‘ইমামতি এটা শুধু পেশা নয়, এটা ঈমানী দায়িত্ব। ইমামরা আজ দুর্বল বলে, ঐক্যবদ্ধ নয় বলে সাধারণ মানুষ সামাজিক বিচারের জন্য রাজনৈতিক নেতাদের কাছে যায়। অনেক নেতা তাদের ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক স্বার্থে সামাজিক বিচার ফায়সালা করে। ফলে সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়।’
আজ রোববার (৬ জুলাই) সকালে পিরোজপুর সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি পিরোজপুর জেলা শাখার আয়োজনে ইমামদের ষান্মাসিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন শহীদ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সুযোগ্য সন্তান, জিয়ানগর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান, পিরোজপুর-১ আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত এমপি প্রার্থী মাসুদ সাঈদী।
তিনি বলেন, বিগত সরকারের আমলে ইসলাম চর্চার জন্য নানা স্থানে বাধা দেওয়া হতো। ইমামদের রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে জোর করে ব্যবহার করা হতো। তবে এখন আর তা হবে না। ইমামরা ইসলাম প্রচারসহ ইসলাম চর্চা করার জন্য স্বাধীন ভাবে মতামত প্রকাশ করতে পারবে। ইসলামের প্রচারের কাজে কেউ বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাদেরকে শক্ত হাতে প্রতিরোধ করা হবে।
মাসুদ সাঈদী বলেন, যেহেতু ইমামতি একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব, তাই ইমামকে এ কাজের জন্য যেমন যোগ্য হতে হবে তেমনি তাকে মহৎ গুণের অধিকারীও হতে হবে। তাকে হতে হবে সৎ নিষ্ঠাবান তাকওয়াধারী আল্লাহওয়ালা আলেম। ইমামগণ জনসাধারণকে ইসলামের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান দানের পাশাপাশি তাদের আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের নিকট দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সম্মানজনক বেতন ও আবাসনের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। ইমামদের চাকরি বিধিমালা করতে হবে। একই সাথে ইমামদের চাকরি জাতীয়করণ করতে হবে। কেননা, ইমামদের সুন্দর জীবন হলে আমাদের সমাজ সুন্দর হবে, আলোকিত হবে।
ইমাম সমিতির ষান্মাসিক সম্মেলনে ইসলামী দলগুলোর মধ্যে ঐক্যের ব্যাপারে মাসুদ সাঈদী বলেন, ইসলামে তাওহীদের পরে মুমিনদেরকে যে ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি তাগিদ দেওয়া হয়েছে তা হলো- ঐক্য। ঐক্যবদ্ধভাবে জীবনযাপন করা মুমিনের অপরিহার্য কর্তব্য। ইসলামে ঐক্যের গুরুত্ব অপরিসীম। সংঘবদ্ধভাবে জীবন পরিচালনা করা ইসলামের নির্দেশনা। ইসলামে মুসলমানদের পারস্পরিক সর্ম্পক ভ্রাতৃত্বের। এ সর্ম্পকের ভিত্তি ইসলামের একটি স্তম্ভের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
তিনি আরও বলেন, ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠায় এ দেশের ইসলামপন্থীদের টেকসই ঐক্যের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। যা কিছুই হোক না কেন, যত ষড়যন্ত্রই হোক না কেন- ইসলামী দলসমূহের নেতৃবৃন্দ যদি কেউ আলাদা না হন, তাহলেই ইসলামকে রাষ্ট্রক্ষমতায় আনা সম্ভব। আজকে বাংলাদেশের ওলামায়ে কেরামের হাতে অনেক বড় সুযোগ এসেছে। আমরা যদি এ সুযোগে ইসলামকে বিজয়ী করতে না পারি তবে আগামী দিনে এ জাতি আলেম সমাজসহ ইসলামী দলগুলোর কাউকেই ক্ষমা করবে না। আজকের বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের দাবি হলো- ইসলামপন্থীদের ঐক্য। দেশবাসী আগামী নির্বাচনে প্রতিটি সংসদীয় আসনে ইসলামপন্থীদের একজন প্রার্থী, একটি বাক্স দেখতে চায়।
বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি পিরোজপুর জেলা শাখার সভাপতি মুফতি মাওলানা আব্দুল হালিমের সভাপতিত্বে এবং জেলার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশীদ, জাতীয় ইমাম সমিতির পিরোজপুর জেলার প্রধান উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা তাফাজ্জল হোসাইন ফরিদ, উপদেষ্টা জহিরুল হক, বরিশাল বিভাগীয় ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা আব্দুল হাই নিজামী, বরিশাল বিভাগীয় ইমাম সমিতির সেক্রেটারি হাফেয মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন, অধ্যাপক মাওলানা হেমায়েত উদ্দিনসহ জেলা ইমাম সমিতির নেতৃবৃন্দ।
পিএ/ এসএন