তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও আসন সীমানা নির্ধারণে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য : অধ্যাপক আলী রীয়াজ

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল ও নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ নিয়ে সব রাজনৈতিক দল ঐকমত্যে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, আলোচনায় সীমানা নির্ধারণ নিয়ে বড় ধরনের অগ্রগতি হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের চলমান কার্যক্রম এবং সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী আশু পদক্ষেপের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। 

বুধবার (২ জুলাই) ঢাকায় ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের অষ্টম দিনের বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদের প্রতি আদমশুমারির পর ১০ বছরের মধ্যে আসন পুনর্নির্ধারণে সাংবিধানিক সংশোধনের প্রস্তাব এসেছে। এতে একটি কমিটি গঠনের বিষয়েও ঐকমত্য হয়েছে। আলী রীয়াজ বলেন, আজ আলোচ্যসূচিতে তিনটি বিষয় ছিল। তাতে নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের বিষয়। এরমধ্য আমরা প্রথম দুইটা বিষয় আলোচনা করতে পেরেছি। তারমধ্য নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে বড় ধরনের সাফল্য অর্জিত হয়েছে। নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। 

সীমানা নির্ধারণ যে ঐকমত্য সৃষ্টি হয়েছে তা তুলে ধরে আলী রীয়াজ বলেন, নির্বাচন কমিশন থেকে নির্বাচন প্রক্রিয়া ও নির্বাচনী আসন নির্ধারণ নিয়ে কাজ চলমান দেখতে পাচ্ছি। এবং নির্বাচন সংস্কার কমিশন থেকে সুস্পষ্ট সুপারিশ ছিল সেখানে বলা হয়ে আশু ব্যবস্থা হিসেবে কি করা যেতে পারে। দ্বিতীয় বিষয় দীর্ঘমেয়াদী সাংবিধানিকভাবে কিছু করা। দীর্ঘমেয়াদী ও স্থায়ী সমাধানে যে ঐকমত্য হয়েছে তা হলো- প্রতি আদমশুমারি অনধিক ১০ বছর পরে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের জন্য সংবিধানের ১১৯ অনুচ্ছেদের দফা এক এর ঘ শেষে আইনের দ্বারা একটি বিধান যুক্ত করা। এর অর্থ হচ্ছে সংসদীয় আসন নির্ধারণ করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা।

ই কমিটির ক্ষেত্রে আরও বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সীমানা নির্ধারণের আইন ২০২১ যেটা ২০২৫ সালে সংশোধিত হয়েছে। আমরা সংবিধানে কিছু বিষয় যুক্ত করার কথা বলেছি তার পাশাপাশি সেটাকে বাস্তবায়ন করার জন্য আইনের মধ্য দিয়ে কমিটির পরিধি ও কার্যপরিধি গঠন নিয়ে সুনির্দিষ্ট আইন থাকে তা বলেছি। দীর্ঘমেয়াদী স্থায়ী সমাধানের জন্য এই ব্যাপারে সব রাজনৈতিকদল একমত হয়েছে। 

আর আশু বিষয়ে বলা হয়েছে- ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের সহায়তায় যথাযথ দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে বিশেষায়িত কমিটি গঠন। কমিটি গঠন হয়ে থাকে তাহলে পরিবর্তন সাধন করে সেই কমিটি দ্বারা সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ করা। বর্তমান যে কমিটি করা সেটা যাতে পরিবর্তন করে রাজনৈতিক দলের ঐক্যমত্যের প্রতিফলন ঘটে। আমরা এই বিষয় সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করবো। 

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে আলোচনা প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য অভিন্নমত পোষণ করে দিয়ে সুনির্দিষ্ট ঐক্যমত্য আছে। এর গঠন এবং কাঠামোগত বিষয় ও সরকার কতদিন থাকবে তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আলোচনায় বিভিন্ন রকম মতামত এসেছে। এ বিষয়ে দুটি সুপারিশ ছিল সংবিধান সংস্কার কমিশন থেকে ছিল ৯০ দিনের আর নির্বাচন কমিশন যে ছিল ১২০ দিনের। এই সমস্ত সময় ও পরিধি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কোন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ হবে তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এই আলোচনা রাজনৈতিক দলগুলো অনেক কাছাকাছি এসেছে। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে তা অত্যন্ত ইতিবাচক। তোমাদের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘদিন যাবত আমরা সবাই অনেক সংগ্রাম করেছি। আমরা আশা করি এ সব বিষয় নিয়ে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি ঐক্যমত্যে পৌঁছাতে পারবো। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এই মর্মে সহযোগিতা থাকলে চলতি জুলাই মাসের মধ্যে আমরা একটি জুলাই সনদ তৈরি করতে পারব।



ইউটি/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
অভিষেক-নাহিদুলের ঝড়ে চট্টগ্রামকে হারিয়ে এনসিএলের ফাইনালে খুলনা Oct 09, 2025
img
আ. লীগ জিয়া পরিবারকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল : শামীম তালুকদার Oct 09, 2025
img
দেশে নাচ-গানে বাধা দেওয়া ফ্যাসিজম : জাহেদ উর রহমান Oct 09, 2025
img
২০২৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশকে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেবে যুক্তরাজ্য Oct 09, 2025
img
তামাক চাষ বৃদ্ধিতে সরকারি সংস্থার ভূমিকা প্রশ্নের মুখে Oct 09, 2025
img

২০২৫-২৬ অর্থবছর

জুলাই-সেপ্টেম্বরে আরএমজি রপ্তানি বেড়েছে ৪.৭৯ শতাংশ Oct 09, 2025
img
‘সাবেরের সঙ্গে আ. লীগ পুনর্বাসনের আলাপে রাষ্ট্রদূতরা?’ Oct 09, 2025
img
দুর্বল পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক একীভূত করতে ২০ হাজার কোটি টাকা সহায়তা দেবে সরকার Oct 09, 2025
img
আমেরিকা ভ্রমণের পর ড. ইউনূস চুপচাপ হয়ে গেছেন : রনি Oct 09, 2025
img
স্যাটেলাইট প্রযুক্তিতে ইতিহাস গড়ল ইরান Oct 09, 2025
img
নির্বাচন নিয়ে কনফিউশনে দুই তথাকথিত সিনিয়র সাংবাদিক : প্রেস সচিব Oct 09, 2025
img
'তারা মার্কেট গরম করতে চান', কাদের উদ্দেশ্য করে এ কথা বললেন প্রেস সচিব? Oct 09, 2025
img
বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত : প্রেস সচিব Oct 09, 2025
img
বাংলাদেশ-হংকং ম্যাচে চূড়ান্ত একাদশে থাকছেন যারা Oct 09, 2025
img
গুম তদন্ত কমিশনের সঙ্গে ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস সভাপতির সাক্ষাৎ Oct 09, 2025
img
আন্দোলনকারীদের হত‍্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা: আসিফ Oct 09, 2025
img
বিপিএল আয়োজনে চেষ্টার ত্রুটি থাকবে না : রাহাত শামস Oct 09, 2025
img
একসময় নষ্ট ফ্রিজকে আলমারি হিসেবে ব্যবহার করতেন রাঘব Oct 09, 2025
img
বদির বিরুদ্ধে মামলায় ২ ব্যাংক কর্মকর্তার সাক্ষ্য Oct 09, 2025
img
রাষ্ট্রপতির সম্মতিতে কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগ Oct 09, 2025