‘মহানতি’র পর আর জ্বলে উঠেনি কীর্তির ভাগ্যের আলো

দক্ষিণী সিনেমায় যাঁকে একসময় ভবিষ্যতের মুখ বলে মনে করা হত, সেই কীর্তি সুরেশ আজ যেন এক দ্বিধাগ্রস্ত মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছেন। ২০১৮ সালে ‘মহানতি’ ছবিতে সাবলীল অভিনয়ের জন্য জাতীয় পুরস্কার জেতার পর দর্শক ও সমালোচকরা ভেবেছিলেন, এই অভিনেত্রীর সামনে রয়েছে এক দীপ্তিময় পথচলা। কিন্তু বাস্তব যেন হয়ে উঠল তার সম্পূর্ণ বিপরীত।

‘মহানতি’-র পর একে একে দুই ডজনেরও বেশি সিনেমায় দেখা গেছে কীর্তিকে। তবে সংখ্যায় যে উজ্জ্বলতা ছিল, তা গুণমানে পৌঁছায়নি। ‘পেঙ্গুইন’, ‘মিস ইন্ডিয়া’, ‘সানি কায়িধাম’— আশার আলো জ্বালাতে পারেনি কোনোটাই। ‘দসারা’ ছবিতে সহ-অভিনেতা নানির উপস্থিতি এতটাই তীব্র ছিল যে কীর্তি কার্যত আড়ালেই রইলেন। ‘রং দে’ ছবিতে গড়পড়তা পারফরম্যান্সও দর্শকদের মধ্যে সাড়া ফেলতে পারেনি।

সবচেয়ে বড় ধাক্কা বোধহয় এলো তাঁর বলিউড যাত্রা নিয়েও। ‘বেবি জন’ দিয়ে হিন্দি সিনেমায় পা রাখার কথা থাকলেও, সেই যাত্রা থেমে গেল শুরুতেই। ফলে প্যান-ইন্ডিয়া স্বপ্নও অধরাই থেকে গেল।

সম্প্রতি ‘উপ্পু কাপ্পুরাম্বু’ নামে একটি ছবি সরাসরি মুক্তি পায় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে। কিন্তু তা কীর্তির ক্যারিয়ারে নতুন করে আশার আলো না জ্বেলে বরং আরও হতাশাই এনেছে। দর্শকদের একাংশের মন্তব্য— “কীর্তিকে পর্দায় দেখলেই সহ্য হয় না।” এমনকি তাঁর একনিষ্ঠ অনুরাগীরাও এবার মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।

সবচেয়ে বড় প্রশ্ন— কোথায় হলো ভুল?

সমালোচকরা বলছেন, কীর্তির পতনের পেছনে আছে ভুল স্ক্রিপ্ট বাছাই, একমাত্রিক চরিত্রে অভিনয়, এবং দক্ষ পরিচালকের অভাব। ‘মহানতি’-তে যে আবেগ, সংবেদনশীলতা ও আত্মবিশ্বাস ছিল, তা আর কোথাও দেখা যাচ্ছে না।

তবে এখনও কীর্তির হাতে সময় আছে। তাঁর মধ্যে সেই প্রতিভা এখনও রয়ে গেছে। দরকার শুধু থেমে গিয়ে নিজের পছন্দ ও পথচলাকে নতুন করে ভাবা। গুণমানের দিকে নজর দেওয়া, পরিমাণের নয়। এমন পরিচালকের সঙ্গে কাজ করা, যিনি তাঁর মধ্যেকার সত্তাকে আবারও জাগিয়ে তুলতে পারেন।

‘মহানতি’ থেকে ‘উপ্পু কাপ্পুরাম্বু’— এই যাত্রা কীর্তি সুরেশের জন্য শুধু ক্যারিয়ারের ধাক্কা নয়, এক ধরনের শিক্ষা ও সতর্কবার্তাও বটে। যদি তিনি নিজেকে বদলাতে না পারেন, তবে হয়তো আগামী দিনে তাঁকে মনে রাখা হবে শুধুই এক সম্ভাবনার নাম হিসেবে।

এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
যশোরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল চালক নিহত Jul 09, 2025
img
ফ্রান্সে দাবানলে আহত শতাধিক Jul 09, 2025
img
আওয়ামী লীগের সঙ্গে যারা আঁতাত করেনি, তারাই বড় বিএনপি : ড. বাচ্চু Jul 09, 2025
img
সাবেক ডিবি প্রধান হারুনের ভাইসহ তিন কর্মকর্তা বরখাস্ত Jul 09, 2025
img
করাচির ফ্ল্যাট থেকে অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরের মরদেহ উদ্ধার Jul 09, 2025
img
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন দায়িত্ব পালনে পুরোপুরি ব্যর্থ : উমামা ফাতেমা Jul 09, 2025
img
টানা ২১ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে সাবেক এমপি জাফর Jul 09, 2025
img
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্প সংস্থা প্রধানের সাক্ষাৎ Jul 09, 2025
শুল্কের ব্যাপারে এবার ওয়ান টু ওয়ান নেগোসিয়েশন হবে: অর্থ উপদেষ্টা Jul 09, 2025
‘নির্বাচনের তারিখ কবে আমি নিজেও জানি না’ Jul 09, 2025
‘পিণ্ডি-দিল্লি ও লন্ডন-আমেরিকার ওপর নির্ভর করতে চাই না’ Jul 09, 2025
এনসিপি বাংলাদেশপন্থি দল, দিল্লিপন্থি নয়, বসুন্ধরাপন্থি নয়: হাসনাত Jul 09, 2025
ডিপজলের প্রতি নারী ভক্তের গুরুতর অভিযোগ Jul 09, 2025
মেহেরপুরের মঞ্চে উঠে যে বার্তা দিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ Jul 09, 2025
তরুণদের উদ্দেশ্যে যে বার্তা দিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর Jul 09, 2025
বৃষ্টিতেও থেমে নেই এনসিপির জুলাই পদযাত্রা Jul 09, 2025
প্রাপ্য টাকার দাবিতে জুলাই আহত যোদ্ধাদের জুলাই ফাউন্ডেশন এর সামনে হট্টগোল, অফিস তালা Jul 09, 2025
জি এম কাদেরের অব্যাহতি সিদ্ধান্ত মানেন না আনিসুল-রুহুল-মুজিবুল Jul 09, 2025
img
সৌদিতে এক সপ্তাহে ১৭ হাজারের বেশি প্রবাসী গ্রেফতার Jul 09, 2025
img
বরগুনায় ডেঙ্গুতে প্রাণ হারাল এক যুবক Jul 09, 2025