বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেওয়া প্রায় সবাই হতাশ : জিল্লুর রহমান

টিভি উপস্থাপক ও সাংবাদিক জিল্লুর রহমান বলেছেন, উমামা ফাতেমা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র হিসেবে যোগ দেওয়ার পরেই বুঝতে পেরেছেন, এই পরিবর্তন, সংস্কার, জুলাই, আহত, শহীদ- এগুলো মুখের বুলি মাত্র। যারা অনেক স্বপ্ন নিয়ে আন্দোলনে ছিলেন, আন্দোলনের পরে স্বপ্ন নিয়ে, অনেক আশা নিয়ে নতুন করে যাত্রা শুরু করেছেন, তাদের প্রায় সবাই হতাশ এবং তিনি নিজেও হতাশ এবং অনেকেই এই প্ল্যাটফরম ছেড়ে দিয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্ল্যাটফরম তিনি নিজেও ছেড়ে দিচ্ছেন।

জিল্লুর রহমান বলেন, লন্ডন বৈঠক, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন- সব নিয়ে যারা খুব আশাবাদী, তারা কি বুঝতে পারছেন পরিস্থিতিটা কোন দিকে যাচ্ছে? এই জুলাই ঘোষণা, জাতীয় সনদ নিয়ে তারা কি বুঝতে পারছেন! জামায়াত ইসলামী, এনসিপি যখন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন দাবি করছেন, নির্বাচন কমিশনের সক্ষম ক্ষমতা-যোগ্যতা নিরপেক্ষতা বোঝবার জন্যে।

আওয়ামী লীগকে যেখানে নাই করে দেওয়া হয়েছে, বিএনপি আমার ভাষায় খানিকটা দিকভ্রান্ত, সেখানে জামায়াত এবং এনসিপি তো মোটামুটিভাবে সক্রিয়, নামে দামে আছে তারা। সরকারে তাদের প্রভাব আছে বা সরকারেরও তাদের প্রতি এক ধরনের ভালোবাসা আছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণঅভ্যুদ্ধারের প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেছে আমরা সবাই জানি এবং শেখ হাসিনার দীর্ঘ শাসনের পতনের পর এক অভূতপূর্ব সময় পার করছে আমাদের এ দেশ। অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক সংস্কার তার নির্বাচনের ভবিষ্যৎ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সব মিলিয়ে একরকমের দ্বিধা বিভ্রান্তি আর উত্তেজনার আবহ তৈরি হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এই মুহূর্তে যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়েছে, সেটা হলো এই উত্তাল রাজনৈতিক জলধারায় বাংলাদেশ কোন দিশায় এগুচ্ছে। ভারতের সাম্প্রতিক অবস্থার পর্যালোচনা করলে বোঝা যায়, তাদের মধ্যে একটা দ্বিমুখী মনোভাব বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে আপনারা লক্ষ্য করেছেন, কিছু বিশেষজ্ঞের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক সংসদীয় দল বৈঠক করেছে, সেখানেও সেটা স্পষ্ট হয়েছে। তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক করতে চান, ভালো রাখতে চান।

আবার তাদের কনসার্ন গুলো তারা ব্যক্ত করছেন। যেমন ধরা যাক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কথা বলি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একদিকে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলছেন, সব বিষয়ে আলোচনায় আগ্রহী দিল্লি। অন্যদিকে তারা পরিষ্কার বার্তা দিচ্ছে যে ঢাকার রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহ তাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশ ত্রিপক্ষীয় বৈঠক, চীনা যুদ্ধবিমান কেনার সম্ভাবনা এবং শেখ হাসিনারা ভারতে আশ্রয়- এ সবকিছুই দিল্লির উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। ভারতের সংসদীয় কমিটিতে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা প্রমাণ করে যে দিল্লি কেবল পাশের দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখছে না। বরং এটাকে একটা কৌশলগত চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচনা করছে।


পিএ/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
৬ ক্রিকেটারের সঙ্গে আলোচনায় নোয়াখালী এক্সপ্রেস Nov 26, 2025
img
ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলে ভারি শিলাবৃষ্টির আঘাতে আহত ২৫০ জন Nov 26, 2025
img
অতিরিক্ত সচিব পরিচয়ে সরকারি সুবিধা গ্রহণ, প্রতারক আটক Nov 26, 2025
img
অপরিচিতদের সচিবালয়ে পাস না দেওয়ার অনুরোধ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের Nov 26, 2025
img
ঈদে মুক্তি পাবে 'মিস ওয়ার্ল্ড' বাংলাদেশ তোরসা অভিনীত নতুন ছবি Nov 26, 2025
img
অভিভাবক-শিক্ষক সবাই শিক্ষার মানের অবনতি নিয়ে উদ্বিগ্ন: শিক্ষা উপদেষ্টা Nov 26, 2025
img
৪৯তম বিসিএসের তিন প্রার্থীর মনোনয়ন স্থগিত Nov 26, 2025
img
শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ঢাকার চিঠির জবাব এখনও দেয়নি দিল্লি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা Nov 26, 2025
img
বর্তমানে বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত: রাষ্ট্রদূত রুডিগার Nov 26, 2025
img
সাবেক ডিবি প্রধান হারুনের আয়কর নথি জব্দ Nov 26, 2025
img
ডেঙ্গুতে একদিনে ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৬১৫ Nov 26, 2025
img
কড়াইল বস্তিতে হাইটেক পার্ক করার বিষয়ে ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যবের মন্তব্য Nov 26, 2025
img
কুমিল্লায় যুবদল ও ছাত্রদলের ২ কর্মী আটক Nov 26, 2025
img
বিএনপির শূন্য রাখা দিনাজপুর-৫ আসনে আলোচনায় এনসিপির ডা. আহাদ Nov 26, 2025
img
রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের নারী পলিসি নিয়ে জবাবদিহি করতে হবে: উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ Nov 26, 2025
img
সাবেক আইজিপি বেনজীরের স্ত্রী-মেয়ের আয়কর নথি জব্দ Nov 26, 2025
img
নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গের চূড়ায় উঠতে গিয়ে প্রাণ গেল ২ জনের Nov 26, 2025
img
ভালোবাসা আর ঈশ্বরের দয়া নিয়ে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি অভিনেত্রী রানী মুখার্জির Nov 26, 2025
img
ঢাকা এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনবহুল শহর, শীর্ষে জাকার্তা Nov 26, 2025
img
পুঁজিবাজারে অধিকাংশ শেয়ারে দরপতন, কমেছে লেনেদেনও Nov 26, 2025