বলিউডে গ্ল্যামার আর তারকাখ্যাতি মানেই যেন রাজকীয়তার স্বাদ। কিন্তু কিছু অভিনেতা অভিনেত্রী আছেন, যাদের জন্য এই রাজকীয়তা শুধু রূপক নয়, একেবারে রক্তে লেখা বাস্তব পরিচয়। তারা জন্মেছেন সত্যিকারের রাজবংশে, বহন করছেন পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য, জমিদারি আর প্রাসাদের গল্প।
এই তালিকায় প্রথমেই আসে সাইফ আলী খানের নাম। পতৌদির নবাব পরিবারের ছেলে তিনি। তার বাবা ছিলেন ম্যানসুর আলী খান পতৌদি, যিনি ক্রিকেট দুনিয়ার কিংবদন্তি এবং একাধারে নবাব। মায়ের দিক থেকেও আছে সিনেমার রাজত্ব- শর্মিলা ঠাকুর। ভোপাল আর হরিয়ানায় তাদের বিস্তৃত প্রাসাদ আর জমিদারি এখনো স্মৃতিচিহ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। যদিও ১৫ হাজার কোটি টাকার প্রাচীন সম্পত্তি আইনি জটিলতায় এনিমি প্রোপারটি আইনের আওতায় চলে গেছে, তবুও সাইফের নিজস্ব সম্পদ প্রায় বারোশ কোটি টাকার মতো।
নাসিরুদ্দিন শাহকে আমরা জানি থিয়েটার আর আর্ট ফিল্মের কিংবদন্তি হিসেবে। কিন্তু খুব কম মানুষ জানে তিনি রাজস্থানের টোঙ্ক নবাব পরিবারের উত্তরসূরি। তার রক্তে রাজকীয়তা আর বুদ্ধিবৃত্তিক ঐতিহ্যের এক অনন্য মিশ্রণ। থিয়েটার মঞ্চে যেমন তার আধিপত্য, তেমনি আছে চার শতাধিক কোটিরও বেশি সম্পদের মালিকানা।
কিরণ রাও-র জীবনেও আছে রাজকীয় শিকড়। তিনি তেলেঙ্গানার ওয়ানাপর্থি রাজার নাতনি। পরিচালনার জগতে নিজের পরিচয় তৈরি করেছেন, ধোবি ঘাটের মতো ছবির নির্মাতা হিসেবে এবং আমির খানের প্রযোজনায় নিজের সৃজনশীল চিন্তাধারার ছাপ রেখেছেন। তাঁর সম্পদের পরিমাণ প্রায় তিনশো কোটির বেশি, এবং একই পরিবারের অংশ অভিনেত্রী আদিতি রাও হায়দারিও রয়েছেন বলিউডের আলোয়।
মনিকোইরালা নেপালের রানাদের বংশধর। তার পূর্বপুরুষ ছিলেন নেপালের প্রথম নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। চলচ্চিত্রে তার রাজকীয় উপস্থিতি স্পষ্ট। ক্যান্সার থেকে ফিরে এসে নতুন উদ্যমে অভিনয় জগতে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন। প্রায় একশো কোটির সম্পদও রয়েছে তাঁর নামে।
সবশেষে আদিতি রাও হায়দারি, যিনি মাতৃদিকে ওয়ানাপার্থি রাজার বংশধর এবং পিতৃদিকে হায়দরাবাদের আকবর হায়দারি রাজবংশের উত্তরসূরি। নাচ, অভিনয় আর সৌন্দর্যে তার রাজকীয় ছাপ স্পষ্ট। পদ্মাবত, সুফিয়ুম সুজাতায়ুমের মতো ছবিতে তিনি দক্ষতার প্রমাণ রেখেছেন। প্রায় বাহাত্তর কোটি টাকার মালিক এই অভিনেত্রী বর্তমানে স্বামী সিদ্ধার্থের সঙ্গেও যৌথভাবে বিশাল সম্পদের অধিকারী।
এরা শুধু সিনেমার তারকা নন, রক্তে রাজকীয়তা আর ঐতিহ্য বয়ে নিয়ে চলা জীবন্ত ইতিহাস। জমিদারি, প্রাসাদ আর রূপালী পর্দার জগতে সমান স্বচ্ছন্দ এই তারকাদের গল্প যেন আজকের দর্শকের কৌতূহল আরও বাড়িয়ে দেয়।
কেএন/টিএ