্ঘ সময় পর বল পায়ে কিংবা না থাকা অবস্থায় এভাবে পারফর্ম করতে পেরেছি। খেলোয়াড়রা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল এবং বড় দলকে হারাতে পেরে সবাই খুব খুশি।’
এদিকে, সিটির পক্ষে ম্যাচের তৃতীয় গোলটি আসে নরওয়েজিয়ান তারকা ফরোয়ার্ড হালান্ডের কাছ থেকে। ক্লাব ও দেশ মিলিয়ে ৩৭০ ম্যাচে এটি তার ৩০০তম গোলের মাইলফলক। ২৪ বছর বয়সী তারকা এই মাইলফলকে পৌঁছালেন তুলনামূলক কম ম্যাচ খেলে। দ্রুততম তিনশ গোলের পথে তিনি ছাড়িয়েছেন হালের বড় তারকা লিওনেল মেসি (৪১৮ ম্যাচ), কিলিয়ান এমবাপে (৪০৯ ম্যাচ) ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে (৫৫৪ ম্যাচ)।
এই কীর্তির জন্য কোচ গার্দিওলার কাছেও প্রশংসা পেয়েছেন হালান্ড, ‘আমি কেবল বলতে পারি– “অভিনন্দন।” ২৪ বছর বয়সেই ৩০০ গোল করে ফেলেছে… স্ট্রাইকার হিসেবে আমি তার দারুণ প্রশংসা করি। আর্লিংয়ের জন্য আমি এত খুশি… সে যত গোল করে এবং ছোট জায়গার ভেতর যত সম্পৃক্ত থাকে… অনেক অনেক ভালো…। আমি শুধু আর্লিংকে বলি পেছনে কিছু বাকি না রেখে দ্রুত কাজ সারো এবং হয়তো তাকে মেশিন হতে হবে। তবে তাকে অবশ্যই সমর্থন দিতে হবে আমাদের। কখনও সে ভালো করে, দল ওই অবস্থানে থাকে না। তবে আজ দুটোই হয়েছে।’
ম্যাচটিতে অবশ্য হালান্ড মাঠে নামেন বিরতির পর মিশরীয় তারকা ওমর মারমুশের বদলি হিসেবে। মাঠে নামার সাত মিনিটের মাথায় তিনি স্কোরশিটে নিজের নাম তুলেন। ক্লাব ও জাতীয় দল মিলিয়ে যা তার গোলের ট্রিপল সেঞ্চুরি। এক্ষেত্রে অবশ্য সিটির জার্সিতেই সবচেয়ে বেশি গোল করেছেন হালান্ড। ইংলিশ জায়ান্টদের হয়ে ১৪৫ ম্যাচেই তার গোল ১২৪টি।
কেএন/টিকে