কুমিল্লার মুরাদনগরে ঘরে ঢুকে ধর্ষণের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা চালিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ভুক্তভোগী সেই নারী। একই সাথে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেছেন তিনি। সোমবার (৩০ জুন) বিকেলে কুমিল্লায় কর্মরত সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ কথা বলেন।
গত রোববার (২৯ জুন) বিভিন্ন গণমাধ্যমে মামলাটি তুলে নেবেন বলে জানিয়েছিলেন ওই নারী। স্থানীয় কয়েকজনের পরামর্শে মামলা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে জানান তিনি। ওই নারীর স্বামী প্রবাসী। তিনি দুই সন্তানের জননী।
ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, বাহেরচর গ্রামের আবুল কালাম (আবুল) ও মুকুল আমাকে বলেছে মামলা তুলে নিতে। তাহলে দেশটা শান্তি হবে, না হলে আসামিরা জামিনে বের হয়ে আসবে। ওই সময় আমাদের সমস্যা হবে এবং বাড়িতে থাকতে পারব না। যার কারণে আমি সাংবাদিকদের বলেছিলাম মামলা তুলে নেব। আমাকে ভুল বোঝানো হয়েছে। আমি অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
মুরাদনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, ধর্ষণের শিকার নারীর দায়েরকৃত পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ মামলায় ছাত্রলীগ নেতা সুমনসহ চার আসামির সাত দিন করে আদালতে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। আদালতে রিমান্ড শুনানি করবেন বলে দিন ধার্য করেছেন। ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি ফজর আলী অসুস্থ থাকায় তাকে কুমিল্লায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ডাক্তারের ছাড়পত্র পেলে যে কোনো সময় তাকে আদালতে তোলা হবে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে ।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক নারীকে নিপীড়নের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকে। পরে বিষয়টি নজরে আসে সবার। গত বৃহস্পতিবার রাতে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাহেরচর পাঁচকিত্তা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় গত শুক্রবার ফজর আলী নামে এক ব্যক্তিকে আসামি করে ধর্ষণের মামলা করেন ওই নারী। ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ফজরসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ফজর ছাড়া অন্য চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ– তারা ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়েছেন। এ অভিযোগে রোববার কুমিল্লার মুরাদনগর থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে আরেকটি মামলা করা হয়। ওই মামলায় চারজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২০ থেকে ২৫ আসামি করা হয়েছে।
ভাইরালকাণ্ডে জড়িত গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, একই এলাকার আবদুল হান্নানের ছেলে মো. আলী সুমন, জাফর আলীর ছেলে রমজান, মো. আলমের ছেলে আরিফ ও তালেম হোসেনের ছেলে অনিক। ফজর আলী কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ভিডিও ছড়ানোর দায়ে গ্রেপ্তার চারজনকে আদালতে তোলা হলে আদালত তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এফপি/ টিএ